অয়েলি স্কিনে একনে হওয়াটা তো কমন বিষয় আমাদের কাছে। কিন্তু ডিহাইড্রেটেড স্কিনেও একনের সমস্যা হয়ে থাকে, তাই না? অনেকেরই স্কিন ডিহাইড্রেটেড অ্যান্ড একনে প্রন হলেও প্রোপার যত্ন সম্পর্কে তাদের ভালোভাবে জানা নেই। আর এ নিয়ে কনফিউশনেরও শেষ নেই। যার ফলে উল্টোপাল্টা স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করে স্কিনের অবস্থা আরও খারাপ করে ফেলেন অনেকেই। এছাড়া মেকআপ করলেও স্কিন দেখতে ভালো লাগে না, বেইজটা স্মুথ হয় না। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো কীভাবে ডিহাইড্রেটেড একনে প্রন স্কিনের যত্ন নেওয়া যায়! তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই।
ডিহাইড্রেটেড একনে প্রন স্কিনের বৈশিষ্ট্য
ডিহাইড্রেটেড কোনো স্কিন টাইপ না! স্কিনের একটা কন্ডিশন। প্রথমেই প্রশ্ন আসতে পারে যে, ডিহাইড্রেটেড একনে প্রন স্কিন আসলে কী! বা কীভাবে বুঝবো যে আমার স্কিন ডিহাইড্রেটেড ও একনে প্রন?? একদম ঠিক! প্রথমেই এটা বুঝে নিতে হবে। এই ধরনের স্কিন বেসিক্যালি দেখতে ড্রাই এবং ফ্লেকি টাইপের হয়। এর ফলে স্কিনের টেক্সচার স্মুথ থাকে না, প্রাণহীন মনে হয় এবং পাশাপাশি একনের প্রবলেমও দেখা যায়। এই ধরনের স্কিনে ঠিকমতো টেককেয়ার না করলে স্কিন কন্ডিশন দিন দিন খারাপই হতে থাকে। তাই স্কিন কেয়ারে নজর দেওয়াটা খুবই জরুরি।
স্কিন একইসাথে ডিহাইড্রেটেড এবং একনে প্রন কেন হয়?
অবশ্যই কিছু কারণ তো রয়েছেই স্কিন একইসাথে ডিহাইড্রেটেড এবং একনে প্রন হওয়ার পেছনে। কিছু কমন কারণ আছে, চলুন জেনে নেই এখনই-
১. স্কিনে ড্রাই সোপ, হার্শ স্ক্রাব, ক্লেনজিং ব্রাশ বা হার্শ ব্রিসেলসযুক্ত মেকআপ ব্রাশ ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে স্কিন রুক্ষ ও ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়, সাথে একনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
২. অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় স্পেসিফিক কোনো টোনার স্কিনে স্যুট করে না। এছাড়া অ্যালকোহলযুক্ত প্রোডাক্ট বা কিছু স্কিন ইরিটেটিং ইনগ্রেডিয়েন্টস যেমন- menthol, citruses, eucalyptus ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে স্কিন ডিহাইড্রেটেড হতে পারে।
৩. ফ্রেগ্রেন্স অয়েল এবং এমন কিছু প্রোডাক্ট যাতে সিনথেটিক ফ্রেগ্রেন্স আছে। এই ধরনের প্রোডাক্ট স্কিনকে ডিহাইড্রেটেড একনে প্রন করে দিতে পারে।
৪. স্কিনে রেগুলার সান ড্যামেজ হতে থাকলে সেটাও এই ধরনের স্কিন কন্ডিশনের একটা কারণ। যারা দিনের বেলা সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলে যান, তাদের এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
এই ধরনের স্কিনের যত্ন নেওয়ার উপায়
কারণগুলো তো জেনে নিলাম, এবার চলুন কীভাবে এই ধরনের স্কিনের যত্ন নেওয়া যায়, সেই বিষয়ে একটু ধারণা নেই।
১. স্কিনের যত্নের কথা বললে প্রথমেই আসে স্কিন ক্লেনজিং এর নাম। ক্লেনজার হিসেবে বেছে নিন লাইট ওয়েট এবং জেন্টল ফেইস ওয়াশ, যেটা আপনার পোরগুলোকে ক্লগ করবে না এবং ত্বককে অতিরিক্ত ড্রাই করে দিবে না।
২. সিরাম এবং ময়েশ্চারাইজার হিসেবে আপনাকে বেছে নিতে হবে ফ্লুইড টেক্সচারের প্রোডাক্ট এবং যেটাতে স্কিন ইম্প্রুভিং ইনগ্রেডিয়েন্টস এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। এছাড়াও দিনের বেলা সানস্ক্রিন ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৩. স্কিনে অনেক বেশি ব্রণ হলে বা একনে প্রন স্কিনের জন্য salicylic acid (BHA) এবং benzoyl peroxide বেশ ভালো কাজ করে। তাই salicylic acid (BHA) এবং benzoyl peroxide সমৃদ্ধ প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করলে স্কিন আরও ড্রাই ও ডিহাইড্রেটেড হয়ে যাওয়ার চান্স থাকে, কেননা এগুলো সিবাম প্রোডাকশন নিয়ন্ত্রণ করে। তাই একটু সচেতন থাকতে হবে। আর স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখতে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত প্রোডাক্ট খুবই কার্যকরী। কিন্তু সেইম টাইমে স্কিনে কেয়ারে দুই ধরনের অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট রাখা যাবে না। তাই অল্টার করে ইউজ করতে পারেন।
স্পেশাল কেয়ার
সপ্তাহে একদিন স্কিন ক্যাফে একনে কেয়ার মাস্কের সাথে টকদই, অ্যালোভেরা জেল ও গোলাপ জল মিক্স করে ফেইসে অ্যাপ্লাই করতে পারেন। এতে ব্রণের সমস্যা কমে আসবে, সেই সাথে স্কিন কন্ডিশন ইম্প্রুভ হবে। অ্যালোভেরা জেল ডিহাইড্রেটেড স্কিনের যত্নে খুবই ভালো কাজ করে, আর গোলাপ জল স্কিনকে ফ্রেশ রাখে। তাই এই প্যাকটি একনে প্রন ও ডিহাইড্রেটেড স্কিনের জন্য দারুণ কার্যকর।
স্কিনে ইনস্ট্যান্ট গ্লোয়িং ও হাইড্রেটেড লুক আনতে সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করতে পারেন শিট মাস্ক। একনে প্রন স্কিনের জন্য গ্রিন টি, অ্যালোভেরা, টি ট্রি, শসা এগুলো খুবই ভালো কাজ করে, এটা আমরা সবাই জানি। তাই এই ধরনের ত্বকের যত্নে শিট মাস্ক সিলেকশনের সময় উপাদানের লিস্ট দেখে নিতে পারেন।
আশা করছি, আপনাদের একটু হলেও ধারণা দিতে পেরেছি যে কীভাবে এই ধরনের স্কিনকে হেলদি রাখা যায়। ত্বকের যত্ন নেওয়ার সাথে সাথে প্রচুর পরিমাণে লিকুইড ফুড খাবেন, তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলবেন, হেলদি লাইফ স্টাইল মেনটেইন করবেন। আরও যদি কিছু জানার থাকে, সাজগোজের ইনবক্সে নক করতে পারেন বা ফেইসবুক পেইজে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে আমার সবসময়ই ভরসা শপ.সাজগোজ.কম। অনলাইনে প্রোডাক্ট পারচেজ করার সুযোগ তো আছেই, এছাড়া সাসাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি। তাহলে আজ এই পর্যন্তই। নিজের যত্ন নিন, ভালো থাকুন।
ছবি- সাজগোজ