আপনার ত্বক সেনসিটিভ কিনা সেটা কীভাবে বুঝবেন?

আপনার ত্বক সেনসিটিভ কিনা সেটা কীভাবে বুঝবেন?

1

ত্বক একটু জ্বালাপোড়া করলেই আমরা ধরে নেই আমাদের মনে হয় সেনসিটিভ স্কিন এবং সেই অনুসারে ত্বকের যত্ন নেই আর প্রোডাক্ট সিলেক্ট করি। কিন্তু আসলেই কি তাই? শুধু ইরিটেশন হলেই সেটা সেনসিটিভ স্কিন? আপনার ত্বক সেনসিটিভ কিনা কীভাবে কনফার্ম হবেন? আগেই বলে নেই, এটা কোনো স্কিন টাইপ না! এক ধরনের স্কিন কন্ডিশন বলা যেতে পারে। চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।

স্কিন ডিজিজ নাকি স্কিন সেনসিটিভিটি? 

হয়তো মনে হতে পারে যে নির্দিষ্ট কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহারের কারণে বা পরিবেশের প্রতিক্রিয়ায় আপনার ত্বক লালচে হয়ে যাচ্ছে, চুলকানি হচ্ছে বা ব্রেক আউটস দেখা দিচ্ছে। কিন্তু এমন কিছু মেডিকেল কন্ডিশন আছে, যার কারণেও আপনার ত্বকে একই রকম সমস্যা হতে পারে। যেমন- রোজাশিয়া, একজিমা বা অ্যালার্জি জনিত ডার্মাটাইটিস এর কারণেও কিন্তু একই ধরনের সমস্যা হতে পারে আপনার ত্বকে, যাকে আপনি স্কিন সেনসিটিভিটি বলে ভুল করছেন! আপনার স্কিনের ধরন কেমন, স্কিন ডিজিজ আছে কিনা, স্কিনের সমস্যা সমাধানে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, সেগুলো সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন একজন স্কিন বিশেষজ্ঞ। তবে ঘরে বসে যদি জানতে বা বুঝতে চান আপনার স্কিন আসলেই সেনসিটিভ কিনা, তাহলে আপনাকে খেয়াল করতে হবে কিছু বিষয়ে। চলুন জেনে নেই।

আপনার ত্বক সেনসিটিভ

আপনার ত্বক সেনসিটিভ হলে কীভাবে বুঝবেন?

১) আপনার স্কিন রিঅ্যাকটিভ কিনা

আপনার স্কিন যদি সেনসিটিভ হয়ে থাকে তাহলে খেয়াল করলে দেখবেন বিশেষ বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে স্কিন রিঅ্যাক্ট করে। যেমন- সোপজাতীয় প্রোডাক্টের সংস্পর্শে, ক্রিম বা লোশনে ব্যবহৃত সুগন্ধি, পারফিউম, স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে থাকা নির্দিষ্ট কোনো উপাদান। এছাড়া সরাসরি রোদ, ঠান্ডা বাতাসেও অনেক সময় স্কিন রিঅ্যাক্ট করে। এক্ষেত্রে ডার্মাটোলজিস্টের সাথে কনসাল্ট করুন এবং গাইডলাইন মেনে চলুন।

 

২) ত্বকে লালচে ভাব দেখা যায় কিনা

যাদের স্কিন সেনসিটিভ হয় তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় একটু এদিক সেদিক হলেই স্কিনে রেডনেস বা লালচে ভাব চলে আসে। এটা ছোট ছোট লালচে র‍্যাশের মতো হতে পারে, আবার বাম্পের মতো হতে পারে, অনেকের আবার স্কিনের উপর দিয়ে ব্লাড ভেসেল বা শিরা বোঝা যায়। বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে কারণে বা যে উপাদানের কারণে এটা হচ্ছে, সেটা সরিয়ে ফেললেই লালচে ভাবটা চলে যায়। কিছুক্ষণ সময় দিলে বাম্পস, র‍্যাশ কমে আসে।

৩) ত্বকে চুলকানি হচ্ছে কিনা

আপনার যদি স্কিন সেনসিটিভ হয় তাহলে স্কিনে একটু টাইটনেস ফিল হয় এবং চুলকানি হয়। বিশেষ করে নরমাল কোনো ক্লেনজার দিয়ে ফেইস ক্লিন করার পরে এটা বেশি হয়। আর ক্লেনজিংয়ের সময় গরম পানি ব্যবহার করলে এই সমস্যা আরও বেশি হয়। আবার ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসলেও একই ধরনের চুলকানি হয়। নখ দিয়ে চুলকালে এই সব জায়গায় ইনফেকশন হতে পারে। তাই খুব বেশি সময় ধরে ইচিং এর প্রবলেম হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

ফেইসে চুলকানি

৪) ত্বকে জ্বালাপোড়া বা ইরিটেশন হচ্ছে কিনা

প্যারাবেন, অ্যালকোহল যুক্ত স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারে ইরিটেশন হচ্ছে? সেনসিটিভ স্কিনের অধিকারীদের ক্ষেত্রে এটি খুবই কমন। একনে ট্রিটমেন্টে ব্যবহৃত উপাদানগুলোও স্কিনে সাময়িকভাবে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় নতুন প্রোডাক্ট ব্যবহারে স্কিনে সাময়িক রিঅ্যাকশন বা পার্জিং হতে পারে। তবে এক মাসের বেশি সময় ধরে ব্যবহার করেও সেই প্রোডাক্টটা যদি স্যুট না করে, তাহলে ধরে নিন এটা আপনার জন্য পারফেক্ট অপশন না। মানে আপনার স্কিনে সেটা কাজ করছে না!

৫) স্কিন একটু বেশিই ড্রাই ফিল হয় কিনা

সেনসিটিভ স্কিন হলে হুটহাট ব্রেক আউটস দেখা দেয়, আর অনেকে মনে করেন এটা অয়েলি স্কিনেই বেশি হয়। এটা ভুল ধারণা। আসলে স্কিন অনেক বেশি ড্রাই হয়ে গেলেও ব্রেক আউটস হতে পারে। হুট করে স্কিন এক্সট্রিম ড্রাই হয়ে যাওয়া বা ড্রাই প্যাচেস দেখা যাওয়াকে আমরা স্কিন সেনসিটিভিটি বলতেই পারি।

৬) ত্বকে র‍্যাশ বা অ্যালার্জি দেখা দিচ্ছে কিনা

সেনসিটিভ স্কিন কোন উপাদান দ্বারা ট্রিগার হচ্ছে সেটা আগে বের করুন। লালচে ভাব, শুষ্কতা, র‍্যাশ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে অনেকের অ্যালার্জিও হতে পারে। যেসব প্রোডাক্ট আপনি নতুন করে স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যাড করছেন, সেগুলোর মধ্যে কী কী উপাদান ব্যবহৃত হয়েছে সেটা ভালোভাবে চেক করে নিবেন। যখন কোনো প্রোডাক্ট নতুন করে পোরস ক্লগ করে বা অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন থেকে একনে বাড়িয়ে দেয়, সেটা হচ্ছে ব্রেক আউট। পার্জিং হলে নরমালি এক মাসের ভেতর স্কিন ক্লিয়ার হয়ে যায়।

সেনসিটিভ স্কিনের জন্য প্রোডাক্ট

৭) অতিরিক্ত পরিমাণে ডেড সেলস জমা হচ্ছে কিনা

আপনার ত্বক সেনসিটিভ কিনা সেটা বোঝার আরেকটি উপায় এটি। সেনসিটিভ স্কিন অনেক সময় রাফ ও ফ্লেকি দেখায়। অনেক বেশি পরিমাণে ডেড সেলস স্কিনের উপরের লেয়ারে পাইল আপ হতে থাকে। স্কিন টেক্সচার স্মুথ লাগে না। এই ধরনের স্কিনে ইনফেকশন হওয়ার চান্স থাকে।

৮) খুব তাড়াতাড়ি সানবার্ন হচ্ছে কিনা

সেনসিটিভ স্কিন হলে খুব সহজেই রোদে ট্যান পড়ে যায়। দেখা যায় অনেকের রোদে গেলেই স্কিনে ইচিনেস শুরু হয়ে যায়। তাই সেনসিটিভ স্কিন হলে দিনের বেলা এসপিএফ ৩০ এর উপরে সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন। সব ধরনের স্কিনের জন্যই সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা মাস্ট। যেকোনো প্রোডাক্ট কেনার আগে এর ইনগ্রেডিয়েন্ট লিস্ট চেক করে নিবেন যে এতে এমন কোনো উপাদান আছে কিনা যেটা আপনার জন্য অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।

লেবেল চেক করে নেওয়া

করণীয় কী?

  • ভিটামিন সি যুক্ত প্রোডাক্টে অ্যালার্জি হলে আলফা আরবুটিন যুক্ত রেঞ্জ ইউজ করতে পারেন
  • প্রোডাক্টটি ডার্মাটোলজিস্ট দ্বারা রেকমেন্ডেড কিনা সেটা আগে চেক করুন
  • সেনসিটিভ স্কিনের জন্য স্যুইটেবল কিনা সেটা প্যাকেজিংয়েও লেখা থাকে
  • প্যারাবেন ও অ্যালকোহল ফ্রি প্রোডাক্ট রেঞ্জ বেছে নিতে পারেন
  • নতুন প্রোডাক্ট হলে আগে প্যাচ টেস্ট করে নিন

CeraVe, Cetaphil এই ব্র্যান্ডগুলোতে সেনসিটিভ, একজিমা প্রন স্কিনের জন্য প্রোডাক্ট পেয়ে যাবেন। সেনসিটিভ স্কিন হলে কোন কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারবেন, সেটা নিয়ে পরবর্তীতে লিখবো। আপনাদের কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

 

ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।

ছবি- সাজগোজ

8 I like it
1 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort