ছোট বাসা সাজানোর টিপস অ্যান্ড ট্রিকস! - Shajgoj

ছোট বাসা সাজানোর টিপস অ্যান্ড ট্রিকস!

home bee

ছোট বাসা কীভাবে রঙ করবেন, সাজাবেন সেটা নিয়ে প্রচুর চিন্তা ভাবনা অনেকেই নিশ্চয়ই ভাবেন? নেক্সট কয়েকটা লেখায় একটুখানি জায়গায় কীভাবে জিনিসপত্র গোছগাছ করে রাখা যায়, কীভাবে রঙ করলে ভালো হয়, কী আসবাব ব্যবহার করা বেটার সেসব নিয়েই খুব সংক্ষেপে কিছু টিপস দেব।

আসুন আজ বাসার রং নিয়ে আলোচনা করি

Sale • Pigmentation, Color Protection, Hair Color

    অনেক বড় একটা ব্যাপার। ইনটেরিওর সম্পর্কে অজ্ঞ বাড়িওয়ালা না ভাড়াটে দুই মিলে এক বিশাল ভজঘট তৈরির জন্য যথেষ্ট! জীবনে যে কত বাসা দেখলাম যেখানে মাত্র ৮০০ স্কয়ারফিটের ১ রুম, ড্রয়িং ডাইনিং-এ কড়া নীল বা পার্পল অথবা সবচেয়ে বাজে সি গ্রিন দিয়ে সব দেয়াল ভর্তি করে ফেলা হয়েছে! কখনও বাড়িওয়ালা শখ করে এসব করে! আবার কখনও ভাড়াতেই করে! কিন্তু রেজাল্ট একই, শেষমেষ সেই বাসায় ফার্নিচার চলে এলে এমন গুমোট অন্ধকার আর দম আটকানো ভাব হয় যে পালিয়ে যেতে ইচ্ছা করে!

    মনে রাখুন-

    আপনার বাসা ৬০০-২০০০ স্কয়ার ফিটের ভেতরে হলে আপনার জন্য যেকোনো ধরনের গাঢ় রঙ নিষিদ্ধ! গাঢ় রঙ কোনগুলো?

    এই টেবিলের প্রথম তিন রো বাদে বাকি সবগুলো… ওকে? এসব রঙ নিজের বাড়ির দেয়ালে লাগাবেন না। এসব চার দেয়ালে লাগিয়ে রাখার রঙ নয়। আর বাসা ভাড়া নিতে গেলেও এই চার্ট মাথায় রাখবেন। এই সব রঙ দেয়ালে আছে দেখলেই দৌড় দিয়ে বের হয়ে আসুন। ফার্নিচার বসানোর পর এই রঙের জ্বালায় যেই বাসা দেখে- ‘ওয়াও! বেশ ভালো বড় বাসা তো!’-  বলে আটখানা হয়েছিলেন, সেই বাসাতেই দম আটকে যাবে।

    কি রঙ করলে বাসা বড় লাগবে?

    অনেকেই জানেন না, বাসার রঙ পুরোটাই ডিপেনড করে আপনার আসবাবপত্রের রঙের উপর। তাই চিন্তা করুণ আপনার আসবাব কি ‘ওয়ার্ম টোন-এর’ নাকি ‘কুল টোন-এর’ ?

    বুঝতে পারলেন না? আসবাবের রঙ কি কাঠের রঙের বিভিন্ন শেড? যেমন-

    এই সব রঙগুলোর ভেতরে? তাহলে আপনার আসবাব ওয়ার্ম টোন-এর। আবার যদি আপনার বাসায় কালার করা আসবাব থাকে যেমন- গ্রে, লাইট ব্লু, স্টিল বা মেটাল ফিনিশ, তাহলে সেগুলো কুল টোন-এর আসবাব হবে। আমাদের দেশে সবাই মোটামুটি কাঠের ফার্নিচার-ই কেনে, সেদিক থেকে দেয়ালের রঙ অবশ্যই ওয়ার্ম টোন-এর ভেতরে হতে হবে। যদি দেয়াল আর ফার্নিচার-এর টোন না মেলে ঝামেলাটা তখনি শুরু হয়।

    এখন একটা প্রশ্ন-

    ধরুন একটা বাসায় সব রুমে লাইট ব্লু বা লাইট পিঙ্ক রঙ করা। দেখে আপনার খুব ভালো লাগলো নিয়ে নিলেন বাসাটা মনের মাধুরী মিশিয়ে দামি দামি ফার্নিচার পছন্দ করে কিনে বাসায় সাজালেন কিন্তু? ফার্নিচার গুলো বাসায় আনার পর দেখতে আর শো রুমের মত ভালো লাগে না মনে হয় বাসাটা ছোট হয়ে গেল শখের ডাইনিং টেবিল এমন গাবদা লাগছে কেন? ভাবলেই মন খারাপ হয়… প্রবলেম-টা কোথায় হয়েছে? বুঝতে পারছেন?

    জী, রঙ আর ফার্নিচারের টোন-এ ক্ল্যাশ হয়েছে ব্লু (মানে কুল টোন) এর রুম আপনি দামি হলদে মেহেগনী কাঠের লাখ টাকার ওয়ার্ম টোন ফার্নিচার দিয়ে ভরেছেন। এমন ক্ষেত্রে ২০০০ স্কয়ার ফিটের বাসাতেও গুমোট লাগা অস্বাভাবিক নয়।

    ফার্নিচারের সাথে দেয়ালের রঙের মিল

    তাই সব সময় ঘর সাজানোর মেইন দুই এলিমেন্ট- দেয়ালের রঙ আর ফার্নিচার বাছাই করার সময় একটু চোখ কান খোলা রাখবেন। ক্রিম কালার-এর ঝলমলে শোরুম-এ রাজসিক ডাইনিং টেবিল দেখে প্রেমে পড়ে গেলেন, সেটা এনে তুললেন নিজের পিঙ্ক দেয়ালের বাসায়! বিশাল বোকামি!

    বেসিক কালার হুইল, ওয়ার্ম অ্যান্ড কুল কালার গুলো চিনে নিন।

    ঘরে রঙ করার জন্য আরেকটু ডিটেইল কুল, ওয়ার্ম চার্ট দেখে নিতে পারেন।

    গ্রিন আউটলাইনের ভেতরের কালার-গুলো হচ্ছে সবচেয়ে নিউট্রাল… ভাড়া বাসায় (অর্থাৎ যেখানে দেয়ালের রঙ চেঞ্জ করে ফেলার ক্ষমতা আপনার নেই) সেখানে এই সব রঙগুলো করাটাই বেস্ট। এতে আমাদের দেশের কাঠের ফার্নিচার-এর সাথে রঙ সহজে ম্যাচ করে।

    আরেকটা কথা, ছাদের রঙের কথা ভুলে যাবেন না যেন! অনেক সময় ছাদে গাঢ় রঙ করার ফলে রুমের হাইট কমে গেছে বলে চোখে ধরা পড়ে। এই ভুলের জন্য একটা ১০ ফিট হাইট-এর রুম দেখে মনে হয় ৭ ফিট-এর ঘুপচি। দেয়ালের রঙের একটু ডার্ক শেড ছাদের জন্য ইউজ করতে পারেন। যেমন দেয়াল সাদা হলে ছাদ ক্রিম হতে পারে বা দেয়াল বেইজ হলে ছাদ তার থেকে ২ শেড ডার্ক বেইজ হতে পারে। কিন্তু দেয়াল ক্রিম আর ছাদ গাঢ় নীল যেন  না হয়! এক্ষেত্রে দুটো প্রবলেম হবে, এক, ছাদ অতিরিক্ত ডার্ক , দুই, ছাদ কুল টোন আর দেয়াল ওয়ার্ম টোন হয়ে যাবে। মানে ক্ল্যাশ করবে। দুই মিলিয়ে রুমটা হবে দম আটকানো!

    কিন্তু, আমার ভাড়া বাসায় তো রঙ নিয়ে কোনও এক্সপেরিমেন্ট করার সুযোগই নেই!

    খুবি বিরক্তিকর অবস্থা, তাই না? চাইলেও কিছু করা যায় না। বাসার বর্তমান রঙ একেবারেই ভালো না লাগলে বা ফার্নিচার-এর সাথে ক্ল্যাশ করার কারণে রঙ বদলাতে চাইলে এর বদলে আপনি যা যা করতে পারেন-

    • ওয়ালপেপার ইউজ করতে পারেন। প্রতিটা ওয়ালের কার্পেটিং এরিয়ার স্কয়ার ফিট হিসেব করে সাধারনত ওয়ালপেপার লাগানো হয়। এক্সিসটিং প্লাস্টার-এর উপরে প্রাইমার ইউজ করে পেস্ট করা হয়। এতে ঘরের প্লাস্টার-এর ক্ষতি হয় না। বনানী, এলিফ্যান্ট রোড- এসব এলাকায় ইনটেরিওর শপ-গুলোতে বিভিন্ন ধরনের ওয়ালপেপার পাবেন। স্যাম্পল দেখে রুমের কালার-এর সাথে মিলিয়ে কিনতে পারেন। যেকোনো রুমের যে ওয়ালটা আপনি ফোকাস করতে চান সেটায় ওয়ালপেপার লাগালে ভালো লাগবে। সব ওয়ালেই আবার জবরজং ওয়ালপেপার লাগাবেন না যেন!
    • রুমের যেকোনো একটি ফোকাস ওয়ালে সিম্পল হোয়াইট ফ্রেমের কয়েকটা বড় বড় ছবি ইউজ করতে পারেন। ডার্ক মন খারাপ করা রঙের ঘরে লাইট সিম্পল ফ্রেমে বাঁধানো লাইট কালার প্যালেট-এর আর্টওয়ার্ক রুম-এর আলো আর সাইজ বেড়ে গেছে এমন ইলিউশন ক্রিয়েট করে। একইভাবে, জবরজং ক্যামেরায় তোলা ছবি বিশাল প্রিন্ট করে ঘরে ঝুলাবেন না। নিজের বা পরিবারের ছবির কালার প্রিন্ট-গুলো ডেস্কটপ-এই রাখুন। দেয়ালে নয়।
    • একইভাবে বোরিং ক্রিম বা বেইজ বাসায় রঙের ছোঁয়া আনতে অনেক অনেক খরচ করে দেয়ালে রঙ না করে কালারফুল আর্ট ইউজ করুন। রুচি আর বুদ্ধির পরিচয় একইসাথে প্রকাশ পাবে। অবশ্যই বুদ্ধি করে ফোকাস এই আর্ট ওয়ার্ক-এর সাথে ম্যাচ করে এমন কয়েকটা কুশন-এর ইনটেলিজেন্ট ইউজ করাটা রুমের চেহারা মুহূর্তেই বদলে দিতে পারে।
    • দেয়াল থেকে পর্দা ঝুলাতে পারেন। সেটা অবশ্যই লাইট অ্যান্ড এক কালার-এর হতে হবে। অনেকেই এর-ওর বাসায় প্রিন্টের পর্দা দেখে সেরকম একটা কিছু কিনে নিজের ১০ ফিট-এর রুমে ঝুলান। তাও আবার জাস্ট জানালার উপর থেকে! এতে কি হয়? রুমের হাইট কম মনে হয়। ছোট ঘরে পর্দা অবশ্যই ছাদ বা ছাদের ৬ ইঞ্চি নীচ থেকে মেঝে পর্যন্ত ঝুলাতে হবে। এতে রুমের পুরো হাইট বোঝা যায়।
    • ডার্ক পেইন্ট করা রুম-এর এক ওয়াল-এর এ মাথা থেকে ও মাথা লাইট এক কালার-এর পর্দার ব্যবহার রুমের টোন লাইট করে খোলা মেলা ভাব আনতে পারে। এমন কোনও গুমোট রুম থাকলে এই উপায় ট্রাই করতে পারেন।
    • যেকোনো রুম-এ বড় ফ্লোর টু সিলিং আয়না ইউজ করতে পারেন। অবশ্যই ফ্রেম-টা হবে একেবারেই সিম্পল অ্যান্ড লাইট টোন-এর। আয়নার ব্যবহারেও রুমের সাইজ অনেকটাই বড় লাগে।

    এই টিপস-গুলো নতুন বাসায় বুদ্ধি খাটিয়ে ইউজ করলে যেকোনো ছোট স্পেস-কে নিজের মনের মত সাজিয়ে নেয়া সম্ভব। আর দুটো থাম্ব রুল মনে রাখবেন-

    • ছোট খাট এটা সেটা দোকানে দেখে ভালো লেগেছে বলেই বাসায় ভালো লাগবে এটা ভুল। তাই ছোট ছোট জিনিসপত্র দিয়ে অজথা বাসা ভর্তি করবেন না।
    • কালার প্যালেট মাথায় রাখবেন, ছোট একটা সল্ট শেকার কিনলেও সেটা যেন রুম-এর থিম-এর সাথে ম্যাচ করে সেটা সবসময় মাথায় রাখবেন। মেইন কালার প্যালেট অবশ্যই মেইনটেইন করতে হবে।

    ছবিঃ সাটারস্টক

     

    65 I like it
    4 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort