ব্রণে হাত চলে যাচ্ছে বারবার? ৬টি উপায়ে দূর করুন এই অভ্যাস!

ব্রণে হাত চলে যাচ্ছে বারবার? ৬টি উপায়ে দূর করুন এই অভ্যাস!

5

ইশ!! ওইতো একটু পুঁজ দেখা যাচ্ছে, আজকে একটু চাপ দিয়ে দেখি না ওটুকু বের করে ফেলা যায় কিনা! তাহলেই তো ব্রণটা শুকিয়ে যায়।” বেশ দুই হাতের মধ্যমা দিয়ে কষে টিপে পুঁজটুকু বের করার চেষ্টা করলেন, বের হল না। ব্রণে হাত চলে যাচ্ছে বারবার, ভাবলেন মনে মনে, “এখনও এ পাকেনি! আচ্ছা কাল আবার দেখবো“। ততক্ষণে আপনার চক্ষুসুল ব্রণটার আশেপাশের ১ ইঞ্চি যায়গা হাতের চাপে ফুলে লাল হয়ে আছে। আজ আপনাদের জানাবো ব্রণে হাত চলে যাচ্ছে বারবার এই কমন সমস্যাটি নিয়ে। এ নিয়ে বিস্তারিত জানাবার পূর্বে যে কথা বলছিলাম তাতে ফিরে যায়…”কিন্তু এসব ভাবার সময় কোথায়? কালকে আবার আয়নায় চোখ গেলেই মাথায় একই মন্ত্র বাজতে শুরু করবে তাই না? একটুই তো পুঁজ, দেখিনা একটা চাপ দিয়ে। কিই বা আর হবে!

কি? এই ঘটনাচক্র খুব পরিচিত লাগছে? লাগারই কথা, একইসাথে পড়তেও অনেকের ঘৃণা লাগতে পারে কিন্তু ব্রণে কোনভাবেই চাপ দেয়া/ প্রেস করা যাবে না জানা সত্ত্বেও ১৫-৩৫ এর যেকোনো নারী পুরুষই সাজগোজ ইনবক্সে একই উত্তর দেন, “হ্যাঁ, একটু তো ব্রণ প্রেস করি!” আর মজার ব্যাপারটা কি জানেন? এরা সবাই ইনবক্সে একই প্রশ্ন করেন, “ব্রণের দাগ যাবে কীভাবে একটু বলুন প্লিজ।”  সব কিছু নিয়ে চলুন জেনে নিই বিস্তারিত…

ব্রণে হাত চলে যাচ্ছে বারবার? 

প্রথমত, আজকে ব্রণে একটা চাপ দিলে তার ফলাফলে ১-২ বছর মেয়াদী একটা দাগ মুখে পড়ে যেতে পারে এই ধরণের সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি বা মেধা সবার থাকে না। এটা মেনেই নিতে হবে। কিন্তু, ভবিষ্যতের চিন্তা না করা যেমন এক ধরণের বোকামির উদাহরণ তেমনি ব্রণে হাত দিলে কি হবে সেটা জেনে বুঝেও যারা নিজের বদভ্যাস দূর করার চেষ্টা করেন না সেটা আবার আরেক ধরণের বোকামি। চিন্তা করেই দেখুন, সিগারেট ক্যান্সারের প্রধান একটি কারণ জানা সত্ত্বেও অনেক বোকারাই তো মনের আনন্দে পথে ঘাঁটে একশলা ধরিয়ে ফুঁকতে ফুঁকতে হাঁটেন, তাই না? বোকামি আর ওভারকনফিডেন্সের এই উদাহরণের তুলনায় ব্রণে বার বার হাত চলে যাওয়ার অভ্যাস তো তেমন কিছুই না! কিন্তু কেউ যদি চান নিজের বদভ্যাসটা কন্ট্রোল করতে তবে আজকের লেখাটা আপনাকে একটু হলেও হেল্প করবে-

ব্রণ প্রেস করার সাথে দাগের সম্পর্ক কি?

১) ব্রণে প্রয়োজনের থেকে বেশি প্রেসার দিলে ব্রণের আশেপাশের সেনসিটিভ নরম ফেসিয়াল স্কিন সেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

২) স্কিন কেটেও যেতে পারে।

৩) যে ইনফেকশন বা পুঁজকে সহ্য করতে না পেরে এতো ফন্দি করে ব্রণে হাত দিলেন, আপনার সেন্সলেস প্রেসারে সেই ইনফেকশন স্কিনের বাইরে না এসে আরও গভীরে চলে যেতে পারে!

এই ঘটনাগুলোর ফলাফল হিসেবে, আপনার ত্বকের ওই অংশেই বার বার ইনফেকশন হয়ে একের পর ব্রণ উঠতেই থাকে, বা যাকে একটু এক্সট্রাকট করলে কালকেই শুকিয়ে যাবে ভেবেছিলেন, সেই ব্রণ লাল হয়ে ফুলে ফোঁড়ার আকার ধারণ করে, সাথে থাকে আরও চুলকানি, আরও রেডনেস, আরও বড় একটা বাম্প।

আর যদি টিপে স্কিন ছিঁড়ে ফেলেন? শরীরের নরমাল ইমিউন সিস্টেম ওই ছেড়া অংশে মেলানিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়, স্কিন মোটা করে ফেলে। ফুটো হওয়া অংশ যাতে বাইরে থেকে অন্য জীবাণু ঢুকতে না দেয় তা নিশ্চিত করে। এরপর ওই এলাকায় অনেক কোলাজেন সেন্ড করে দেয়। যাতে ছেঁড়া অংশ দ্রুত জোড়া লেগে যায়। কিছুদিন পর ওই ছেড়া স্কিন ঠিক হয় ঠিকই, কিন্তু? মেলানিন উৎপাদনের ফলে ডার্ক হয়ে যাওয়া স্কিনটাকে বডি আর ঠিক করে না। কারণ আপনার বোকামির খেসারত হিসেবে করা নিজের এই কাজটাকে সে ড্যামেজ হিসেবে মার্ক করেনি। সো একটু ফুলে কালো হয়ে যাওয়া যায়গাটা পার্মানেন্টলি অমনটাই থেকে যায়। আর এটাই হচ্ছে ব্রণের দাগ।

বুঝতেই পারছেন, নিজেকে ‘এত্তগুলা’ বুদ্ধিমান মনে করে খুব একটা সুবিধা আপনি করতে পারবেন না। আবার ব্রণে হাত চলে যাচ্ছে বারবার তাতে কি? অনেকের জন্য এই ব্রণ, হোয়াইট হেড খোঁটা অনেকটা স্ট্রেস রিলিভের কাজ করে। যেমন অনেকে নখ কামড়ায়, ঠিক তেমন!

প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর’ এটা লিখতে লিখতে আমি ক্লান্ত। সো সেদিকে আরও বেশি কথা না বাড়িয়ে আসুন জেনে নিই, ব্রণে খোঁটাখুঁটি বন্ধ করার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা আপনার থাকলে কীভাবে সেদিকে আগাবেন-

৬টি উপায়ে দূর হবে ব্রণে বারবার হাত দেয়ার বদভ্যাস

ব্রণে হাত চলে যাচ্ছে বারবার । এই অভ্যাসটি দূর হবে এবার। চলুন জেনে নিই কী করে দূর করবেন এই বাজে অভ্যাস!

১) একনে স্টিক ইউজ থেকে দূরে থাকুন

একনে স্টিক নামক যে অদ্ভুত জিনিসগুলো পাওয়া যায় সেসবের কাছ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন। নিজে তো ইউজ করবেনই না, পার্লারে গিয়ে এটা সেটা যাই করান না কেনও, এই যন্ত্র যেন আপনার স্কিন না ছোঁয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

২) বারবার আয়নায় ব্রণ দেখার অভ্যাস দূর করুন

ব্যক্তিগতভাবে যত বেশি লাল ফুলে থাকা ব্রণের দিকে চোখ যায় ততই মুখে হাত দিতে ইচ্ছা করে বলে আমার মনে হয়, সো হঠাৎ ব্রেকআউট হলে বার বার আয়নায় গিয়ে সেটার দিকে তাকিয়ে থাকাটা কমান।

৩) কাগজে লিখে রাখুন, “ব্রণে হাত দেয়া যাবে না”

শুনতে একটু কেমন কেমন লাগলেও, আয়নায় একটা কাগজে “ব্রণে হাত দেয়া যাবে না” লিখে লাগিয়ে রাখুন । আই মিন, আপনার বয়স ৩৫-৪০, এতদিন ধরে কোনভাবেই বদভ্যাস কমাতে পারেননি, এটায় যদি একটু সেন্স ফিরে পান, সমস্যা কোথায়? রাইট?

এইতো গেল কিছু সাইকোলজিক্যাল স্টেপস, এখন আসি ব্রণের রেডনেস, ফোলা ভাব, চুলকানি কীভাবে কমাবেন, সেই দিকে। আফটার অল, এসবের জন্যই অনেকে মুখে হাত দিয়ে ফেলেন বারবার। দীর্ঘদিন ধরে ব্রণে ভুগেছি আমি, নিচের কাজগুলো আমাকে মুখে হাত দেয়া থেকে দূরে রাখতে অনেক হেল্প করেছে-

৪) মুখে বরফ দিয়ে ম্যসাজ করা  

ব্রণ উঠছে টের পাবার সাথে সাথে যেটা করবেন সেটা হল পরিষ্কার পানি দিয়ে বানানো বরফ মুখে বুলানো। দেখবেন রেফ্রিজারেটর এ বরফ যেন মাছ মাংস রক্তের পাশেই পড়ে না থাকে। যতটা পরিষ্কার রাখা যায় রাখবেন। দিনে যতবার টের পাবেন ব্রণের যায়গাটা গরম হয়ে লাল হয়ে উঠছে ততবার আইস কিউব ইউজ করবেন। এতে ইমেডিয়েটলি ব্রণের চুলকানি, ইনফ্ল্যামেশন কমবে।

৫) মুলতানি মাটি ও টি ট্রি অয়েলের মিশ্রণ ব্যবহার 

হাতের কাছে মুলতানি মাটি আর টি ট্রি অয়েল রাখবেন। বাইরে ঘোরাঘুরি করলে একটিভ একনে লালচে হয়ে ফুলে উঠতে থাকে। আমি বাসায় এসেই তাই এক চা চামচ মুলতানি মাটির সাথে ২-৩ ফোঁটা টি ট্রি অ্যাসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে ব্রণের উপরে লাগিয়ে রাখি। এতে খুব দ্রুত ব্রণের ফোলা ভাব কমে যায়। রোজ একবার শুধু ব্রণের উপরে এটা করলেও ত্বকের ইনফ্ল্যামেশন কমবে।

৬) স্পট ট্রিটমেন্ট

এছাড়াও যাদের ব্রণের সমস্যা আর বার বার মুখে হাত দেয়া, চুলকানো বা ব্রণ চাপাচাপি করার বদভ্যাস আছে তারা সবসময় হাতের কাছে স্পট ট্রিটমেন্ট রাখবেন। রোজ রাতে মুখ ধুয়ে স্কিন কেয়ার রুটিনের লাস্ট স্টেপ হিসেবে মুখের সব ব্রণ, হোয়াইট হেডস এ অবশ্যই স্পট ট্রিটমেন্ট লাগাবেন। সকালে উঠে মুখ ধুয়ে ফেলবেন। অতি দ্রুত ব্রণ শুকিয়ে ফেলতে স্পট ট্রিটমেন্টের কোন বিকল্প নেই। এগুলো ব্রণটা ঢেকে ফেলে আর চুলকানি কমিয়ে দেয় বলে যখন তখন নখ দিয়ে ব্রণ খোঁটার প্রকোপ কমে যায়।

আপনি চাইলে আপনার পছন্দমতো স্পট রিমুভাল ক্রিম কিনতে পারেন অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে। সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর ( জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

 

ব্রণে হাত দিয়ে খোঁটাখুঁটি করাটা বা ‘দ্রুত শুকানোর’ অজুহাতে এটা সেটা দিয়ে চামড়া ফুটো করে ফেলাটা একটা অপ্রয়োজনীয় বদভ্যাস ছাড়া আর কিছুই নয়। সো আপনি যা করছেন এতে আপনার ছাড়া আর কারো ক্ষতি হচ্ছে না এটা মেনে নিন। ব্রণে হাত চলে যাচ্ছে বারবার এ অজুহাত আর দেবেন না। বরং ব্রণে হাত চলে যাচ্ছে বারবার এ অজুহাত না দিয়ে নিজের সঠিক কেয়ার নেওয়া শুরু করুন। যারা প্রাপ্তবয়স্ক আপনার ছেলে মেয়ে/ ছোট ভাই বোনকে এসব করতে নিষেধ করুন।

ছবি – সাজগোজ

41 I like it
3 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort