ওজন কমানোর সাথে সাথে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে কি?

ওজন কমানোর সাথে সাথে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে কি?

07-06-20221

আজকাল আমরা কম বেশি সবাই স্বাস্থ্য সচেতন। একটু ওজন বেড়ে গেলেই সেই বাড়তি ওজন কমানোর জন্য আমরা ক্রমাগত চেষ্টা করে যাই। অতিরিক্ত ওজন ঝরিয়ে ফেলার সাথে সাথে মাথার চুলও যখন পড়তে শুরু করে তখন আমরা খুব হতাশ হয়ে যাই! ওজন কমানোর সাথে সাথে চুল পড়া সমস্যা বেড়ে যাওয়ার কোথায় যেন একটা কানেকশন আছে। এই সিচুয়েশন কি আপনিও ফেইস করছেন?

হতাশ হওয়ার কিছু নেই! আপনি যখন ওয়েট লসের সাথে হেয়ার ফল বেড়ে যাওয়ার আসল কারণগুলো ভালোভাবে জানবেন ও বুঝবেন, তখন আপনি চাইলে এর প্রতিকারও সহজেই করতে পারবেন। শুধু সেই উপায়গুলো জেনে নিতে হবে। চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।

ওজন কমানোর সাথে চুল পড়ার সম্পর্ক কী?

খুব দ্রুত ওজন কমানো বা ওয়েট লস সার্জারির ফলাফল হিসেবে শরীরে যে নিউট্রেশনের ঘাটতি হয়, হরমোনাল চেঞ্জ আসে, ওজন নিয়ে যে স্ট্রেস আমরা নেই; সেগুলোর কারণে আমাদের শরীর অনেক সময় প্রতিক্রিয়া দেখায়। এই প্রতিক্রিয়ার একটি হচ্ছে চুল পড়ে যাওয়া।

ওজন কমানোর সাথে চুল পড়ার সম্পর্ক

আমরা যখন ওজন কমানো শুরু করি, তখন একটি নিয়ন্ত্রিত ডায়েট চার্টে সীমাবদ্ধ থাকি। ঐ সময় আমাদের শরীরে এক ধরনের কন্ডিশন তৈরি হয় যেটাকে বলা হয় Acute Telogen Effluvium। ওয়েট লসের পরে চুল পড়ার ক্ষেত্রে শরীরের এই কন্ডিশনটাই মূলত দায়ী। সাধারণত ডায়েট বা ওজন কমানোর প্রসেস শুরু করার তিন মাসের দিকে এই কন্ডিশন শুরু হয় এবং ছয় মাস পর্যন্ত এটি স্থায়ী হয়ে থাকে। তবে এটি ক্রনিক হয়ে গেলে ছয় মাসের বেশি সময় ধরেও স্থায়ী হতে পারে এবং চুল অনেক বেশি পাতলা হয়ে মাথায় টাক পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। এই কন্ডিশন তৈরির কারণগুলো আমরা জানার চেষ্টা করবো আজ। কারণ জানা থাকলে আগের থেকেই সচেতন হতে পারবেন। চলুন দেখে নেই তাহলে।

কেন চুল পড়া বেড়ে যায়?

ক্র্যাশ ডায়েট

ক্র্যাশ ডায়েট ও অতিরিক্ত হেয়ার ফল একটি আরেকটির সাথে কানেক্টেড, সেটি আমরা অনেকেই জানি। ক্র্যাশ ডায়েট খুব লিমিটেড ফুড আইটেমে সীমাবদ্ধ থাকে বলে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি, ফ্যাটি অ্যাসিড, জিংক, আয়রন এগুলোর চাহিদা পূরণ করতে পারে না। আর হঠাৎ করে খুব অল্প আর সিলেক্টেড খাবারে সীমাবদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে মেন্টাল স্ট্রেসও পড়ে আমাদের। কি বিষয়টি রিলেট করা যাচ্ছে? স্ট্রেস ও পুষ্টির ঘাটতির কারণে চুল পড়া শুরু হয়।

ক্র্যাশ ডায়েট

প্রোটিনের ঘাটতি

আপনি যখনই সীমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করবেন, আপনার প্রোটিন ইনটেকও কিন্তু কমে যাবে। অ্যামিনো অ্যাসিডের কমতি হলে চুলের যে স্ট্রাকচারাল প্রোটিন থাকে, সেটার উৎপাদন কম হবে। ফলে প্রথমে চুল ভেঙে যাওয়া শুরু হয়, পরে আস্তে আস্তে গোড়া থেকে ঝরতে থাকে। আপনার শরীরের অভ্যন্তরীন সিস্টেমের প্রথম কাজ হচ্ছে আপনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যে ফাংশনগুলো কার্যকর রাখা একান্ত প্রয়োজন, সেগুলোতে আগে পুষ্টি সরবরাহ করা। যখন শরীরে হুট করে খুব সীমিত পরিমাণে প্রোটিন ইনটেক হয়, তখন আপনার চুল বা ত্বক কম প্রাধান্য পায় বলে সেখানে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছায় না। যার ফলাফল হিসেবে চুল পড়া আগের থেকে বাড়ে ও চুলের আগা ফেটে যায়!

ওয়েট লস সার্জারি

দ্রুত ও সহজে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে ওয়েট লস সার্জারি বেছে নেন অনেকেই। যেখানে পাকস্থলীর কিছুটা অংশ কেটে ফেলা হয়, যাতে খাবার গ্রহণের ক্ষমতা কমে যায়। সেক্ষেত্রে আপনি চাইলেও বেশি খাবার একবারে খেতে পারবেন না। এতে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব! ফলাফল হিসেবে শরীরে প্রোটিন, মিনারেল ও প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব দেখা দিতে পারে। এর সরাসরি ইফেক্ট দেখা যায় চুল ও ত্বকে। চুল পড়ে যায়, ত্বক রুক্ষ ও মলিন হয়ে যায়। তবে আমাদের দেশে এই সার্জারি এতটা পপুলার না।

সল্যুশন কী তাহলে?

চুল পড়ার সমাধান

বিভিন্ন কারণেই অনেক সময় আমাদের ওয়েট কন্ট্রোল করতে হতে পারে। ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকলে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন অসুখ বাসা বাঁধে শরীরে। ওজন কমানোর সাথে সাথে চুল পড়ার সমস্যা বেড়ে যেন না যায়, সেক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে-

১) ডায়েটিশিয়ান বা নিউট্রিশনিস্ট এর পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ক্র্যাশ ডায়েটে যাওয়া যাবে না। তিনি আপনার ওজন, বয়স, হেলথ কন্ডিশন বুঝে আপনাকে ডায়েট চার্ট প্রোভাইড করবেন। না জেনে বুঝে নিজে নিজে ডায়েট করলে সেটি স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। হেলদি লাইফস্টাইল মেনটেইন করুন।

২) বিশেষ কোনো ডায়েট প্ল্যান মেনে চলতে হলে মেন্যু এমনভাবে সাজাতে হবে যেন প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে।

৩) খাবারে বিচিত্রতা রাখবেন এবং মাঝে মাঝে চিট মিল রাখতে হবে ডায়েট করলেও! এতে মানসিকভাবে আপনি প্রফুল্ল থাকবেন। স্ট্রেস নেওয়া যাবে না একদমই। মন ভালো থাকলে ত্বক ও চুলেও পজেটিভ ইমপ্যাক্ট পড়ে।

চুলের যত্নে বেছে নিন সঠিক প্রোডাক্ট

ডেইলি ৫০-১০০টা চুল পড়া স্বাভাবিক। ওজন কমানোর প্রসেসে প্রথম দিকে কিছুটা হেয়ার ফল হতে পারে, এই সিচুয়েশন আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়। এসময় ব্যালেন্স ডায়েট করার পাশাপাশি চুলের এক্সট্রা কেয়ার করুন। অ্যান্টি হেয়ার ফল রেঞ্জ বেছে নিন। হার্শ কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট এড়িয়ে চলুন। মেথি গুঁড়ো ও হেনা মিক্স করে চুলে অ্যাপ্লাই করতে পারেন উইকে অন্তত একদিন। দু’দিকে ব্যালেন্স করুন; তাহলে ওজনও কমবে আর চুল পড়াও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত পরিমাণে যদি চুল পড়তে থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

অনলাইনে অথেনটিক হেয়ার কেয়ার রেঞ্জ কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।

 

ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক

3 I like it
2 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort