ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ক্লেনজার সিলেক্ট করবেন কীভাবে?

ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ক্লেনজার সিলেক্ট করবেন কীভাবে?

2-2

এখন আমরা সবাই নিজের যত্ন নিয়ে অনেক বেশি সচেতন, বিশেষ করে স্কিনকেয়ারের ক্ষেত্রে। আর স্কিনকেয়ারের প্রথম ধাপটি হলো ক্লেনজিং। এখন এমন হয়তো কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাবে না যে ক্লেনজার বা ফেইস ওয়াশের নাম শোনেনি! স্কিনকেয়ার স্টেপ ফলো করুক বা না করুক, ত্বক পরিষ্কার রাখতে কিছু তো একটা ব্যবহার করা হয়ই, তাই না? ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ক্লেনজার সিলেক্ট করতে অনেকেই কনফিউজড থাকেন। যখন আপনার স্কিন টাইপ অনুযায়ী আপনি স্যুইটেবল ক্লেনজার চুজ করবেন, তখনই আপনার স্কিন হাইয়েস্ট বেনিফিট পাবে। চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।

স্কিনকেয়ারের প্রথম ধাপ ক্লেনজিং

অনেকে ভাবেন যে ফেইস ক্লিন করতে যেকোনো একটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করলেই তো হয়! কিন্তু না, অবশ্যই স্কিন টাইপ ও কনসার্ন বুঝে সে অনুযায়ী ক্লেনজার বাছাই করতে হবে। তা না হলে ত্বকের অন্যান্য সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। যেমন আপনি যদি ড্রাই স্কিনে এমন কোনো ফেইস ওয়াশ ইউজ করেন যেটি অয়েল প্রোডাকশন কন্ট্রোল করে অর্থাৎ অয়েলি স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড, তাহলে আপনার স্কিন কিন্তু ওভার ড্রাই হয়ে যাবে। সেই সাথে পিলিং, ইচিনেস ও অন্যান্য স্কিন কনসার্ন ট্রিগার হবে! তাই নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ক্লেনজার বেছে নেওয়া উচিত।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ক্লেনজার

ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেইস ওয়াশ

আজ জানাবো স্কিন টাইপ অনুযায়ী ডিফারেন্ট টাইপসের ক্লেনজার নিয়ে যা আপনাকে হেল্প করবে রাইট প্রোডাক্টটি চুজ করতে। চলুন এখন জেনে নেই ওয়াটার বেইজড ক্লেনজার সম্পর্কে।

১. অল স্কিন টাইপসের জন্য

যদি কোনো ক্লেনজারের প্যাকেজিংয়ে লেখা থাকে ‘suitable for all skin types’, মানে এই ধরনের ক্লেনজারগুলো যেকোনো ধরনের ত্বকে ব্যবহার করা যায়। অতিরিক্ত ড্রাই, অতিরিক্ত অয়েলি, একনে ব্রেকআউটস, ড্যামেজড ব্যারিয়ার, ডিহাইড্রেশন, সেনিসিটিভিটি- এই ধরনের স্কিন কনসার্ন যদি না থেকে থাকে, তাহলে এই ক্লেনজারগুলো আপনি চুজ করতে পারেন।

এই ক্লেনজারগুলো ফোমিং অথবা জেল বেইজড হতে পারে, আবার ক্রিম টাইপ ফর্মুলাও হতে পারে। ক্লেনজারগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে স্কিনের ন্যাচারাল অয়েল পুরোপুরি রিমুভ না হয়ে যায়, আবার এগুলো খুব বেশি ময়েশ্চারাইজিংও হয় না। কিছু অয়েল কন্ট্রোলিং ইনগ্রেডিয়েন্ট যেমন থাকে, আবার কিছু হাইড্রেটিং ইনগ্রেডিয়েন্টও থাকে, অর্থাৎ নরমাল স্কিন টাইপে বেশ ভালো কাজ করবে এটি। টিনেজে স্কিনে তেমন কোনো সিরিয়াস স্কিন কনসার্ন থাকে না, তাই তাদের জন্যও এই ধরনের ক্লেনজার বেশ কার্যকরী।

২. অয়েলি ও কম্বিনেশন স্কিনের জন্য

ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ক্লেনজার

যাদের ত্বকে অতিরিক্ত পরিমাণে সেবাম উৎপন্ন হয় অর্থাৎ স্কিন টাইপ অয়েলি, তাদের চুজ করতে হবে এমন ক্লেনজার যেটি পোরস ডিপলি ক্লিন করবে, অয়েল কন্ট্রোল করবে ও একনে প্রিভেন্ট করবে। ফোম বেইজড ক্লেনজার অয়েলি টু কম্বিনেশন স্কিনের জন্য রাইট অপশন, কারণ এগুলো ওয়াটার কনট্যাক্টে রিচ ফোম ক্রিয়েট করে, যা স্কিন থেকে ইমপিওরিটিস ও এক্সেস সেবাম ক্লিন করে ফেলে। এগুলো স্কিনকে লং টাইম ম্যাট ও অয়েল ফ্রি রাখতে হেল্প করে। ক্লে ও জেল বেইজড ক্লেনজারও পাওয়া যায় অয়েলি স্কিনের জন্য।

 

এই ধরনের ত্বকের যত্নে দু’ ধরনের ওয়াটার বেইজড ক্লেনজার ইনক্লুড করুন। একটি স্যালিসাইলিক অ্যাসিডযুক্ত, অন্যটি মাইল্ড ফেইস ওয়াশ। স্যালিসাইলিক অ্যাসিডযুক্ত ক্লেনজার প্রয়োজন অনুযায়ী উইকে ৩/৪ বার ব্যবহার করুন। এতে এক্সেস অয়েলিনেস, একনে, র‍্যাশ এই স্কিন প্রবলেমগুলো প্রিভেন্ট করা পসিবল। বারবার অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট যুক্ত ক্লেনজার ব্যবহার করলে ত্বকের উপরিভাগের লিপিড স্তর ড্যামেজ হতে পারে। তাই দু’ ধরনের ওয়াটার বেইজড ক্লেনজার হাতের কাছে রাখুন। রেগুলার বেসিসে মাইল্ড ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করুন।

৩. ড্রাই স্কিনের জন্য

ড্রাই স্কিনের জন্য ক্লেনজার

শুষ্ক ত্বকে সেবাম উৎপন্ন হয় খুবই কম, যার ফলে এই ধরনের ত্বকে একটু হার্শ ক্লেনজার ব্যবহার করলে খুব সহজেই ত্বক আরও বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। পি এইচ ব্যালেন্সড, সোপ ফ্রি ফর্মুলা, জেল ও ক্রিম বেইজড ফেইস ওয়াশ ড্রাই স্কিনের জন্য উপযুক্ত। ময়েশ্চারাইজিং ইনগ্রেডিয়েন্ট আছে, স্কিনকে ড্রাই না করেই ডার্ট ক্লিন করে, প্যারাবেন নেই- এই ধরনের ফিচার সেই ক্লেনজারে থাকতে হবে। ক্লে বেইজড, সোপ যুক্ত ক্লেনজার এড়িয়ে চলুন যদি আপনার স্কিন টাইপ সুপার ড্রাই হয়।

৪. ডিহাইড্রেটেড স্কিনের জন্য

এ ধরনের ত্বকের জন্য হায়ালুরোনিক অ্যাসিড বেইজড, পি এইচ ব্যালেন্সড, মাইল্ড ক্লেনজার চুজ করুন। হাইড্রেটিং ও নারিশিং এলিমেন্ট সমৃদ্ধ ক্লেনজার আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত। ফোম, ক্রিম, জেল- যেকোনো টাইপসের ফেইস ওয়াশ আপনি বেছে নিতে পারেন, শুধু উপাদান তালিকা দেখে নিবেন আগে।

৫. একনে প্রন স্কিনের জন্য

একনে বা পিম্পলসের সমস্যায় যারা ভুগছেন, অয়েলি স্কিনের মতো তাদেরও উচিত স্কিনকেয়ার রুটিনে দু’ ধরনের ক্লেনজার রাখা। ব্রণের সমস্যা সমাধানে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট যেমন স্যালিসাইলিক অ্যাসিড অথবা বেনজোয়েল পারঅক্সাইডযুক্ত ফেইস ওয়াশ সপ্তাহে ৩/৪ দিন ব্যবহার করুন। বাকি সময়ের জন্য মাইল্ড ফেইস ওয়াশ বা একনে প্রন স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড ফেইস ওয়াশ ইউজ করুন।

একনে প্রন স্কিনের জন্য ক্লেনজার

৬. সেনসিটিভ স্কিনের জন্য

এই ধরনের ত্বকের জন্য প্রথমেই যেটি মনে রাখতে হবে তা হলো আর্টিফিশিয়াল কালার ও প্যারাবেন যুক্ত প্রোডাক্ট এড়িয়ে চলা। মাইল্ড সারফেকট্যান্ট যুক্ত, পি এইচ ব্যালেন্সড ক্লেনজার চুজ করুন যা ত্বককে ইরিটেড করবে না। মেডিকেটেড স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ডে ভরসা রাখতে পারেন। অথবা স্পেশালি সেনসিটিভ স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড জেন্টল ক্লেনজার নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন।

অয়েল বেইজড ক্লেনজার

এতক্ষণ আমরা জানলাম ওয়াটার বেইজড ক্লেনজার সম্পর্কে। এবার জেনে নেই অয়েল বেইজড ক্লেনজার নিয়ে। ক্লেনজিং বাম ও অয়েল ক্লেনজার দিয়ে মেকআপ, সানস্ক্রিন অর্থাৎ অয়েল বেইজড ইমপিওরিটিস রিমুভ করা যায় ইজিলি। তাই দিনশেষে যখন ডাবল ক্লেনজিং করবেন, প্রথমে অয়েল বেইজড ক্লেনজার ব্যবহার করতে হবে। এরপর ওয়াটার বেইজড ক্লেনজার বা ফেইস ওয়াশ দিয়ে ফেইস ক্লিন করবেন। ক্লেনজিং বাম আর অয়েল ক্লেনজারের মেইন ডিফারেন্স হলো টেক্সচারে, কাজ কিন্তু সেইম। ক্লেনজিং বাম বাটারি ও ক্রিমি টাইপের যা স্কিনের সংস্পর্শে আসলে অয়েলে পরিণত হয়। সব ধরনের স্কিন টাইপেই অয়েল বেইজড ক্লেনজার ব্যবহার করা যাবে।

অয়েল ক্লেনজার

মাইসেলার ওয়াটার

এটিও মেকআপ, সানস্ক্রিন রিমুভ করে ঠিক অয়েল ক্লেনজারের মতো। এতে আছে পিওরিফাইড ওয়াটার ও মাইল্ড সারফেকট্যান্ট। তাই আপনার স্কিন টাইপ যদি অয়েলি হয় এবং অয়েল বেইজড ক্লেনজার যদি আপনি ব্যবহার না করতে চান, তাহলে মাইসেলার ওয়াটার হতে পারে অল্টারনেট অপশন। মাইসেলার ওয়াটার অল স্কিন টাইপসেই ব্যবহার করা যায়। ডাবল ক্লেনজিংয়ের প্রথম ধাপে মাইসেলার ওয়াটার ব্যবহার করতে হয়।

তো এই ছিলো ওয়াটার বেইজড ও অয়েল বেইজড ক্লেনজার নিয়ে বেসিক কিছু ইনফরমেশন। আশা করি, ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক ক্লেনজার বেছে নিতে আর কোনো অসুবিধা হবে না। অথেনটিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারবেন সাজগোজ থেকে। সাজগোজের কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।

 

ছবি- সাজগোজ

7 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort