অনেকের কাছেই শুনেছি যে তাদের ওজন ঠিকমতো আছে, কিন্তু পেটের মেদ-টা কোন ভাবেই কমছে না। প্রোপার ডায়েট ফলো করে মেদবহুল শরীরটা হয়তো কমিয়ে ফেলেছেন, তারপরও পেটের বাড়তি মেদ শারীরিক সৌন্দর্য নষ্ট করে দিচ্ছে। সমস্যাটি কি আপনার সাথেও মিলে গেল? আপনার বেলি ফ্যাটের জন্য দায়ী অনেকগুলো ফ্যাক্টর। যেমন একটানা ৮-৯ ঘন্টা অফিসে বসে কাজ করা, বিজি শিডিউলের জন্য জিমে না যেতে পারা কিংবা বাসায় থাকলেও ব্যায়াম করতে কিছুটা আলসেমি। কিন্তু পেটের মেদ ঝড়াতে খাবার সম্পর্কে জানেন কি? হেলদি ফুড সিলেকশনের মাধ্যমেও আপনি পেটের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলতে পারেন সহজেই।
প্রথমেই জানতে হবে আপনার অ্যাবডোমিনাল ওবিসিটি আছে কিনা। অ্যাবডোমিনাল ওবিসিটি হচ্ছে অতিরিক্ত বেলি ফ্যাট যা আপনার কোমরের মাপ থেকে ক্যালকুলেট করতে পারবেন। পরিণত বয়সে মেয়েদের কোমরের মাপ যদি ৮০ সেমি/৩৫ ইঞ্চির বেশি হয় এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে যদি ১০২ সেমি/৪০ ইঞ্চির বেশি হয়, তাহলে আপনার অ্যাবডোমিনাল ওবিসিটি (Abdominal obesity) আছে। চলুন জেনে নেই কোন ৫টি খাবার কমাবে পেটের মেদ।
পেটের মেদ ঝড়াতে ৫টি খাবার
১) বাদাম
ভাবছেন বাদাম কীভাবে ওজন কমাবে? বাদামের স্নেহ জাতীয় পদার্থ আপনার শরীরের জন্য অনেক উপকারী। বাদাম ক্ষুধাভাব কমাতে হেল্প করে আর হার্ট ডিজিজ, হাই ব্লাড প্রেসার এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধেও কার্যকরী ভুমিকা রাখে। আমন্ড, পেস্তা কিংবা চীনাবাদাম সবগুলোই শরীরের জন্য উপকারী। সালাদে কিংবা রান্নায়ও বাদাম ব্যবহার করতে পারেন।
২) গ্রিন ভেজিটেবল
আপনাকে বেছে নিতে হবে এমন খাবার যেটাতে ক্যালোরি কম থাকবে পাশাপাশি ফাইবার বেশি থাকবে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার আপনার পাচনতন্ত্র (Digestive system) কে ভালো রাখে এবং পেটের বাড়তি মেদ কমাতে সাহায্য করে। শসা, পালংশাক, সবুজ শাক, ঢেঁড়স, লাউ, ক্যাপসিকাম এগুলো আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন।
৩) ডিম
ওয়েট লসের ডায়েটে ডিম অবশ্যই রাখবেন কারণ এগ প্রোটিন আমাদের পেটের মেদ কমানোর সাথে সাথে শরীর সুগঠিত রাখে। ডিমে মোটামুটি ৭৮ ক্যালোরি থাকে। হাই নিউট্রিশনাল ভ্যালু (High Nutritional Value) এবং প্রোটিনের জন্য ডায়েটিশিয়ানরা ডিম খেতে বলেন যাতে আপনি ডায়েটে থাকলেও দুর্বল না হয়ে পড়েন। সিদ্ধ ডিম আপনার সকালের নাস্তায় রাখতে পারেন।
৪) পিনাট বাটার
পিনাট বাটার চর্বি যুক্ত হলেও কোলেস্টেরল কম থাকায় ওয়েট লসের জন্য এটি ডায়েটিশিয়ানরা সাজেস্ট করেন। ন্যাচারাল সুইটনেস আর ডিলিশিয়াস টেক্সচার ছাড়াও পিনাট বাটারের কিছু বিশেষত্ব আছে। যেমন আপনি এটা থেকে সুগার ছাড়াই প্রোটিন এবং ফাইবার পাবেন, একই সাথে ফোলেট (Folate), ভিটামিন বি, জিংক (zinc) সহ আরও অনেক পুষ্টি উপাদান ইনটেক করবেন। এটা হার্ট ভালো রাখে, রেস্পিরেটরি অরগান অ্যাকটিভ (Respiratory organ active) রাখে সেই সাথে ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।
৫) প্রাণীজ ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন
ওজন নিয়ন্ত্রণে প্রাণীজ প্রোটিনের মধ্যে সি-ফুড, চিকেন, দুধ অ্যাড করতে পারেন আর উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের মধ্যে আছে বিভিন্ন রকমের ডাল, চিজ, বিনস। শরীরের ইম্যুনিটি (Immunity) ঠিক রাখে, পেশী সুগঠিত করে, চুল এবং ত্বক ভালো রাখে, কোষ পুনঃগঠনে সাহায্য করে, আরও কত কী। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন রাখুন এবং কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ কমিয়ে ফেলুন।
পরিশেষে এটাই বলতে চাই, প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন, আট ঘন্টা ঘুমাবেন, জিমে যাওয়ার সময় না পেলেও হাঁটার চেষ্টা কবেন, লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করবেন, সেই সাথে হেলদি ডায়েট। ব্যস, এই টিপসগুলো ফলো করুন আর পেয়ে যান মেদহীন পেট আর আকর্ষনীয় ফিগার।
ছবি- সংগৃহীত: সাটারস্টক ;ইউটিউব ;সুপারিওরিডিয়াস.ওআরজি