চোখে কাজল ছড়িয়ে যাওয়া থেকে বাঁচতে কি করবেন?

চোখে কাজল ছড়িয়ে যাওয়া থেকে বাঁচতে কী করবেন?

kajol

কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি, কালো তারে বলে গায়ের লোক। মেঘলা দিনে দেখেছিলেম মাঠে, কালো মেয়ের কালো হরিণ চোখ।” কাজলকালো চোখ নিয়ে এমন বহু গান, কবিতা, উক্তি আছে আমাদের দেশে। বিভিন্ন কবি, সাহিত্যিকগণ তাদের লেখায় কাজলকালো চোখের বর্ণনা অনেক সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। কাজলকালো শব্দটি উচ্চারণ করলেই আমাদের সামনে ভেসে উঠে কালো বর্ণের নিখুঁত সুন্দর মায়াবী একজোড়া চোখের ছবি। তবে চোখে কাজল ছড়িয়ে যাওয়া কেউ কি চায়? কেউই নয়।

যুগ যুগ ধরে কাজল আমাদের বাঙালি নারীদের সাজসজ্জার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কাজল ছাড়া বাঙালি নারীদের চোখের সাজ পূর্ণই হয় না। সময়ের সাথে সাথে সাজের ধরন বদলালেও টিকে আছে কাজলের ব্যবহার। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ বা ওয়েস্টার্ন আউটফিটসহ সব পোশাকের সাথেই মানিয়ে যায় কাজল। কাজলকালো চোখ একজন নারীকে করে তোলে আরও বেশি মায়াবী আর আকর্ষণীয়।

চোখে কাজল

চোখের কাজল ছড়িয়ে যাওয়ার কারণ 

হালকা সাজ হোক অথবা গর্জিয়াস, আমাদের দেশের মেয়েরা কাজল দিয়ে চোখ সাজাতে পছন্দ করেন। কাজল দেয়া অপরূপ চোখ নজর কাড়ে সবসময়। আর সেই সাথে একজন নারীর সৌন্দর্য যেন ফুটে উঠে দ্বিগুণভাবে। কিন্তু এই কাজল দেয়ার পর একটি কমন সমস্যা হলো কাজল ছড়িয়ে যাওয়া। কাজল নিয়ে এই একই অভিযোগ কমবেশি সব মেয়ের। এত সুন্দর করে কাজল দিয়ে চোখ সাজানোর পর যদি চোখে কাজল ছড়িয়ে যাওয়া শুরু হয় তাহলে পুরো সাজটাই নষ্ট হয়ে যায়।

কাজল ছড়িয়ে গেলে তা চোখের চারপাশে পুরো কালো করে ফেলে, সেই সাথে আপনার পুরো ফেইসে একটা ডার্ক ইফেক্ট এনে দেয়। চোখে কাজল ছড়িয়ে যাওয়ার সমস্যা বেশি হয় গরমের দিনে। কারণ এ সময় চোখের নীচটা ঘামে, সেই সাথে পুরো মুখে তেল ওঠে। যার জন্য কাজল লেপ্টে যায়। এছাড়া যাদের চোখের পাতা তৈলাক্ত কিংবা যাদের চোখে কাজল দেয়ার সময় বেশি পলক পড়তে থাকে, তাদের চোখে কাজল বেশি ছড়ায়।

চোখে কাজল ছড়িয়ে যাওয়া থেকে বাঁচতে কী করবেন ?

অল্প কয়েকটি টিপস মেনেই কাজল ছড়িয়ে যাওয়ার সমস্যা এড়ানো যায়। চলুন জেনে নেই টিপসগুলো-

১) কাজল লাগানোর আগে চোখ ভালো করে  ঠান্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন।

২) কাজল ব্যবহারের পূর্বে চোখের নিচে ও আশেপাশে ভালো করে লুজ বা সাধারণ পাউডার লাগিয়ে নিন। এগুলো চোখের নিচের তেল শুষে নিবে এবং কাজল ছড়িয়ে যাওয়া বন্ধ করবে।

চোখের কাজল ছড়ানো এড়াতে লুজ পাউডার ইউজ করুন

৩) যদি কাজল একটু লিকুইড বা তৈলাক্ত ধরনের হয় তবে কাজল দেয়ার পর চিকন আইশ্যাডো ব্রাশ দিয়ে ম্যাট ফিনিশের কালো আইশ্যাডো দিয়ে নিন। এতে কাজলের তৈলাক্ত ভাব চলে গিয়ে কাজলটা দীর্ঘস্থায়ী হবে। সেইসাথে চোখে একটা স্মোকি ভাব এসে চোখকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

৪) কাজল ছড়িয়ে যাওয়া এড়াতে দিনের বেলা হালকা করে কাজল দিন। আর রাতের বেলায় গাঢ় করে কাজল লাগান।

৫) চোখের ভেতরের দিকে কাজল দিলে ছড়িয়ে যায় বেশি। কাজেই কাজল দেয়ার সময় চোখের কোণায় হালকা করে কাজল দিয়ে মাঝখানের অংশে গাঢ় করে কাজল দিন। চোখের কোণে গাঢ় করে কাজল না দিলে কাজলটা আর ছড়াবে না।

৬) চোখের বাইরে কাজল লাগানোর পর এর উপর দিয়ে পাতলা করে আইলাইনার লাগিয়ে নিন। এতে কাজল ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকবে না। আরো ভালো ফল পেতে শুকিয়ে যাওয়ার পর চোখে মাশকারা ব্যবহার করুন।

৭) চোখের নিচের পাতায় কাজল লাগানোর সময় চোখের ওয়াটার লাইনের বাইরে থেকে কাজল লাগানো শুরু করে তারপর ভেতরের দিকে কাজল লাগান। তা না হলে চোখের পানি বের হয়ে কাজলের কালির সাথে মিশে কাজল ছড়িয়ে যাবে এবং চোখের আশপাশটা কালো হয়ে যাবে।

৮) ভালো ব্র্যান্ডের কাজল ব্যবহার করুন। ওয়াটার প্রুফ দেখে কাজল কিনুন। এই কাজল দীর্ঘ সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়। কাজল কেনার আগে এর গায়ে লাগানো লেবেল লক্ষ্য করুন। “Smudge Proof” অথবা “Long-lasting” লেখা দেখে কিনুন। এ ধরনের কাজল দীর্ঘসময় চোখে থাকার পাশাপাশি ছড়াবেও না।

নিরভানা কালার

৯) যদি সম্ভব হয় কাজল লাগানোর পূর্বে প্রাইমার ব্যবহার করুন। চোখের পাতা সহ আশেপাশের স্থানে প্রাইমার লাগিয়ে তারপর কাজল লাগিয়ে নিন। প্রাইমার মূলত মেকআপের একটা বেইজ তৈরি করে চোখের পাতা মসৃণ রাখে। এতে চোখে কাজল ভালোভাবে বসবে এবং কাজল ছড়িয়েও যাবে না।

১০) চোখের ওয়াটার লাইনে কাজল, আইলাইনার ব্যবহার না করাই ভালো। এতে অনেকের চোখের ভেতরে জ্বালাপোড়াসহ বিভিন্ন ইনফেকশন সৃষ্টি করতে পারে। রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই কাজল পরিষ্কার করে ঘুমাতে যাবেন।

এই টিপসগুলো ফলো করলে চোখে কাজল ছড়িয়ে যাওয়ার সমস্যা খুব সহজেই এড়ানো যায়। সেই সাথে চোখও দেখাবে আকর্ষণীয় ও সুন্দর। চোখের ব্যাপারে কোনো কম্প্রোমাইজ করা উচিত নয়। তাই ভালো মানের কাজল ব্যবহার করুন। চোখের সাজ এবং স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপের অথেনটিক প্রোডাক্ট পেয়ে যাবেন সাজগোজে। অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের চারটি ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।

 

ছবি- সাজগোজ

19 I like it
2 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort