হেলদি ও গ্লোয়ি স্কিন পাওয়ার জন্য কেমন হবে মর্নিং বিউটি রুটিন?

হেলদি ও গ্লোয়ি স্কিন পাওয়ার জন্য কেমন হবে মর্নিং বিউটি রুটিন?

1

প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আমরা সবাই ত্বকের যত্ন নেই। অনেকে তো নাইট টাইম স্কিনকেয়ার রুটিন ফলো করেন বেশ স্ট্রিক্টভাবেই। কিন্তু একইভাবে মর্নিং স্কিনকেয়ার রুটিনও ফলো করছেন কি? হেলদি ও গ্লোয়ি স্কিন পাওয়ার জন্য রাতের মতো সকালের স্কিনকেয়ার রুটিনও কিন্তু সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজ আপনাদের জানাবো সকালে স্কিন প্রিপেয়ার করার আল্টিমেট গাইড সম্পর্কে।

হেলদি ও গ্লোয়ি স্কিন পাওয়ার জন্য মর্নিং বিউটি রুটিন

ক্লেনজিং

রোজ যেমন শাওয়ার নেয়া জরুরি, ঠিক তেমনভাবে ক্লেনজিং করাও ইম্পরট্যান্ট। এতে ত্বকে জমে থাকা ইমপিওরিটিস যেমন- ডার্ট, অয়েল ও এনভায়রনমেন্টাল পল্যুটেন্ট দূর হয়। এছাড়া রেগুলার ক্লেনজিংয়ে ক্লগড পোরস ওপেন হয়, ব্রেকআউট প্রিভেন্ট হয়। আমাদের একেকজনের স্কিন একেকরকম। তাই ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লেনজার চুজ করতে হবে। যেমন-

জেল ক্লেনজার- অয়েলি ও একনে প্রন স্কিনের জন্য

ক্রিম ক্লেনজার- নরমাল টু ড্রাই স্কিনের জন্য

ফোম ক্লেনজার- সব ধরনের ত্বকের জন্য

ক্লে বেইজড ক্লেনজার- অয়েলি ও কম্বিনেশন স্কিনের জন্য

অয়েল ক্লেনজার- এটি মূলত মেকআপ ও সানস্ক্রিন রিমুভ করার জন্য ইউজ করা হয়। সব ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যায়।

হেলদি ও গ্লোয়ি স্কিন পাওয়ার জন্য ক্লেনজিং

এই সবগুলো ক্লেনজারের কাজ, ফর্মুলা একটি অন্যটি থেকে ভিন্ন। রকমভেদটা জানা থাকলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন কোন প্রোডাক্টটি আপনার জন্য। এবার তাহলে স্কিন টাইপ অনুযায়ী আপনিও আপনার ক্লেনজারটি বেছে নিন।

টোনিং

স্কিনকেয়ার রুটিনে টোনারকে অ্যাসেনশিয়াল হিসেবে মানা হয়। ক্লেনজিং এর পরও স্কিনে যে ডার্ট পার্টিকেলস ও এক্সেস অয়েল থাকে সেটি রিমুভ করতে হেল্প করে টোনার। সেই সাথে স্কিনের পিএইচ লেভেল ব্যালেন্স করে। কোন ধরনের স্কিনে কেমন টোনার ব্যবহার করা উচিত এবার সেটা জানিয়ে দিচ্ছি-

ড্রাই স্কিনঃ এ ধরনের স্কিনের জন্য বেছে নিতে হবে হাইড্রেটিং ও ময়েশ্চারাইজিং টোনার। এমন টোনারে পেপটাইড, গ্লাইকোলিপিড, রোজ হিপস সিড অয়েল অথবা জোজোবা অয়েল আছে কিনা দেখে কিনুন।

অয়েলি স্কিনঃ এমন স্কিনের জন্য অয়েল ফ্রি উপাদান যেমন- সোডিয়াম হায়ালুরোনেট, সোডিয়াম পিসিএ এবং এএইচএ উপাদানযুক্ত টোনার বেছে নিন।

কম্বিনেশন স্কিনঃ এমন স্কিনের জন্য বছরের দুই সময়ে দুই ধরনের টোনার ইউজ করা বেটার। গরমকালে অয়েল ফ্রি রিফ্রেশিং টোনার, শীতকালে হাইড্রেটিং টোনার বেছে নিতে হবে। তবে এখন এমন অনেক টোনার আছে যেগুলো সব ধরনের স্কিনে স্যুট করে। কম্বিনেশন স্কিনের জন্য এই টোনারগুলোও চুজ করতে পারেন।

সেনসিটিভ স্কিনঃ এ ধরনের স্কিনে ব্যবহার করতে হবে অ্যালকোহল ও অ্যাসিড ফ্রি টোনার। কেনার আগে দেখে নিবেন এগুলোতে বিটা গ্লুকান, হোয়াইট টি এক্সট্র্যাক্ট, গ্লিসারিন আছে কিনা।

হেলদি ও গ্লোয়ি স্কিন পাওয়ার জন্য টোনার

সিরাম অ্যাপ্লাই

বয়স বাড়ার সাথে সাথে ত্বকের কোলাজেন প্রোডাকশন কমতে থাকে। যার কারণে ত্বকে এজিং সাইনস দেখা যায় এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বক সুরক্ষা পায় না। এতে দিন দিন স্কিন ডাল হয়ে যায়। তাই মর্নিং স্কিনকেয়ার রুটিনে ইনক্লুড করুন সিরাম। যে ধরনের সিরাম মর্নিং স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যাড করতে পারেন-

ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি একটি পাওয়ারফুল অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি ইউভি রে ও পল্যুশন থেকে স্কিনকে সুরক্ষা দেয়। এটি স্কিন ব্রাইট করতে, স্কিন টোন ইভেন করতে এবং কোলাজেন বুস্ট আপ করতে বেশ হেল্পফুল।

নিয়াসিনামাইডঃ নিয়াসিনামাইড ভিটামিন বি৩ এর একটি ফর্ম। ফাইন লাইনস, রিংকেলস ও হাইপারপিগমেন্টেশন কমাতে এটি খুবই হেল্পফুল। স্কিন ব্যারিয়ার স্ট্রেন্থ করতে এবং অয়েল প্রোডাকশন রেগুলেট করতে হেল্প করে নিয়াসিনামাইড।

পেপটাইডঃ পেপটাইডস হচ্ছে অ্যামাইনো অ্যাসিডের চেইন, যা কোলাজেন প্রোডাকশন স্টিমুলেট করে, স্কিন টাইট করে।

হায়ালুরোনিক অ্যাসিডঃ এটি ন্যাচারাল সাবস্টেন্স যা স্কিন হাইড্রেট রাখতে এবং প্লাম্পি করে তুলতে হেল্প করে। সেই সাথে স্কিন রাখে রিফ্রেশড ও রেডিয়েন্ট। সকালে এটি ইউজ করলে স্কিনের জন্য ভালো, কারণ ওভারনাইট স্কিনের ন্যাচারাল ওয়াটার লসের কারণে যে ডিহাইড্রেশন হয় সেটা ফিলআপ করতে হেল্প করে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড।

সিরাম অ্যাপ্লাই

এবার বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়ই একেকটি ইনগ্রেডিয়েন্টযুক্ত সিরাম স্কিনের একেকটি বেনিফিট পেতে হেল্প করে। আপনি কোন বেনিফিট চাচ্ছেন তা বুঝে মর্নিং স্কিনকেয়ার রুটিনে তাহলে সেই সিরামটি অ্যাড করে ফেলুন। তবে সিরাম যেটাই ইউজ করেন না কেন, সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা মাস্ট।

ময়েশ্চারাইজিং

বয়স যত বাড়তে থাকে তত ন্যাচারাল অয়েল কম প্রোডিউস হয়, অ্যান্টি এজিং হরমোন ইস্ট্রোজেনও কমতে থাকে। যার কারণে স্কিন ড্রাই হতে থাকে। তাই ময়েশ্চারাইজার একদমই স্কিপ করা যাবে না। ইন্টারনাল হাইড্রেশনের জন্য সিরাম অবশ্যই জরুরি, তবে বাহির থেকেও ত্বকের সুরক্ষার জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার স্কিনকে সারাদিনের শুষ্কতা থেকে ত্বককে সুরক্ষা দিবে।

সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই

হেলদি ও গ্লোয়ি স্কিন পেতে চাইলে এজিং সাইনস প্রিভেন্ট করা জরুরি। আর এজন্য মর্নিং স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যাড করতে হবে সানস্ক্রিন। সূর্যের ইউ ভি রে’র কারণে সেল ড্যামেজ হয়ে যায় এবং দেখা দেয় প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস। সেই সাথে স্কিন ক্যান্সার হওয়ার পসিবিলিটিও বাড়ে। তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা মাস্ট। চেষ্টা করবেন SPF 30 বা তার চেয়ে বেশি SPF যুক্ত সানস্ক্রিন ইউজ করতে। তবে আপনি যত বেশি SPF যুক্ত সানস্ক্রিনই ব্যবহার করুন না কেন ২/৩ ঘন্টা পরপর অবশ্যই সেটা রিঅ্যাপ্লাই করতে হবে।

সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই

হেলদি খাবার খাওয়া

সকালে ঘুম থেকে উঠে যতই স্কিনকেয়ার করুন না কেন, যদি খাবারটা হেলদি না হয়, তাহলে আল্টিমেটলি স্কিনের কোনো বেনিফিটই হবে না। হেলদি ও গ্লোয়ি স্কিন পাওয়ার জন্য সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। গরম পানি শরীরের ভেতরের টক্সিন দূর করতে এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টে পূর্ণ লেবু ও মধু স্কিনে গ্লো আনতে হেল্প করবে।

সকালে খাদ্যতালিকায় চেষ্টা করুন একটি ডিম রাখতে। ডিমে বায়োটিন আছে যেটিকে বলা হয় ‘বিউটি ভিটামিন’। এই ভিটামিন স্কিনে নতুন টিস্যু ডেভেলপমেন্টে এবং এজিং প্রসেস ডিলে করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। খাবারের পাশাপাশি নিয়মিত পানি পান করা খুব জরুরি। শরীর যদি হাইড্রেটেড থাকে তাহলে ডাইজেস্টিভ সিস্টেমও ঠিক থাকে, যা অ্যামেজিং স্কিন পাওয়ার অন্যতম একটি উপায়।

ফেইস ম্যাসাজ

প্রতিদিন সকালে হাতের আঙুল দিয়ে ২ মিনিট সার্কুলার মোশনে ফেইস ম্যাসাজ করুন। এতে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়বে এবং স্কিনে আসবে হেলদি গ্লো।

গ্রিন টি ব্যাগের ব্যবহার

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকেরই আই পাফিনেস দেখা যায় অর্থাৎ চোখ ফোলা লাগে। এই ফোলাভাব কমাতে গ্রিন টি ব্যাগ ভিজিয়ে ১০ মিনিট ফ্রিজে রেখে দিন। এবার বের করে চোখের উপর রেখে দিন কয়েক মিনিট। স্ট্রেস রিলিফ করতে এবং আই পাফিনেস কমাতে এই পদ্ধতিটি বেশ কার্যকর।

 

হেলদি ও গ্লোয়ি স্কিন পাওয়ার জন্য মর্নিং স্কিনকেয়ার রুটিন কেমন হওয়া উচিত তা তো জানা হলো। এবার রাতের সাথে সাথে সকালে ত্বকের যত্নকেও গুরুত্ব দিতে ভুলবেন না যেন! সেই সাথে হেলথ ও ফিটনেসের দিকেও নজর রাখা জরুরি। অথেনটিক সব স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপ প্রোডাক্টস পেয়ে যাবেন সাজগোজে। সাজগোজের কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার এ অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।

ছবিঃ সাজগোজ

9 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort