তরমুজের ১০টি গুণ জেনে রক্ষা করুন ত্বক ও স্বাস্থ্য দুটোই

তরমুজের ১০টি গুণ জেনে রক্ষা করুন ত্বক ও স্বাস্থ্য দুটোই

তরমুজ

তরমুজের কথা তো সবারই জানা। সুস্বাদু এই ফলটি সবার প্রিয়। আর অসহ্য গরমের মধ্যে কয়েক টুকরো রসালো তরমুজ এনে দেয় অসাধারণ প্রশান্তি। এই মজাদার তরমুজের রয়েছে অনেক উপকারিতা। তরমুজের ১০টি গুণ নিয়ে কথা বলবো। তরমুজে আছে প্রচুর ভিটামিন এ ও সি এবং সিট্রুলিন (Citrulline) সহ বিভিন্ন  স্বাস্থ্যকর উপাদান। এই সব উপাদান মানুষের শরীরে গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা পালন করে থাকে। তাহলে চলুন আজ আমরা ত্বক ও স্বাস্থ্য রক্ষার্থে তরমুজের ১০টি গুণ সম্পর্কে জেনে নেই।

ত্বক ও স্বাস্থ্য রক্ষার্থে তরমুজের ১০টি গুণ

১. মেছতা

ত্বকে মেছতা হলে সেটা থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত তরমুজ খাওয়ার অভ্যাস করুন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ যা শরীরের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। আর তাই গরমে রেগ্যুলার তরমুজ খাওয়া হলে আপনার ত্বক হবে আরো উজ্জ্বল ও  হারানো লাবণ্য ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেক।

২. রোদে-পোড়া ভাব

তরমুজ ত্বকের রোদে-পোড়া ও কালচে দাগ দূর করতে সাহায্য করে। কয়েকটি হ্যাক ফলো করলে এটা সম্ভব-

  • তরমুজের রসকে বরফ করে সেটা স্কিনে আলতো করে ঘষতে পারেন।
  • তরমুজের রসে কটন প্যাড ভিজিয়ে ত্বকের রোদে পোড়া জায়গায় দিয়ে ১০ মিঃ রাখুন। শুকিয়ে গেলে উঠিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। রেগ্যুলার এটা করতে পারেন।
  • এছাড়া পাতলা টাওয়েল বা রুমাল তরমুজের রসে ভিজিয়ে মুখের উপর দিয়ে ১৫ মিঃ রেখে তারপর মুখ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • তরমুজের রসের সাথে শসার রস মিশিয়ে রোদে-পোড়া ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিঃ রেখে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

৩. এক্সফলিয়েশন

সেনসিটিভ স্কিনের এক্সফলিয়েশন-এর জন্যও তরমুজ ব্যবহৃত হয় কিন্তু! এর পিউরিতে নরম ফাইবার থাকে যা ডেড স্কিন দূর করে স্কিন পরিষ্কার করে এবং কালচে ভাব কমিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। তবে জেনে নিন দুটো প্যাক-এর কথা-

  • তরমুজের পিউরি-এর সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে মিক্সচারটি স্মুদলি স্কিনে রাব করে ১৫ মিঃ রেখে তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • তরমুজের পিউরি নিয়ে তাতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ও সামান্য চিনি মিশিয়ে মিশ্রণটিকে স্কিনে আলতো করে রাব করে ১৫ মিঃ রেখে তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

৪. হার্ট-এর যত্নে

বিজ্ঞানীদের জরিপ অনুযায়ী, তরমুজে রয়েছে একটি বিশেষ উপাদান যা হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও, তরমুজে ভিটামিন এ-এর পাশাপাশি ভিটামিন সি, পটাশিয়ামকেরোটিন আমাদের দেহের কোলেস্টেরল কমিয়ে তুলতে সাহায্য করে, যার কারণে আমাদের হৃদপিন্ড সবসময় যে কোন রকমের বিপদ-আপদ থেকে  সুরক্ষিত থাকে।

৫. চোখের যত্নে

তরমুজে আছে অধিক পরিমাণে ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের চোখের রেটিনার সুরক্ষিত রাখতে অধিক কার্যকর এবং এই উপাদানগুলো চোখের ছানি পড়তে বাধা সৃষ্টি করে। তরমুজের ভিটামিন এ আমাদের চোখের জ্যোতি বাড়ায়।

৬. কিডনির যত্নে

তরমুজের ১০টি গুণের মধ্যে কিডনির যত্ন একটি - shajgoj.com

তরমুজে আছে অধিক পরিমাণে পানীয় উপাদান যেগুলো কিডনির উপর চাপ কমিয়ে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া কমায়। তরমুজ  কিডনি ও লিভার সুস্থ রাখতে অনেক উপকারী। যারা পানি কম খান তাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা থাকে। আবার যাদের পাথর হয়ে যায় তারা এর ব্যথায় অনেক কষ্ট পান। তারা যদি খাদ্য তালিকায় তরমুজ রাখেন তাহলে ব্যথা থেকে কিছুটা উপকার পাবেন। তবে শুধু তরমুজ না খেয়ে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

৭. হাড়ের যত্নে

তরমুজে আছে লাইকোপিন নামে এক ধরনের লাল উপাদান যাতে আছে অধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম। আর আমরা সবাই জানি ক্যালসিয়াম হাড়কে মজবুত ও সুস্থ রাখে। মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড় দিন দিন দুর্বল হতে থাকে আর তাই তরমুজ নিয়মিত খেলে তা হাড়ের গঠন সুস্থ  ও মজবুত করতে খুবই সহায়ক।

৮. স্বাভাবিক রক্তচাপ

তরমুজে থাকা প্রচুর ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়াম আমাদের দেহের ব্লাড প্রেশার নরমাল রাখে। তাই খাদ্যতালিকায় তাদের নিয়মিত তরমুজ রাখা উচিত যারা রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন।

৯. শরীরের ব্যথা

অনেক মানুষ বাত বা মাংসপেশির ব্যথায় ভোগেন অথবা ব্যায়ামের পর শরীরের ব্যথায় কষ্ট পান। এর থেকে বাঁচতে চাইলে প্রতিবার ব্যায়ামের পর অথবা ব্যায়াম করার কমপক্ষে আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা আগে তরমুজ খেলে এই ব্যথা থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

১০. হাঁপানি প্রতিকার

যাদের অনেক শ্বাস কষ্ট বা হাঁপানির সমস্যা আছে তারা খাদ্যতালিকায় নিয়মিত তরমুজ রেখে হাঁপানি প্রতিকার করতে পারেন। এছাড়া সাধারণ মানুষ, যাদের প্রচুর ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা রয়েছে তারা যদি নিয়মিত তরমুজ খান তাহলে অ্যালার্জি প্রতিরোধ করা সম্ভব। কারণ তরমুজে আছে প্রচুর ভিটামিন সি যা অ্যালার্জি বা হাঁপানি সারিয়ে তুলতে অনেক কার্যকর।

এই তো দেখে নিলেন ত্বক ও স্বাস্থ্য রক্ষায় তরমুজের ১০টি গুণ নিয়ে কথা। তরমুজ কেনার সময় সাবধানতা অবলম্বন করবেন। “নকল হইতে সাবধান”– কথাটা আসলে সবকিছুতেই এঁটে দেয়া উচিত। সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করাটাই সবার আগে প্রয়োজন। কারণ শরীর যদি সুস্থ না থাকে তবে আসলে বাকি সবই কিন্তু বৃথা। তাই ভালো থাকুন সবাই।

 

ছবি- সংগৃহীত: সাটারস্টক

14 I like it
4 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort