ঘরে পোষা পশুপাখির যত্ন - কিছু টিপস - Shajgoj

ঘরে পোষা পশুপাখির যত্ন - কিছু টিপস

pet care

অনেকেই শখ ঘরে অনেক ধরনের পশু পাখি পুষে থাকেন। এরা যেমন সময় কাটানোর বেশ ভালো একটি মাধ্যম, তেমনি অনেক ক্ষেত্রে উপকারীও বটে। আজকাল বাচ্চারা ঘরে পোষা প্রাণী বেশ পছন্দ করে। কারণ শিশুরা খেলার সঙ্গী পায়। সাধারণত আমাদের দেশে পোষা প্রাণী হিসেবে কুকুর, বিড়াল, খরগোশ, ময়না ও টিয়া পাখি বেশি জনপ্রিয়। তবে এর সাথে অনেকেই আজকাল হ্যামস্টার, গিনিপিগ পুষতে পছন্দ করেন। কারণ এদেরকে স্বল্প খরচে পোষা যায় এবং ঝামেলাও কম।

তবে যেই প্রাণীই পোষা শুরু করুন না কেন, তার প্রস্তুতি ও দেখাশোনার জন্য মানসিকভাবে আগেই তৈরী হওয়া ভালো।

অনেকেই হঠাৎ করে শখ হয়েছে বলে পশুপাখি পোষা শুরু করেন এবং এক সময় পশুপাখির উপর থেকে আগ্রহ চলে গেলে তার সেই পোষা প্রাণীটির দেখাশোনা করতে চান না। এটি খুব খারাপ বিষয়। তাই আপনি পোষা প্রাণী আনার আগে নিজে চিন্তা করে দেখুন আপনি তার দেখাশোনা করতে পারবেন কি না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পোষা প্রাণীর দেখাশোনা দিনের বেলা বেশি করতে হয়। তাই দিনে আপনি প্রাণীটির পেছনে কতখানি সময় দিতে পারবেন সেটা চিন্তা করে দেখবেন।

যদি বাসায় ছোট বাচ্চাকাচ্চা থাকে তাহলে খেয়াল রাখবেন আপনার পোষা প্রাণীটি যেন শিশুদের জন্য আদরনীয় হয়। যেমন হ্যামস্টার, গোল্ডফিশ এগুলো শিশুদের জন্য শুরু থেকে পোষা প্রাণী হিসেবে নিতে পারেন। এছাড়াও যদি আপনি আপনার ক্যারিয়ারগত দিক থেকে স্থির একটি পজিশনে না আসেন, তার আগে পোষা প্রাণী নেয়া খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সুতরাং এই কয়টি ব্যাপারে আপনি যখন সম্পূর্ণ নিশ্চিত হবেন, কেবলমাত্র তখনই পোষা প্রাণী নেয়ার চিন্তা ভাবনা করুন।

এরপর আপনার পরিবারের সাথে মানানসই একটি পোষা প্রাণী পছন্দ করুন। পছন্দ করার পর ওই প্রাণীটির আচার আচরণ, প্রয়োজনীয়তা সাবধানতা এগুলো নিয়ে পড়াশোনা করুন। সেই প্রাণীটির দেখাশোনা করার জন্য আপনার কেমন খরচ হতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। কারণ যদি আপনার দৈনন্দিন খরচের একটা বড় অংশ আপনার পোষা প্রাণীর পেছনে চলে যায় তাহলে তা আপনাকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন করতে পারে। তাই আগে থেকে এর ব্যাপারে ধারণা নিয়ে নিন।

এবার আপনার বাসাকে আস্তে আস্তে আপনার পোষা প্রাণীটির জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তুলুন। মনে রাখবেন, আপনার বাসায় আপনার পোষা প্রাণী যত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবে, সে ততই আপনার প্রভুভক্ত হয়ে পড়বে। আপনার বাসা আপনার পোষা প্রাণীর জন্য আরামদায়ক করার জন্য যা করতে পারেন –

  • ক্ষতিকর বা বিষাক্ত পদার্থ দূরে রাখুন।
  • প্রাণীটিকে যদি বাসার বাইরে ঘুরতে ফিরতে দিতে চান তাহলে সে যেখানে ঘুরবে সেখানে বাউন্ডারী দিয়ে দিন।
  • প্রানীটির ঘুমানোর জন্য একটি পরিষ্কার জায়গা বেছে নিন।
  • প্রাণীটি যাতে কোন প্রকার ময়লা আবর্জনার কাছে না যায় সেইদিকে লক্ষ্য রাখুন।

ঘরে পোষা প্রাণী আনার সময়, যেখান থেকে আনছেন সেখান থেকে প্রাণীর জন্য প্রয়োজনীয় কী কী জিনিস লাগতে পারে সেসব জেনে নিন। তারপর সেসব জিনিস যেমন, ঘর, বিছানা, খেলনা, খাবার, ওষুধ এবং অন্যান্য জিনিস আগে থেকেই আনিয়ে রাখুন। আপনার বাসায় শিশু থাকলে তাকে তিনবেলা কীভাবে পোষা প্রাণীকে খাবার দিতে হয় তা শেখাতে পারেন।

প্রাণীটিকে পোষা শুরু করার সাথে সাথে একজন ভালো পশু চিকিৎসক বা ভেট এর সাথে যোগাযোগ রাখুন। তার পরামর্শ অনুসারে প্রাণীটিকে পোষা শুরু করুন। কোন ছোট সমস্যা হলেও ভেট এর কাছ থেকে পরামর্শ নিন। কারণ অনেক ক্ষেত্রে প্রাণীর সমস্যাটি আপনিও নাও বুঝতে পারেন। তাই আগে থেকে পরামর্শ নিয়ে রাখলে সেই সমস্যা বড় আকার ধারণ করবে না। নিয়মিত ভেট এর নির্দেশনা অনুযায়ী আপনার পোষা প্রাণীকে চেক আপ এর জন্য নিয়ে যান। এছাড়াও কী ধরনের অসুখ আপনার পোষা প্রাণীর হতে পারে এবং তার লক্ষণ গুলো কী কী সে সম্পর্কে জেনে রাখুন। জরুরি মুহুর্তে হাসপাতালে নেয়ার জন্য কী কী করতে হবে সেগুলোর ব্যাপারে ধারণা নিয়ে রাখা ভালো।

আপনার পোষা প্রাণীটি যাতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পায় সেদিকে নজর রাখবেন। প্রয়োজনে ভেট এর সাথে কথা বলে কী ধরনের খাবার তার জন্য পুষ্টিকর হতে পারে সেই সম্পর্কে জেনে নেবেন। যেহেতু পশুপাখির জন্য স্পেশাল খাবার অনেক ক্ষেত্রে দামী হতে পারে, তাই আপনাদের দৈনন্দিন খাবার আপনার পোষা প্রাণীর জন্য কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত হতে পারে সেই সম্পর্কে পরামর্শ নিন।

পোষা প্রাণীরা খেলতে পছন্দ করে। তাই তাদেরকে খেলার জন্য সুযোগ করে দিন। এতে পোষা প্রাণী আপনার সাথে আরো ফ্রি এবং অনুগত হবে। তাদের জন্য খেলনা বল, এবং অন্যান্য খেলার সামগ্রী কিনুন।

পোষা প্রাণী রাখার পর অন্যতম প্রয়োজনীয় কাজ হল তাদেরকে পরিষ্কার রাখা। তাই নিয়মিত আপনার পোষা প্রাণীর থাকার ও ঘুমানোর জায়গাটি ডেটল বা স্যাভলন মিশ্রিত পানি দিয়ে ফেলা ভালো। এছাড়াও প্রতি ২/৩ সপ্তাহ অন্তর অন্তত ১ বার আপনার পোষা প্রাণীটিকে গোসল করাবেন এবং গোসল শেষে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে গা ভালো করে মুছে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে শুকিয়ে নেবেন। এতে প্রাণীর শরীরে র‍্যাশ বা অন্য কোন জীবাণু হবে না। এমনকি উকুন হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে না।

একটি পোষা প্রাণীর মালিক হতে হলে কিছু দায়িত্ব পালন করা জরুরি। যেহেতু আমরা সৃষ্টির সেরা জীব, সেই হিসেবে অন্যান্য জীব এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের হাতেই পড়ে।

লিখেছেনঃ ফরহাদ রাকিব

ছবিঃ ক্লিনিভেট.কম

0 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort