বাসা বদল | কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস যা মনে রাখা জরুরি!

বাসা বদল | কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস যা মনে রাখা জরুরি!

home 2

অনেকেই নতুন মাসের শুরুতেই উঠবেন নতুন বাসায়। পিছনে ফেলে আসবেন পুরনো বাসার স্মৃতিগুলো আর সাথে নিয়ে আসবেন বাসা বদলের বেশ কিছু ঝক্কি ঝামেলা। বাসা বদল করা কি আসলেও ঝামেলার কাজ? হ্যাঁ, একটু তো ঝামেলা বটেই! তবে একটু বুদ্ধি করে মিলিয়ে নিলেই কিন্তু এই ঝামেলাটুকু আর ঝামেলা মনে হয় না। চলুন তাহলে জেনে নেই, বাসা বদল করার ঝামেলাটাকে কম করে দেয়ার কিছু ছোট ছোট সহজ টিপস

বাসা বদল করার গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস

বড় কার্টন জোগাড় করা 

সাধারণত আমরা মাসের শেষ দিকে অথবা মাসের প্রথম দিকে বাসা বদল করে থাকি। তাই আগে থেকেই কাগজের কিছু বড় এবং ছোট কার্টন কিনে রাখুন। ঘরের মালামালগুলো একদম শেষ দিনে গোছানোর জন্য রেখে দেবেন না। যে মাসে নতুন বাসায় উঠবেন তার আগের মাস থেকেই একটু একটু করে গোছাতে থাকুন। যেমন- শোকেসের কাঁচের থালা বাটি বা শোপিস-গুলো আগে থেকেই ঢুকিয়ে নিতে পারেন কাগজের বড় বড় কার্টনে। আর হ্যাঁ, কাঁচের জিনিসগুলো কাপড় বা কাগজ দিয়ে পেঁচিয়ে নিতে ভুলবেন না। তাতে করে বাসা বদল করতে মালামাল আনা নেয়ার সময় ছোট খাট আঘাত থেকে বেঁচে যাবে আপনার প্রিয় কাঁচের সামগ্রীগুলো।

fragile things packing

জামাকাপড় গুছিয়ে নেয়া 

আলমারি বা ড্রয়ারের জামা-কাপড়গুলো বড় বড় বিছানার চাদরের ভিতরে সুন্দর করে ভাঁজ করে রেখে চাদরটাকে গিঁট দিয়ে দিতে পারেন। এতে করে চাদরের সাথে সাথে জামাকাপড়ও গুছানো হয়ে যাবে। তবে বাসা বদলের পর চাদরগুলো অবশ্যই ধুয়ে রোদে শুকিয়ে তারপর রাখবেন। আর জামাকাপড়গুলো রোদে দিয়ে রাখলেই যথেষ্ট।

কন্টেইনারের ব্যবহার 

বাসায় তো আজকাল সবারই বড় বড় কৌটা বা কন্টেইনার থাকে। সেগুলোর ভিতরে চামচ, ছুরি ইত্যাদি জিনিসগুলো ঢুকিয়ে নিন। দাঁ অথবা বটিগুলো অবশ্যই খবরের কাগজ দিয়ে মুড়ে তারপর রাখবেন।

কার্টনের গায়ে চিহ্ন দিয়ে রাখা 

একেকটা ঘরের জিনিসপত্র যেসব কার্টনে রাখবেন, সেসব কার্টনগুলোর গায়ে কিছু চিহ্ন দিয়ে রাখুন। এতে নতুন বাসায় যাওয়ার পর এক রুমের জিনিস বের করতে গিয়ে ভুলে অন্য রুমের জিনিস ভরা কার্টন খুলে ফেলার ভুল হবে না। যেমন- ড্রয়িং রুমের জিনিসপত্রের কার্টনে লিখতে পারেন D অথবা Dr যেটা আপনার সুবিধা। ড্রয়িং রুমের চিহ্ন সম্বলিত জিনিসপত্রের কার্টনগুলো নতুন বাসার ড্রয়িং রুমেই সরাসরি রেখে দিন। দেখবেন ঝামেলা কিছুটা হলেও কম মনে হবে।

গাছের ডাল ছেঁটে নেয়া 

আপনি যদি গাছপ্রেমী হন তাহলে আপনার শখের গাছগুলোকে একটু যত্ন করেই তবে আনা নেয়া করতে হবে। চাইলে  গাছগুলোর ডালপালাগুলো একটু ছেঁটে ছোট করে নিতে পারেন। এতে গাছের জায়গা কম লাগবে।

বাসা বদল করার আগে গাছগুলোও ছেঁটে নিন

ইলেকট্রিক্যাল ও তরল জিনিস গুছিয়ে ফেলা 

ফ্যান, টিভি, টিউব লাইট ইত্যাদি জিনিসগুলো খুলে রেখে দিতে পারেন বাসা ছাড়ার আগের দিনই। তেল বা তরল জাতীয় (শ্যাম্পু, লোশন ইত্যাদি) জিনিসগুলোর মুখ প্লাস্টিকের প্যাকেট দিয়ে মুড়ে নিন। এতে করে সেগুলো থেকে গড়িয়ে পড়ে সবকিছুতে লেগে যাওয়ার হাত থেকে বেঁচে যাবেন।

ফ্রিজ বন্ধ করে রাখা 

বাসা বদলের ঠিক আগের দিন রাতে বন্ধ করে রাখতে পারেন ফ্রিজ অথবা ডিপ ফ্রিজটি। পরদিন সকালে যে পানিটুকু ফ্রিজ থেকে পড়বে সেটুকু ফেলে দিলেই ঝামেলা শেষ। খুব ভালো হয় ফ্রিজের জিনিসগুলো কাছাকাছি কোনো আত্মীয়ের বাসায় রেখে দিলে। নতুন বাসায় উঠেই কিন্তু ফ্রিজ চালু করবেন না। ফ্রিজ আনা নেয়ার পথে কম্প্রেশারে চাপ লাগতে পারে। তাই কিছু সময় পর চালু করতে হবে।

প্ল্যানমাফিক আসবাব সাজানো 

বাসা বদলের সময় মূল্যবান সামগ্রীগুলো একটু যত্নেই রাখতে হবে আপনাকে, নিজ দায়িত্বে। যেভাবে আপনি চান সেভাবেই রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে আসলে আলাদা করে কোনো টিপস নেই। মালামাল আনা নেয়ার দায়িত্বে থাকা লোকদের বড় বড় আসবাবপত্রগুলো যে রুমে রাখার প্ল্যান করবেন একেবারে সেই রুমেই রেখে দিতে বলবেন। তাহলে যে সুবিধাটা পাবেন সেটি হলো আসবাবপত্রগুলো এক রুম থেকে অন্য রুমে ঠেলাঠেলির হাত থেকে বেঁচে যাবেন, শুধুমাত্র জায়গামতো রাখলেই হয়ে যাবে। ঘর সাজাতে এতটুকু তো করাই যায় তাই না!

বাসা বদলানো

বাসা খালি করার আগের রাতে তাড়াহুড়ো করে সব না করে সময় নিয়ে একটু করে আগে থেকেই সব গুছিয়ে ফেলুন। বাসা বদলের কয়েকটা দিন একটু ধকলের উপর দিয়েই যাবে। তাই বাসা বদলের আগের দিন রাত না জেগে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন। পরের দিন অবশ্যই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। দেখবেন বেশ ফ্রেশ লাগছে এবং কাজে অ্যানার্জি পাচ্ছেন।

এই তো, এই টুকটাক ছোটখাটো জিনিসগুলো মিলিয়ে নিলেই দেখবেন বাসা বদল করার ঝামেলা কিছুটা হলেও কমে যাবে। একটা জিনিস মনে রাখবেন, নতুন বাসায় গিয়ে অপরিষ্কার দেখলে যেমন আপনার ভালো লাগবে না, ঠিক তেমনই আপনি যে বাসাটা ছেড়ে যাচ্ছেন সেটি অপরিষ্কার রেখে গেলে আপনার পরে যারা আসবেন তাদেরও ভালো লাগবে না। তাই যতটা সম্ভব একটু বাথরুমগুলো পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবেন আর ঘরে ঝাড়ু দিয়ে গেলেই ভালো। তাতে নতুন যারা আসবেন তাদের কাছে আপনার ব্যক্তিত্ব আর রুচিরই প্রকাশ পাবে। আর একটা কথা, যারা আপনার বাসা বদলের দায়িত্বে থাকবেন মানে শ্রমিকরা, তাদের সাথে একটু আন্তরিকভাবে হাসি মুখে কথা বলবেন, দেখবেন তারা আপনার প্রতিটি জিনিস যত্ন নিয়ে আনা নেয়া করবে। অবশ্য তাদেরকে একটু তদারকি না করলেই নয়। আপনার বাসা বদলের অভিজ্ঞতা সুন্দর হোক। ভালো থাকুন।

 

 

ছবি- সাটারস্টক

18 I like it
1 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort