ব্রাইট ও হাইড্রেটেড স্কিন এখন একটি ময়েশ্চারাইজার দিয়েই!

ব্রাইট ও হাইড্রেটেড স্কিন এখন একটি ময়েশ্চারাইজার দিয়েই!

2

‘স্কিন দিন দিন কেমন যেন ডাল হয়ে যাচ্ছে। ইস! যদি স্কিনটা আরেকটু ব্রাইট হতো! কিন্তু ব্রাইটেনিং ক্রিম ব্যবহার করলে কি স্কিন আর হাইড্রেটেড থাকবে?’ স্কিন ব্রাইট চাই নাকি হাইড্রেটেড- এই নিয়ে দ্বিধা আমাদের যেন লেগেই আছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার বা ক্রিম ব্যবহার করেও এর সঠিক কোনো সুরাহা তো মেলেই না, বরং উল্টোপাল্টা জিনিস ব্যবহারে স্কিনের অবস্থা দফারফা। আজ এমন একটি ময়েশ্চারাইজার সম্পর্কে জানাবো যেটি একইসাথে ব্রাইট ও হাইড্রেটেড স্কিন পেতে হেল্প করবে।

Rajkonna Light Moisturizer with Rice Water and Licorice Extract

আমার স্কিন নরমাল হলেও সারাদিন এসিতে থাকার কারণে কিছুটা ড্রাই ফিল হয়। সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরে এই ড্রাইনেস কমে না। বরং স্কিন আরও ডাল লাগে। আবার সিজন চেঞ্জের সাথে সাথে ড্রাই ও ডালনেস যেন বেশি ফিল হতে থাকে। মাঝে কিছুদিন ব্রাইটনেসের জন্য ভিটামিন সি যুক্ত একটি ময়েশ্চারাইজার ইউজ করছিলাম। কিন্তু আমার স্কিনে সেটি স্যুট না হওয়ায় আর কন্টিনিউ করিনি। এরপর থেকেই ময়েশ্চারাইজার নিয়ে আমার কিছুটা দ্বিধা কাজ করছিল। আমার স্কিনের এই অবস্থা দেখে আর সহজে কোনো কিছুর উপর ভরসা না করতে পারার ব্যাপারটি আমার কলিগ বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারলেন। উনিই সাজেস্ট করলেন বাজেট ফ্রেন্ডলি Rajkonna Light Moisturizer with Rice Water and licorice Extract লাইট ময়েশ্চারাইজারটি।

ভাবলাম, ব্রাইটনেস ও হাইড্রেটেড দুটো ব্যাপারই একসাথে যেহেতু পাওয়া যাচ্ছে তাহলে একবার ট্রাই করে দেখাই যায়। এর আগে রাজকন্যার ফেইস ওয়াশ ইউজ করেছিলাম। তাই ব্র্যান্ডটি পরিচিত ছিল। এবার ইউজ করলাম তাদের নতুন ময়েশ্চারাইজারটি। বিশ্বাস ছিল, বেস্ট কোয়ালিটির প্রোডাক্টই পারচেজ করছি।

ব্রাইট ও হাইড্রেটেড স্কিন পেতে ময়েশ্চারাইজার

এতে থাকা মেইন ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো কী কী?

নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এটির মেইন ইনগ্রেডিয়েন্ট রাইস ওয়াটার ও লিকোরিস এক্সট্র্যাক্ট। আমি ইউজ করছি বলে জানি এই উপাদান দুটি স্কিনের জন্য ভালো। কিন্তু আপনাকেও জানতে হবে কেন এটি বেনিফিসিয়াল। কারণ প্রোডাক্ট কেনার আগে উপাদানগুলো সম্পর্কে জেনে নিলে সেটি আপনার স্কিনে স্যুট করবে কিনা বোঝা সহজ হবে।

ব্রাইট ও হাইড্রেডেট স্কিন এর জন্য কী কী বেনিফিট দেয় রাইস ওয়াটার?

এশিয়ান স্কিন কেয়ারে রাইস ওয়াটার বেশ পরিচিত একটি নাম। জাপান ও কোরিয়ায় বেশ আগে থেকেই এই ইনগ্রেডিয়েন্টটি ইউজ করা হতো। স্কিন কেয়ার রেঞ্জে অনেক প্রোডাক্টেই এখন রাইস ওয়াটার ইনক্লুড করা হয়। রাইস ওয়াটার কী কী বেনিফিট দেয় সেটা জানার আগে চলুন জেনে নেই এতে থাকা কোন উপাদানগুলোর কী কাজ-

কোজিক অ্যাসিড: আমাদের স্কিনে মেলানিন প্রোডাকশনকে বাড়িয়ে দিতে হেল্প করে Tyrosine নামক এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড। এই Tyrosine এর প্রোডাকশন কমিয়ে স্কিন ব্রাইট করতে হেল্প করে কোজিক অ্যাসিড।

ফেরুলিক অ্যাসিড: রাইস ওয়াটারে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এদের মধ্যে একটি ফেরুলিক অ্যাসিড। এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে স্কিনকে বাঁচায় এবং অ্যান্টি এজিং এ হেল্প করে।

ভিটামিন ই: রাইস ওয়াটারে আরও আছে ভিটামিন ই। ইউভি ড্যামেজ থেকে স্কিনকে প্রোটেক্ট করে এই ভিটামিন।

Allantoin: এই উপাদানটি পরিচিত তার সুদিং প্রোপার্টিজের কারণে। ড্রাই, রাফ, ইচি স্কিনে ইউজ করা ময়েশ্চারাইজারে এই উপাদানটি থাকলে সুদিং ফিল হয় এবং স্কিন সফট লাগে। এছাড়া ডালনেস কমিয়ে স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখতে এটি বেশ কার্যকর। একইসাথে কোলাজেন প্রোডাকশন বুস্ট আপ করে রিংকেলস ও ফাইন লাইনস কমাতেও হেল্প করে Allantoin।

এবার আপনারাই বলুন, রাইস ওয়াটারে যখন এতগুলো কার্যকরী উপাদান একসাথে আছে, সেখানে কেন এটি স্কিনের জন্য বেনিফিসিয়াল হবে না?

এক নজরে রাইস ওয়াটারের বেনিফিটস-

  • স্কিনের ইলাস্টিসিটি বাড়িয়ে এজিং প্রসেস ডিলে করে
  • স্কিন ব্রাইট করে
  • স্কিনের ন্যাচারাল ব্যারিয়ার ইমপ্রুভ ও রিপেয়ার করে
  • সানবার্ন, রেডনেস, ইনফ্ল্যামেশন, ইচিং এর সমস্যা কমিয়ে স্কিনে সুদিং ফিল দেয়

ব্রাইট ও হাইড্রেটেড স্কিনের জন্য ময়েশ্চারাইজার

লিকোরিস এক্সট্র্যাক্টের বেনিফিটগুলো কী কী? 

দেখতে জাস্ট একটি স্টিক মনে হলেও লিকোরিস বা যষ্টিমধুর আছে হেলথ ও স্কিনের জন্য অনেকগুলো বেনিফিট। ইজিপ্টে সর্বপ্রথম এই উপাদানটিকে হারবাল রেমিডিস ও মেডিসিনের জন্য ইউজ করা হয়। এখন তো রীতিমতো এই উপাদানটি নিয়ে গবেষণা করা হয়। লিকোরিস এক্সট্র্যাক্টে থাকা কিছু ইনগ্রেডিয়েন্ট একে আরও বেশি বেনিফিসিয়াল করে তুলেছে। চলুন জেনে নেই সেগুলো সম্পর্কে-

Glycyrrhizin: অ্যাটোপিক ডার্মাটিটিস (atopic dermatitis), রোজাশিয়া ও সোরিয়াসিসের মতো সমস্যাগুলোকে টার্গেট করে কাজ করে লিকোরিস। এ জন্য অবশ্য হেল্প করে এতে থাকা Glycyrrhizin নামক উপাদানটি। এটির উপস্থিতির কারণেই লিকোরিস কিছুটা মিষ্টি হয়। এই অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদানটি ইরিটেটেড স্কিনের রেডনেস ও ইরিটেশন কমায়। সেই সাথে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হওয়ায় স্কিনকে ফ্রি রেডিক্যালসের হাত থেকেও বাঁচায়। সব মিলিয়ে বেশ সুদিং একটি ফিল দেয় এই ইনগ্রেডিয়েন্টটি।

Glabridin: সান ড্যামেজের কারণে আমাদের স্কিনে ডার্ক স্পট হয়। লিকোরিস এক্সট্র্যাক্টে থাকা এই ইনগ্রেডিয়েন্টটি এই ডার্ক স্পট কমাতে হেল্প করে। সেই সাথে Tyrosine এর প্রোডাকশনকেও কমায়। এতে স্কিন হয় ব্রাইট।

Licochalcone A: এই ইনগ্রেডিয়েন্টটি স্কিনের নিজস্ব ডিফেন্স সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। যার কারণে ইউভি ড্যামেজের হাত থেকে স্কিন থাকে সুরক্ষিত।

ব্রাইট স্কিনের জন্য বেস্ট ময়েশ্চারাইজার

আশা করি বুঝতে পেরেছেন, লিকোরিস এক্সট্র্যাক্ট স্কিন কেয়ারে কেন এত জনপ্রিয়! তাই এই উপাদানটি কোনো প্রোডাক্টে থাকলে নিশ্চিন্তে ইউজ করতে পারেন।

লিকোরিস এক্সট্র্যাক্টের কয়েকটি বেনিফিটস-

  • হাইপারপিগমেন্টেশন কমায়
  • ডার্ক স্পট কমিয়ে স্কিনকে ভেতর থেকে করে তোলে ব্রাইট
  • স্কিনের ইরিটেশন কমিয়ে স্কিনে সুদিং ফিল দেয়
  • হায়ালুরোনিক অ্যাসিডকে প্রিজার্ভ করে রাখতে হেল্প করে বলে স্কিন থাকে প্লাম্পি
  • স্কিনের ইলাস্টিসিটি ধরে রাখতে এবং স্কিনকে সফট রাখতে হেল্প করে কোলাজেন ও ইলাস্টিন। এগুলোর প্রোডাকশন বাড়াতে হেল্প করে লিকোরিস এক্সট্র্যাক্ট।

ব্রাইট ও হাইড্রেটেড স্কিন পেতে এটি কেন ইউজ করবেন?

আমি এমন একটি ময়েশ্চারাইজার চাচ্ছিলাম যেটি একইসাথে ব্রাইট ও হাইড্রেটেড স্কিন প্রোভাইড করবে, তাই এতে থাকা উপাদানগুলো কী কী বেনিফিট দিবে সেটা আমার জন্য জানা জরুরি ছিল। ময়েশ্চারাইজারটি অ্যাপ্লাইয়ে বেনিফিট পেয়েছি বলেই আপনাদেরও জানাচ্ছি কেন এটি ইউজ করবেন-

  • স্কিন ব্রাইট করে ও হাইড্রেটেড রাখে
  • স্কিনকে ইভেন টোন রাখে
  • ইলাস্টিন ও কোলাজেন প্রোডাকশন বুস্ট আপ করে
  • স্কিনের এক্সেস মেলানিন রিমুভ করে স্কিনে ফিরিয়ে আনে গ্লো
  • এর টেক্সচার ওয়াটারি বলে স্কিনে দ্রুত অ্যাবজর্ব হয়ে যায়
  • স্কিন ব্যারিয়ার ঠিক রাখে
  • স্মেলের কারণে বেশ সুদিং ও রিফ্রেশিং একটি ফিল দেয়

প্যাকেজিং

ময়েশ্চারাইজারটি পাওয়া যাচ্ছে ৫০ গ্রামের টিউবে। হালকা গোলাপি রঙের টিউবটি বেশ আই ক্যাচি। লাইট ওয়েটের এই ময়েশ্চারাইজারটি ইজিলি ব্যাগে ক্যারি করা যায়। এর স্মেলটিও বেশ মিষ্টি।

ব্যবহারের নিয়ম

  • ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাইয়ের আগে ফেইস ভালো করে ক্লিন করে নিন
  • এবার অল্প পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার আঙুলে নিয়ে নিন
  • জেন্টলি পুরো ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন

টিনেজার থেকে সব বয়সী নারী-পুরুষ ময়েশ্চারাইজারটি ইউজ করতে পারবেন। দিনে ও রাতে যে কোনো সময় ইউজ করা যাবে। অল টাইপ স্কিনের জন্য এটি স্যুইটেবল।

ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই

কেমন ছিল আমার অভিজ্ঞতা?

স্কিনে যে কোনো কিছু অ্যাপ্লাইয়ের আগে আমি বেশ কয়েকবার ভাবি। আমার স্কিন টাইপ নরমাল হলেও সিজন চেঞ্জের সময় বেশ ড্রাই ফিল হয়। যার কারণে খসখসে ভাবটা বোঝা যায়। তাই সব সিজনেই ইউজ করা যায় এমন একটি ময়েশ্চারাইজার আমার দরকার ছিল। এটি ইউজ করার পর আমার মোটেও হেভি ফিল হয়নি। বরং ওয়াটারি টেক্সচারের কারণে বেশ লাইট ও সুদিং ফিল হয়েছে। আমি সকালে অফিসে যাওয়ার আগে অ্যাপ্লাই করি। বেশ লম্বা একটা সময় স্কিন হাইড্রেটেড লাগে। রাতে ঘুমানোর আগেও অ্যাপ্লাই করি, যার কারণে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর স্কিন বেশ গ্লোয়ি লাগে। আমার ভালো লেগেছে বলেই আপনাদের সাজেস্ট করলাম। এবার তাহলে আপনারাও ইউজ করে দেখুন!

এই তো ছিল ময়েশ্চারাইজারের রিভিউ। সেলফ কেয়ার ও মেকআপের অথেনটিক প্রোডাক্টগুলো পেয়ে যাবেন সাজগোজে। সাজগোজের চারটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) এ অবস্থিত। এই শপগুলো থেকে অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে আপনার প্রয়োজনীয় যে কোনো প্রোডাক্ট কিনে নিতে পারেন।

 

 

ছবিঃ সাজগোজ

38 I like it
1 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort