পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গী | যে ৫টি কাজ কখনো করবেন না

পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গী | যে ৫টি কাজ কখনো করবেন না

positive

আমাদের জীবনে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গীর কথা বলে শেষ করা যাবে না। প্রায় সব ধরনের সমস্যাই পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গী থাকলে মোকাবেলা করা যায়। যেকোন বিষয়ে যার কাছেই উপদেশ চাইবেন, সবাই ঘুরেফিরে আপনাকে একটা কথাই বলবে- “বি পজেটিভ”। কিন্তু জীবনে পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গী সবসময় দেখা যায় না। জেনেটিক কারণে হোক কিংবা পারিপার্শ্বিক কারণেই হোক না কেন, অনেকের জন্যই জীবনকে পজেটিভলি নেওয়াটা কঠিন যেহেতু সবার মাঝে পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গী থাকে না।

আমাদের মাথায় কোন সুইচ নেই যে হুট করে টিপে দিলাম আর সব নেগেটিভ চিন্তা উধাও হয়ে যাবে। অনেকেই হয়তো খুব সহজে একটা খারাপ ঘটনা ঘটার পরও সেটার ভালো দিক দেখতে পারে, সেখান থেকে শিক্ষা নিতে পার, অন্তত অন্য কোন নেতিবাচক ঘটনার দিকে ফোকাস করতে পারে। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা অন্যান্যদের চেয়ে ভালো অবস্থানে থেকেও হতাশায় ডুবে যান। সামান্য কোন খারাপ ঘটনা ঘটলেই জীবনের সব অর্জনকে মিথ্যা ভেবে নেন। এটা কোন দোষের কিছু না, কিন্তু জীবনের জন্য নেগেটিভ চিন্তা খুবই ভয়ানক। যারা চট করে সবকিছুর ইতিবাচক দিকটায় ফোকাস করে, তারা খুবই তাড়াতাড়ি হতাশ হয়ে যায়। তবে চিন্তার কিছু নেই, কারণ পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গী একটা অভ্যাসের মত। বারবার নিজেকে নেতিবাচক চিন্তা করানোর প্র্যাক্টিস করলে ধীরে ধীরে সেটা অভ্যাসে পরিনত হয়। তাহলে আসুন জেনে নেই কিভাবে জীবনে পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গী  আনা যায়!

পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি অভ্যাসে ৫টি টিপস

১) বিষাক্ত মানুষকে জীবনে স্থান দিবেন না 

আমরা অনেকেই নিজেদের এমন কিছু বিষাক্ত মানুষদের দিয়ে ঘিরে রাখি যারা বারবার নানা রকম দোষ ত্রুটি বের করে আমাদের ছোট করে। আমাদের বুঝতে হবে কারা আমাদের শুভাকাংক্ষি হয়ে ভালো উপদেশ দিচ্ছে আমাদের উন্নতির জন্য আর কারা আমাদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে নিজেদেরকে বড় দেখানোর চেষ্টা করছে। যারা অযথাই সারাক্ষণ আমাদের দোষ বের করতে থাকে, আমাদের নানাভাবে হেয় করার চেষ্টা করে, আমাদের উচিত তাদের থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকা। নেগেটিভ চিন্তা বেশিরভাগ সময়ই আমাদের মাথায় আসে পারিপার্শ্বিক কারণে, যখন অন্য কেউ আমাদের বারবার ছোট করে, আমরা নিজেরাও শুধু নিজেদের দোষ বের করতে থাকি।

বিষাক্ত মানুষকে দূরে রাখা - shajgoj.com

এভাবে মানুষ নিজের উন্নয়ন করার বদলে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে নেতিবাচক চিন্তায় ডুবে যায়। অনেক সময়ই দেখা যায় খুব কাছের মানুষেরা না বুঝেই আমাদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দেয়- সেটা বাবা-মা, ভাই-বোন, প্রেমিক-প্রেমিকাও হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে আমাদের উচিত তাদের সাথে সরাসরি কথা বলা যে আমরা তাদের আচরণে আহত হচ্ছি। এছাড়াও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আমাদের নিজেদের ব্যাপারে কোন মন্তব্যটা সঠিক আর কোনটা ভুল। নিজেদের সম্পর্কে অন্যদের ভ্রান্ত ধারণাকে গ্রহণ করার কোন মানে হয় না। সেটা যত কাছের মানুষই করুক না কেন।

২) নিজেকে পরিস্থিতির শিকার মনে করবেন না

নিজেকে পরিস্থিতির শিকার মনে করা - shajgoj.com

এটা সত্যি যে সবার সাথেই কমবেশি খারাপ ঘটনা ঘটে থাকে। খুব কম সময়েই আমাদের সে সব পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে। কিন্তু তাই বলে নিজেকে সব সময় সব দুর্ঘটনার শিকার মনে করা, “আমার সাথেই কেন এমন হয়” এধরনের চিন্তা করা আমাদের মন আর শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আমাদের সাথে যেমন খারাপ কিছু ঘটে, অন্যদের সাথেও ঘটে। কারও জীবনই সহজ না। অনেক সময় আমরা শুধু নিজের ক্ষতিটাই দেখি আর ভেবে বসি পুরো পৃথিবী আমাদের বিরুদ্ধে লেগে আছে। এভাবে চিন্তা না করে আমাদের উচিত যতটুকুর উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ আছে, ততটুকু ঠিক করার চেষ্টা করা। কিছু না কিছু তো আমরা বদলাতেই পারি। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে আমাদের উচিত সেই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া আর এমন প্রস্তুতি নেওয়া যেন আগামীতে আমাদের আর ততটা কষ্ট না হয়।

৩) মনের উপর চাপ আসে এমন জায়গায় যাবেন না 

শুনে মনে হতে পারে এটাই তো যুক্তিসম্পন্ন যে আমরা যার কাছে বা যেখান থেকে কষ্ট পাই, তাকে এড়িয়ে চলবো। কিন্তু আমরা প্রায়ই এই সহজ ব্যাপারটা ভুলে যাই। হয়তো আপনার প্রাক্তন প্রেমিককে তার নতুন প্রেমিকার সাথে দেখতে আপনার কষ্ট হয়। কিন্তু আপনি ঘুরে ফিরে বারবার তাদের ছবি দেখে বা তাদের কথা চিন্তা করে নিজেকে অত্যাচার করেন। এরকম ইচ্ছা করলে নিজেকে বারবার সংযত করবেন। খারাপ চিন্তা মাথায় আসলে জোর করে সেটাকে কোন ভালো চিন্তায় পরিবর্তন করবেন। যদি কোন গান শুনলে বা কোন জায়গায় গেলে আপনার মনের উপর চাপ পড়ে আপনি সেসব জায়গা এড়িয়ে চলুন।

৪) অন্যদের সাথে নিজেকে তুলনা করবেন না

অন্যদের সাথে নিজেকে তুলনা না করা - shajgoj.com

ছোটবেলা থেকেই আমরা বেড়ে উঠি একটা প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা হোক কিংবা সমাজ হোক, সবাই যেন সারাক্ষণ বলতে থাকে- “ও এটা পারে, তোমাকেও পারতে হবে। অমুকের মত হতে পারো না? দেখো ও কত ভালো করছে।” এসব কারণে আমরা জেনে না জেনে সারাক্ষণ নিজেকে আশেপাশে সবার সাথে তুলনা করতে থাকি। এজন্য খুব সহজেই মানুষ ইতিবাচক চিন্তায় ডুবে যায়। আমাদের সবার মেধা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা একদিকে না। আমাদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিও ভিন্ন। তাই আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত কিভাবে নিজের মেধা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাওয়া যায়। আমাদের তুলনা হওয়া উচিত শুধু নিজেদের সাথেই।

৫) ক্ষমা করতে শিখুন

কারও কোন আচরণে আমরা আহত হলে, প্রতারিত বোধ করলে সেই মানুষের জন্য মনে ঘৃণা চেপে রাখা উচিত না। মাফ করে মনকে হালকা করে ফেলা উচিত। ঘৃণা, ঈর্ষা, অহংকার এধরনের নেতিবাচক অনুভুতি আমাদের মনকে বিষাক্ত করে তোলে, নিজের শান্তি নষ্ট করে দেয়। তবে এর মানে এই না যে বারবার মানুষকে আঘাত করার সুযোগ করে দিবেন। শুধু মন থেকে তাদের অপরাধটা মাফ করে দিন, এতে আমি মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন।

ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; সাটারস্টক.কম

41 I like it
3 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort