টাইট ফিটিং ব্রা ও পেন্টি রেগুলার পরলে কী কী ক্ষতি হয়?

টাইট ফিটিং ব্রা ও পেন্টি রেগুলার পরলে কী কী ক্ষতি হয়?

5

বাইরে বের হওয়ার সময় দেখতে সুন্দর লাগবে এমন আউটফিটটাই আমরা চুজ করি। কিন্তু আউটফিট পরার আগে যে ইনার ও আন্ডার ওয়্যার আমাদের বডি শেইপকে আরও অ্যাট্রাক্টিভ করে তুলতে হেল্প করে সেটা বাছাই করার ব্যাপারে আমরা কতটা সচেতন থাকি? অনেকেই সঠিক মাপ না জানার কারণে অতিরিক্ত টাইট ব্রা ও পেন্টি পরেন। ভাবেন, বডিতে যেহেতু ফিটিং হয়ে আছে, তাহলে বডি শেইপেও কোনো সমস্যা হবে না। অথচ এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। টাইট ফিটিং ব্রা ও পেন্টি শুধু বডি শেইপ নষ্টই করে দিচ্ছে না, সাথে নানাভাবে শারীরিক ক্ষতিও করছে। আজকের আর্টিকেলে এ বিষয়েই বিস্তারিত জানাবো-

টাইট ফিটিং ব্রা পরলে কী কী ক্ষতি হয়?

স্কিনে ইরিটেশন ও ইচিং হয়

কাজ করতে গিয়ে কিছুক্ষণ পর পর ব্রা’র স্ট্র্যাপস ও ব্যান্ড অ্যাডজাস্ট করতে হচ্ছে? এটা হতে পারে যদি আপনার ব্রা বেশি টাইট হয়। আর এই কারণে ব্রেস্টের আশেপাশে, স্ট্র্যাপস যেখানে টাইট হয়ে লেগে থাকে সেই এরিয়ায় ইচিং প্রবলেম হওয়ার সমস্যা বেড়ে যায়। অনেকের র‍্যাশ ওঠে, ইচিং এর এরিয়াটুকু লাল হয়ে যায়। তাই যে আউটফিটই পরা হোক না কেন, সব সময় অস্বস্তি লাগতে থাকে।

টাইট ফিটিং ব্রা হলে ইচিং প্রবলেম বেড়ে যায়

ব্রেস্টে পেইন হয়

ব্রা যদি বেশি টাইট হয় তাহলে ব্রেস্ট টিস্যু ও স্কিনে চাপ পড়ে। যার কারণে ব্রেস্টে ব্যথা হতে পারে। এমনকি ব্রেস্ট এরিয়ার টিস্যুও ড্যামেজ হতে পারে। পিরিয়ডের সময় ব্রেস্ট সাইজ কিছুটা বৃদ্ধি পায়। ব্রা টাইট হলে এ সময় বেশি ব্যথা হতে পারে। এছাড়া ব্রা’র কাপ সাইজ ছোট হওয়ার কারণে ব্রেস্টের কিছুটা অংশ বাইরের দিকে থাকে। এতে ব্রেস্টের শেইপ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সঠিক মাপের ব্রা চুজ করা খুবই ইম্পরট্যান্ট।

বডি মার্কস ভিজিবল হয় 

টাইট ব্রা’র কারণে বডিতে আনওয়ান্টেড মার্ক তৈরি হয়। এগুলো সাধারণত ব্রেস্ট লাইনে, শোল্ডারে ও ব্যাকে হয়। সময়ের সাথে সাথে দাগগুলো ডার্ক হতে থাকে, তখন সেগুলো রিমুভ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই টাইট ব্রা ইউজ করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

SHOP AT SHAJGOJ

    আনকমফোর্টেবল লাগে

    ব্রা যদি সঠিক মাপের না হয়, অর্থাৎ বেশি টাইট হয়, তাহলে বেশ আনকমফোর্টেবল লাগে। কোনো পোশাক পরলেই ভালো লাগে না। শোল্ডারে ব্রা স্ট্র্যাপসের কারণে ব্যথা হয়, যার কারণে বার বার আপনি হাত দিয়ে স্ট্র্যাপসের জায়গা বদলাতে থাকেন। কিন্তু কোনোভাবেই কমফোর্ট ফিল হয় না। তাই টাইট ফিটিং ব্রা না পরে বেছে নিন সঠিক মাপের ব্রা।

    নেক ও শোল্ডারে পেইন হয়

    যদি ব্রা’র স্ট্র্যাপস ছোট ও চিকন হয়, চেস্ট ব্যান্ড অনেক টাইট থাকে এবং কাপ সাইজ ঠিক না থাকে, তখনই ব্রা টাইট হয়। আর এ কারণে শোল্ডারে চাপ পড়তে থাকে। ধীরে ধীরে শুরু হয় ব্যথা। আর এই ব্যথা তখন ছড়িয়ে যায় নেক, শোল্ডার, আপার ব্যাক ও আর্মেও। এছাড়া টাইট হওয়ার কারণে এই বডি পার্টগুলোতে ব্লাড সার্কুলেশনও ভালোভাবে হয় না।

    শোল্ডারে পেইন

    টাইট ফিটিং পেন্টি পরার ক্ষতিকর দিক 

    এয়ার সার্কুলেশন রেস্ট্রিক্টেড করে দেয়

    ফিমেল বডির রিপ্রোডাক্টিভ অরগান কভার করে আন্ডারওয়্যার, এটা তো আমরা জানি। প্রোপার হাইজিন মেনটেইন করতে এবং ইনফেকশন রোধ করতে এই অরগানগুলোতে এয়ার সার্কুলেট হওয়া জরুরি। আন্ডারওয়্যার টাইট হলে এই এরিয়ায় এয়ার সার্কুলেশন রেস্ট্রিক্টেড হয়ে যায়। দেখা দেয় ইনফেকশন ও ইরিটেশন প্রবলেম। তাই এই অরগানগুলোর সুস্থতার জন্য টাইট পেন্টি পরা থেকে বিরত থাকতে হবে।

    ব্যাকটেরিয়া গ্রো করে

    ইন্টিমেট এরিয়া সব সময় হাইজেনিক রাখতে হয়। কিন্তু পেন্টি টাইট হলে বাতাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং শরীর ঘেমে এই এরিয়াতে জমে থাকে। ফলে ময়েশ্চারের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং এ থেকেই ব্যাকটেরিয়া গ্রো করে।

    SHOP AT SHAJGOJ

      পা অসাড় হয়ে আসে 

      ভাবছেন, আন্ডার ওয়্যারের সাইজ ঠিক না থাকলে পায়ের সমস্যা কেন হবে? অবাক হলেও এটা সত্যি। পেন্টি টাইট হলে শুধু মুভ করতে সমস্যা হয় তাই নয়, আপার থাই এরিয়াতে ব্লাড সার্কুলেশনও কমে যায়। ফলে ইরিটেশন হয়, পা অসাড় হয়ে আসে। যার কারণে পা মুভ করতে বা হাঁটতে কষ্ট হয়।

      বুকে জ্বালাপোড়া করে

      অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন টাইট পেন্টির সাথে বুকে জ্বালাপোড়ার কী সম্পর্ক? আমরা অনেকেই এই ব্যাপারটি জানি না। পেন্টি যদি বেশি টাইট হয়, তাহলে পাকস্থলীতে চাপ পড়ে। আর এই চাপ থেকে সৃষ্টি হয় অ্যাসিড, যার কারণে বুক জ্বলে। অনেকেই ভাবেন, খাবারের কারণে অ্যাসিডের এই প্রবলেম হচ্ছে। শুধু খাবারের দোষ না দিয়ে, একবার মনে করে দেখুন, সঠিক আন্ডারওয়্যার পরছেন তো?

      বুক জ্বালাপোড়া করে

      স্কিনে ইরিটেশন হয়

      আন্ডারওয়্যার যদি বেশি টাইট হয়, তাহলে স্কিনে ইরিটেশন হতে পারে। ফলে স্কিনে দেখা দিতে পারে র‍্যাশ, ইচিং প্রবলেম, হতে পারে ডার্মাটিটিসের মতো সমস্যাও। এটা খুবই অস্বস্তিকর মুহূর্ত। এমন অস্বস্তিকর মুহুর্তের মুখোমুখি না হতে চাইলে দ্রুত বদলে ফেলুন টাইট আন্ডারওয়্যারটি।

      যেভাবে ব্রা ও পেন্টির সাইজ বুঝবেন

      ব্রেস্ট ও হিপের মাপ না বোঝার কারণে অনেকেই নিজের সাইজ নিয়ে কনফিউশনে থাকেন। যার কারণে চুজ করেন ভুল মাপের ইনার ও আন্ডার ওয়্যার। কীভাবে ব্রা ও পেন্টির সাইজ বুঝবেন চলুন জেনে নেই-

      ব্রা’র সাইজ মেজার করবেন যেভাবে

      ১) আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ইঞ্চি ফিতা নিয়ে ব্রেস্টের ঠিক নিচ বরাবর শরীরের চারপাশে ঘুরিয়ে ইঞ্চিতে মাপ নিন। ফিতা একদম টাইট করে ধরবেন না। এক আঙুল পরিমাণ ফাঁক রেখে ফিতা ধরতে হবে।

      ২) মাপ দেয়ার পর যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে সেটি আপনার আন্ডারবাস্ট নম্বর। এই নম্বরটি যদি জোড় সংখ্যার হয়, তাহলে এর সাথে ৪ যোগ করুন। যদি বিজোড় হয় তবে যোগ করুন ৫। এই যোগফলটি আপনার ব্যান্ড সাইজ।

      টাইট ফিটিং ব্রা

      ৩) এবার মেজারমেন্ট ফিতাটি ধরুন ব্রেস্টের স্ফীত বা ফুলার অংশে। এটি আপনার বাস্ট সাইজ। আপার বাস্ট সাইজ থেকে ব্যান্ড সাইজ বাদ দিলে যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে সেটা হবে কাপ সাইজ।

      ৪) এবার একটু উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বলি। ধরা যাক, আপনার আন্ডারবাস্ট ২৯। এর সাথে ৫ যোগ করে ব্যান্ড সাইজ পাওয়া গেলো ৩৪। আর আপার বাস্ট সাইজ ৩৭। তাহলে কাপ সাইজ (৩৭-৩৪=৩)। এই মাপটি রেফার করছে কাপ C। অর্থাৎ আপনার ব্রা এর মাপ হবে ৩৪ সি। ( এভাবে বিয়োগফল ১ অর্থে A, ২ অর্থে B, ৩ অর্থে C, ৪ অর্থে D, ৫ অর্থে E ইত্যাদি)। অর্থাৎ ডিফারেন্স ১ হলে কাপ সাইজ A, ২ হলে B এভাবে কাউন্ট করতে হবে।

      ৫) ব্রা এর সাইজ সিলেকশনে ৩০AA, ৩২AA, ৩৪AA এমন কিছু সাইজ দেখা যায়। এই AA হচ্ছে সবচেয়ে ছোট কাপ সাইজ। বাস্ট সাইজ ও ব্যান্ড সাইজের ডিফারেন্স ১ ইঞ্চির কম হলে এই সাইজটি সিলেক্ট করতে হবে।

      এবার ব্রা এর সাইজ কীভাবে বুঝবেন সেটা নিয়ে আপনাকে একদমই ভাবতে হবে না। সঠিক মেজারমেন্টে ব্রা সিলেক্ট করুন, কমফোর্টেবল থাকুন সারাদিন।

      যেভাবে মেজার করবেন পেন্টির সাইজ

      ১) পেন্টির সাইজ সাধারণত শুরু হয় S থেকে। এর পর M, L, XL, 2XL, 3XL, 4XL, F সাইজেরও পেন্টি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে কোমড়ের মাপ ৩০ ইঞ্চি থেকে শুরু করে ৪০ ইঞ্চির বেশি হতে পারে। ব্র্যান্ড অনুযায়ী মেজারমেন্টে কিছুটা পরিবর্তন থাকতে পারে। তাই বয়স ও শারীরিক গঠন অনুযায়ী বেছে নিন আপনার জন্য পারফেক্ট আন্ডারওয়্যারটি।

      টাইট ফিটিং পেন্টি

      ২) প্রেগনেন্সিতে বা ডেলিভারির পর পেটের শেইপ চেঞ্জ হয়, পরিবর্তন আসে বডি স্ট্রাকচারেও। ইলাস্টিসিটি বেশি ও আরামদায়ক ম্যাটেরিয়াল এ সময় চুজ করতে হয়। আর সাইজের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হয়, পেন্টি যেন ফ্রি সাইজের হয়। টাইট হলে পেটে চাপ পড়বে, অস্বস্তি বাড়বে।

      শুধু ব্রেস্ট ও ভ্যাজাইনার হাইজিন মেনটেইনের জন্যই যে ব্রা ও পেন্টি সিলেক্ট করা হয় তা কিন্তু নয়। শরীর সুস্থ রাখার বিষয়টিও কিন্তু এর সাথে জড়িত। তাই রেগুলার পরার জন্য টাইট ফিটিং নয়, বরং সঠিক মাপের ব্রা ও পেন্টি কিনুন। আরামদায়ক এই লঞ্জেরি আইটেমগুলো অনলাইন থেকেও কিনতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ভরসার জায়গা হতে পারে শপ.সাজগোজ.কম। সাজগোজের অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ভিজিট করে আপনার জন্য সঠিক প্রোডাক্টটি পেয়ে যাবেন আশা করি। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

      SHOP AT SHAJGOJ

         

        ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক

        7 I like it
        0 I don't like it
        পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

        escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort