বর্ণিল মেহেদির সাজে... - Shajgoj

বর্ণিল মেহেদির সাজে...

DSC_0037 copy

সৌন্দর্‍য্য চর্চায় মেহেদির ব্যবহার নতুন নয়। প্রাচীনকাল থেকেই এর ব্যবহার চলে আসছে। ৫ হাজার বছর আগে মিশরের মেয়েরা হাতে, পায়ে ও চুলে মেহেদি লাগাতো। বাগদাদের খলিফাদের যুগে নারীর সৌন্দর্‍য্য চর্চার অন্যতম প্রধান উপকরণ ছিলো মেহেদি। উপমহাদেশে মেহেদির প্রচলন হয় মোঘল আমল থেকে। মোঘল রমণীদের সৌন্দর্‍য্য চর্চায় মেহেদির ভূমিকা ছিলো অনন্য। হাতে-পায়ে মেহেদির নকশী কাজ তখন থেকেই চালু হয়। সম্রাজ্ঞী নূরজাহান মেহেদির নকশী কাজ খুবই পছন্দ করতেন। মোঘল হেরেম থেকে রাজপুত নারীদের মধ্যে মেহেদির প্রচলন শুরু হয়। তারপর ক্রমান্বয়ে তা উপমহাদেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। আর এখন এর ব্যবহার করে না এমন মহিলার সংখ্যা খুবই কম।

 mehedi 1

হাতের তালুতে একটা বড় বৃত্ত আর মুড়িয়ে দেওয়া আঙুলএই ছিল আগের যুগের মেহেদিবৃত্তান্ত। এখন তা রূপ নিয়েছে রীতিমতো শিল্পে। মেহেদি বাটার ঝামেলাটা মিটিয়ে দিয়েছে বাজারে কিনতে পাওয়া টিউব মেহেদিগুলো। এ টিউব মেহেদিতেও কত বৈচিত্র্য। সময়ের সঙ্গে শুধু মেহেদি দেওয়ার উপকরণটি বদলে যায়নি, বদলে গেছে এর রংও বৈকি। গ্লিটার মেহেদির পাশাপাশি রাজত্ব করছে কাল মেহেদিও।

mehedi 2
কাল মেহেদির উপকরণ পুরোপুরি রাসায়নিক। এতে কোনো মেহেদি থাকে না। হাতে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর উঠিয়ে ফেললে লাল রং পাওয়া যাবে। হাতে শুকিয়ে গেলে পুরো কাল রংটাই ধারণ করে থাকবে। তবে যাদেরএলার্জি আছে তাদের এই মেহেদি না দেওয়াই ভালো। লাল মেহেদি, কালো মেহেদি, তার সঙ্গে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বাজারে পাওয়া হরেক রঙের রঙিন গ্লিটার। নকশা ও রঙেই মেহেদির আসল সৌন্দর্‍য্য ফুটে ওঠে। ব্যক্তির রুচির ওপর নির্ভর করে মেহেদির ডিজাইন। দুই হাতের পুরো তালু জুড়েও করা যায়, আবার শুধু এক আঙুলেও নকশা করতে পারেন। চাইলে পুরো হাতেও মেহেদি দিতে পারেন। এই নকশা আপনি হাতের কবজি ছাড়িয়ে নিচে আরো কিছু অংশেও করতে পারেন। আবার হাতের তালুতে আড়াআড়ি করে লতানো ডিজাইন আঁকতে পারেন।

 mehedi 3

সনাতন কলকি, ফুল, পাতা, প্রজাপতি বা নকশা ছাড়াও আপনি পাকিস্তানি ভরাট ডিজাইনও করতে পারেন। হাতের দুই পিঠেও মেহেদি পরা যায়। কালো মেহেদির ভেতর লাল মেহেদি দিয়ে তার ওপর পোশাকের সঙ্গে রং মিলিয়ে লাগিয়ে নিতে পারেন গ্লিটার মেহেদির বুটি। যাঁদের হাত বড়, তাঁদের হাতে বড় বা ভরাট নকশা ভালো লাগবে। আর ছোট হাতে ভরাট না করে এক পাশে লম্বালম্বি ডিজাইন ভালো লাগবে। হাতের আঙুল খুব ছোট হলে অনামিকা ও মধ্যমায় লম্বালম্বি যেকোনো ডিজাইন মানাবে। আবার হাতের তালুতে আড়াআড়ি লতানো ডিজাইন আঁকতে পারেন। আঙুলেও নকশা আঁকা যায়।

ব্যবহারবিধি

  •  মেহেদি লাগানোর আগে হাত ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। ময়েশ্চারাইজার বা লোশন-জাতীয় কিছু লাগানো যাবে না।
  •  মেহেদি রাতে দিলে সকালে এর রংটা বেশি ভালো লাগবে।
  •  বাটা মেহেদির সঙ্গে কফি বা চায়ের লিকার মিশিয়ে দিলে রং গাঢ় হবে।
  •  টিউব মেহেদি দেওয়ার আগে হাতে একটু লাগিয়ে দেখুন অ্যালার্জি হয় কি না।
  • মেহেদি দেওয়ার এক-দুই দিন পর অনেকের মেহেদি জায়গায় জায়গায় উঠে যায় বা হালকা হয়। সে ক্ষেত্রে মেহেদি উঠিয়ে হাতে হালকা সরিষার তেল মেখে নিন।
  • মেহেদি শুকিয়ে গেলে ঘষে তুলে ফেলুন, সম্ভব হলে পরবর্তী ছয় ঘণ্টা পানি লাগাবেন না। এতে রংটা ভালো হবে।
  • মেহেদি ওঠানোর পরে হাতে একটু চিনির সিরাপ লাগিয়ে নিলে রঙ স্থায়ী হয়।
  • মেহেদি কেনার আগে অবশ্যই মেয়াদ উত্তীর্নের তারিখ দেখে কিনবেন। নতুন কোম্পানির প্রোডাক্ট নিশ্চিত না হয়ে কিনবেন না।

 

লিখেছেনঃ বৈশাখী

 

0 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort