ড্যামেজড চুলের যত্ন | কীভাবে ফিরে পাবেন স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও কোমল চুল?

ড্যামেজড চুলের যত্ন | কীভাবে ফিরে পাবেন স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও কোমল চুল?

ফ্রিজি চুল দেখছে একজন

চারপাশের এতো এতো পল্যুশন, এর মাঝে সবার কমন সমস্যা হল ড্যামেজড হেয়ার। এই নিয়ে দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। আর চুল ড্যামেজ হলেই সকলের একই সমাধান- “নাও, এবার চুল কেটেই ফেলো”!! তবে এটা অবশ্য ঠিক যে, খুব বেশি ড্যামেজ হয়ে গেলে না কেটে আর উপায় থাকে না। তবে একটু খেয়াল করলেই কিন্তু বিপদ থেকে আপনি আগে ভাগেই রক্ষা পেতে পারেন। চলুন জেনে নেই চুল ড্যামেজ হবার লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে!

ড্যামেজড হেয়ার এর লক্ষণ

সবার আগে চলুন জেনে নেই, কী করে বুঝবেন যে আপনার চুল ড্যামেজ হওয়া শুরু হয়েছে-

১) রুক্ষতা: এটা বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হল, চুলের আগার দিকের গোছা ধরে এর মধ্যে আঙুল চালিয়ে দেখুন। যদি খসখসে মনে হয় বা হাতে স্মুথ না লাগে তাহলেই বুঝবেন, আপনার চুল ড্যামেজ হওয়া শুরু করেছে।

২) মলিনতা: চুল একবার ড্যামেজ হলে সেটাকে যতই ডিপ কন্ডিশনিং করা হোক না কেন, সেটার উজ্জ্বলতা আর ফিরে আসে না। তাই যখন দেখবেন আপনার চুল আর আগের মতো সিল্কি আর শাইনি নেই, তখনই বুঝতে হবে চুলের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়।

৩) আগা ফেটে যাওয়া: চুল ড্যামেজ এর সবচেয়ে বড় লক্ষণ এটা। যখনই দেখবেন চুলের আগা ফেটে যাচ্ছে, বুঝতে হবে, এবার পার্লার বা বিউটি সেলুনে যাওয়ার সময় হয়েছে।

৪) জট: ড্যামেজড চুলে স্বাভাবিক চুলের চেয়ে অনেক বেশি জট লাগে। ফলাফল চুল ভাঙেও বেশি।

 

৫টি প্রধান কারণ

লক্ষণ তো জানলেন, এবার তবে চলুন চুলটা ড্যামেজ হলো কী করে সেটাও তো জানা থাকা জরুরি, না হলে এর প্রতিকার করবেন কী করে!

১) ব্লিচ: ইদানিং অনেকেই হাইলাইট করতে পছন্দ করেন, আবার অনেকে চুলের ন্যাচারাল রঙের চেয়ে গোল্ডেন বা বারগেন্ডি শেইড দিতে প্রিফার করেন। সে কারণে করতে হয় ব্লিচিং! এটি আপনার চুলের কিউটিকলকে ওপেন করে যাতে এর ভেতরের পিগমেন্ট রিডিউস করে চুলের রঙ হালকা হয়ে যায়। আর এই অত্যাচারে চুল যায় ভেঙে! হয়ে ওঠে রুক্ষ ও শুষ্ক। অদক্ষ হাতে করালে চুলের অবস্থার বারোটা বাজবে খুব তাড়াতাড়ি।

২) কালারিং: কেউ কেউ আছেন, যারা কিছুদিন দিন পরপরই চুলে কালার করিয়ে থাকেন। ভালো ব্র্যান্ডের কালার ইউজ না করলে হেয়ার ড্যামেজের সম্ভাবনা থাকে আরও অনেক বেশি। এই হেয়ার কালার চুলের শ্যাফটে পোরস তৈরি করে এমন পর্যায়ে নিয়ে আসতে বাধ্য হয়, যখন চুলের কর্টেক্স পর্যন্ত তা এক্সপোজ হয়ে যায়। প্রোপার কেয়ার নিলে এই ধরনের ড্যামেজ কাটিয়ে ওঠা যায়।

৩) পার্মিং: কেমিক্যাল ব্যবহার করে হয় চুলকে একদম টানটান করে সোজা করে ফেলা, নয়তো কার্লি করে ফেলা। এই প্রক্রিয়াতে চুলের ন্যাচারাল স্ট্রাকচারকে ভেঙে ফেলে নতুন স্ট্রাকচার দেয়া হয় আর সেটা চুলের ওপর অত্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়!

৪) হিট: হেয়ার ড্রাইয়ার, ফ্ল্যাট আয়রন বা কার্লিং আয়রন যে পরিমাণ কনসেনট্রেটেড হিট দেয় চুলে, সেটা আপনার চুলের কিউটিকল ওপেন করে ফেলে আর চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা কেড়ে নেয়, যার ফলে চুল হয়ে যায় নিষ্প্রাণ। অনেক সময় চুল ভেঙে পড়তেও দেখা যায়। হিট প্রোটেকটর স্প্রে বা সিরাম ব্যবহার না করলে চুলের এই দশা তো হবেই।

চুলে স্ট্রেইটনার ব্যবহার করছে একজন

৫) ভুল প্রোডাক্ট: সাধারণত যেসব প্রোডাক্টে অ্যালকোহল এবং হার্শ কেমিক্যালের পরিমাণ বেশি থাকে, সেগুলো চুলের জন্যে অনেক বেশি ক্ষতিকর হয়ে থাকে, তাই শ্যাম্পু কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে এই উপাদানগুলো ঠিক কী কী পরিমাণে আছে। তাছাড়া যার যার চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত।

ড্যামেজড হেয়ার এর প্রতিকার

রুক্ষ চুলের লক্ষণ ও কারণ জানার পর চলুন এবার প্রতিকার নিয়ে ভাবা যাক!

১) প্রিভেনশন: ৬-৮ সপ্তাহ পর পর চুল ট্রিম করা জরুরি। এটা চুল ড্যামেজ হওয়া অনেকাংশে কমায়।

২) স্টাইলিং টুলস প্রয়োজন ছাড়া ইউজ করবেন না: যখনই চুলের ড্যামেজ খেয়াল করবেন, সেই মুহূর্ত থেকে সমস্ত হিট স্টাইলিং প্রোডাক্ট থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন। এতে করে ড্যামেজড চুলকে রিকভার করা অনেক বেশি সহজ হবে। নরমাল বাতাসে চুল শুকান, হেয়ার স্টাইল থেকে কিছুদিনের বিরতি নিন। খুব বেশি ইচ্ছে হলে, হিট ছাড়া করা এমন হেয়ার স্টাইল বেছে নিন। আর হিট দিলে অবশ্যই আগে হিট প্রোটেক্টর অ্যাপ্লাই করবেন।

৩) কেমিক্যাল ও কালার থেকে দূরে থাকুন: কালার এবং কেমিক্যাল দুই-ই হেয়ার ড্যামেজের বড় কারণ। পরপর দুইবার কালারিং বা স্ট্রেইটনিং-এর মাঝে একটা লম্বা বিরতি দিন। আর কালারিং বা স্ট্রেইটনিং-এর পরে চুলের যত্ন নিন।

৪) তেল: নারকেল তেল চুলের কিউটিকল-এর বাইরে একটি প্রোটেক্টিভ লেয়ার তৈরি করে, পাশাপাশি নারিশড করে চুলকে কোমল ও মসৃণ করে এবং ভেতর থেকে চুলকে মজবুত করে তোলে। সেই সাথে আমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েল এগুলোও নারকেল তেলের সাথে মিক্স করে ইউজ করতে পারেন।

৫) হোমমেড রেমেডি: ড্যামেজ হেয়ারকে স্মুথ করে তুলতে আমলা, হেনা, ডিম, দই, কলা, অ্যাভোক্যাডো এগুলো বেশ ভালো কাজে দেয়। এই উপাদানগুলো ব্যবহার করে প্যাক/মাস্ক তৈরি করে চুলে লাগালে বেশ ভালো ফল পাবেন।

৬) খাদ্যাভ্যাস: উপরের কোনও কিছুই কাজে আসবে না, যদি আপনার খাদ্যাভ্যাস ঠিক না থাকে। প্রোটিন রিচ ফুড এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডযুক্ত খাবার চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

এই তো গেলো হেয়ার ড্যামেজ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা। আসলে চুলের যত্ন নেওয়াটা কিন্তু এতো কঠিন কিছু না! একটু সময়, একটু ধৈর্য আর একটু ইচ্ছা- ব্যস, এই যা দরকার! আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আপনি যদি চুলের যত্নে অথেনটিক প্রোডাক্ট খুঁজে থাকেন তবে সাজগোজ হতে পারে আপনার জন্য ভালো একটি অপশন। অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারেন। সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

 

ছবি- সাজগোজ

35 I like it
1 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort