আমাদের মধ্যে অনেকেই নিজের শুষ্ক-রুক্ষ চুল নিয়ে বিরক্তবোধ করি। বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চুল নিয়ে অনেক বিব্রতকর অবস্থায় থাকতে হয়। ভীষণ কষ্টে অনেকে চুল কেটে ছোট করে ফেলার চিন্তা ভাবনা শুরু করে দেই। হয়তো অনেকে কেটেও ফেলি। কিন্তু চুল কেটে ফেললেই কি শুষ্ক রুক্ষ চুল থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব? আজ আপনাদের শুষ্ক রুক্ষ চুলের কোমলতা ফিরে পাওয়ার সহজ একটি সমাধান দেয়া হবে। আজ লেখা হবে কী করলে আপনারা শুষ্ক-রুক্ষ চুলের কোমলতা খুঁজে পাবেন একদম নতুন করে!
চুল রুক্ষ হবার কারণ ও সমাধান
সমাধানে যাওয়ার আগে সমস্যার কারণ জানা জরুরি। মূলত অযত্ন আর বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহারে চুল শুষ্ক হয়ে পড়ে। প্রতিদিন শ্যাম্পু কন্ডিশনার ব্যবহারও ক্ষতির কারণ হতে পারে। রোদে প্রোটেকশন ছাড়া বের হলেও চুলের উপর প্রভাব পড়ে। রোদ ছাড়াও বাইরের ধুলা বালি চুলের ক্ষতি সাধন করে।
এখন আসা যাক সমাধানে। রুক্ষ চুলের জন্য আপনি একটি অয়েল মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। মাত্র দুইটি উপাদানে তৈরি এই মাস্কটি ব্যবহারে আপনি পাবেন আশ্চর্য ফলাফল। আসুন বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক!
প্রয়োজনীয় উপাদান
১) সরিষার তেল- ২ টেবিল চামচ
২) মধু- ২ টেবিল চামচ
মাস্ক বানানোর পদ্ধতি
প্রথমে একটি পরিষ্কার বাটিতে ২ টেবিল চামচ সরিষার তেল নিন। তাতে সরিষার তেলের সমপরিমাণ তার মানে ২ টেবিল চামচ মধু নিন। অথবা আপনার চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী তেল আর মধুর পরিমাণ বাড়িয়ে অথবা কমিয়ে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে এগুলোর অনুপাত সমান রাখুন। তারপর একটি চামচ নিয়ে খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
যেভাবে অ্যাপ্লাই করবেন
এবার ভালোভাবে চুল আঁচড়ে নিন। চুলটা পরিষ্কার হতে হবে। চাইলে এই মাস্কটি ব্যবহার করার দুই দিন আগে চুল শ্যাম্পু করে নিতে পারেন। চুল আঁচড়ানো হলে মেশানো সরিষার তেল আর মধু মাথার স্ক্যাল্পসহ পুরো চুলে লাগান। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর একটি তোয়ালে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে চেপে পানি বের করে নিন। তোয়ালেটি দিয়ে দশ থেকে পনেরো মিনিট মাথা জড়িয়ে রাখুন।
সবশেষে যেকোনো মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে নিন। তারপর কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। কেননা কন্ডিশনিং এই ধরনের চুলের জন্য খুবই জরুরি একটি ধাপ। আপনি চাইলে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে মধু কিংবা চায়ের লিকার ব্যবহার করতে পারেন। এই মাস্কটি চাইলে নিয়মিত মাসে দুই বার এভাবে লাগাতে পারেন।
ফলাফল
চুল শুকানোর পর ফলাফল আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। চুল আগের তুলনায় অনেক বেশি কোমল হবে। এই অয়েল মাস্কটি প্রথমবার ব্যবহারেই চুলের রুক্ষ আর শুষ্ক ভাবটা অনেকটাই কেটে যাবে এবং আশানুরূপ ফল পাবেন। তবে সরিষার তেল অথবা মধু, এর যে কোনো একটিতেও যদি আপনার অ্যালার্জি থাকে তবে এই মাস্কটি আপনার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে।
শেষ করার আগে কিছু টিপস দিচ্ছি- বাইরে যাওয়ার সময় মাথা স্কার্ফ অথবা ওড়না দিয়ে যতটা পারবেন ঢেকে নিবেন, যাতে করে আপনার মূল্যবান চুল রোদ, ধুলোবালি আর দূষণ থেকে রক্ষা পায়। আর সপ্তাহে ২বারের বেশি শ্যাম্পু করা থেকে বিরত থাকুন। প্রতিবার শ্যাম্পু করার আগের দিন রাতে অথবা শ্যম্পু করার অন্ততপক্ষে তিন ঘণ্টা আগে চুলে তেল দিন। আজ এ পর্যন্তই! নিয়মিত চুলের যত্ন নিন!
ছবি- সংগৃহীত: সাটারস্টক