সার্ভিকেল ক্যান্সারের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা জানেন কী?

সার্ভিকেল ক্যান্সারের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা জানেন কী?

সার্ভিকেল ক্যান্সার - shajgoj.com

জরায়ু মুখের ক্যান্সার বা সার্ভিকেল ক্যান্সার বর্তমানে মহিলাদের একটি আলোচিত অসুখ। প্রাক-ক্যান্সার অবস্থায় এটি ধরা পড়লে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব। কেননা জরায়ু মুখের কোষের প্রাথমিক পরিবর্তনগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্যান্সারে রূপ নেয় না। তাছাড়া, যে কোষীয় পরিবর্তনগুলো ক্যান্সারে রূপ নেয়, সাধারণত তাতেও প্রায় কয়েক বছর লেগে যায়। কিন্তু এক বছরের কম সময়েও এই পরিবর্তন ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে। চলুন জেনেন নেই সার্ভিকেল ক্যান্সারের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত।

সার্ভিকেল ক্যান্সারের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

সার্ভিকেল ক্যান্সারের রিস্ক ফ্যাক্টর

জরায়ু মুখের ক্যান্সার বা সার্ভিকেল ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা যে যে কারণে সবচেয়ে বেশি হতে পারে, তা হলো-

  • হিউমেন প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি), অর্থাৎ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে।
  • অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা হলে।
  • জন্ম-নিয়ন্ত্রণকারী পিল বা পদ্ধতি গ্রহণ করলে।
  • বংশগত কারণে।
  • ধূমপান ও এ্যালকোহল পান করলে।
  • ৩ জনের বেশি সন্তান গ্রহণ করলে।
  • কম বয়সে সন্তান গ্রহণ করলে।

সার্ভিকেল ক্যান্সারের লক্ষণ

সার্ভিকেল ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ - shajgoj.com

সাধারণত, প্রাথমিক পর্যায়ে এই ক্যান্সারের কোন নির্দিষ্ট শারীরিক বা দৃশ্যমান লক্ষণ ধরা যায় না। ক্যান্সার ছড়িয়ে না পড়া পর্যন্ত আগে আঁচ করা যায় না, এটাই সার্ভিকেল ক্যান্সারের সবচেয়ে ভয়াবহ দিক। ছড়িয়ে পড়লে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে-

  • পায়ে, বুকে ব্যথা।
  • যোনীপথে গন্ধযুক্ত, অতিরিক্ত পরিমাণে এবং অনিয়মিত সাদা স্রাব
  • অনিয়মিত ঋতুস্রাব (এটাই সবচেয়ে কমন লক্ষণ) এবং অস্বাভাবিক রক্তপাত।
  • প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা অস্বস্তিকর অনুভূতি।
  • প্রস্রাবে হঠাৎ কোনো পরিবর্তন যেমন- প্রস্রাবের অনিয়ন্ত্রিত বেগ, অস্বাভাবিক রং ইত্যাদি।
  • সহবাসে অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভূত হওয়া।
  • হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া।

এগুলো সবই অন্য যেকোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে, কিন্তু এর যেকোনো একটিও আপনি অনুভব করলে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।

সার্ভিকেল ক্যান্সার প্রতিরোধ

যেহেতু সার্ভিকেল ক্যান্সার সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ে আন্দাজ যায় না বা এর কোন লক্ষণ প্রাথমিক পর্যায়ে দেখা যায় না, তাই এর প্রতিরোধ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।সার্ভিকেল ক্যান্সার প্রতিরোধে আপনি যে ব্যবস্থাগুলো নিতে পারেন-

১. পেপ টেস্ট স্ক্রিনিং – সার্ভিকেল ক্যান্সার সনাক্ত করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে পেপ টেস্ট করা। মেডিকেলের পরামর্শ অনুযায়ী ২০-৩০ বছর বয়সী মহিলাদের প্রতি ৩ বছরে একবার, ৩০-৬৫ বছর বয়সী মহিলাদের প্রতি ৩-৫ বছরে একবার এই টেস্ট করানো উচিত। ৬৫ বছরের পর, যদি এর মধ্যেই নিয়মিত ৩বার করানো হয়ে থাকে, তবে আর পেপ টেস্ট করার প্রয়োজন নেই।

সার্ভিকেল ক্যান্সারের প্রতিরোধে HPV ভ্যাক্সিন - shajgoj.com

২. এইচপিভি ভ্যাকসিন – অনেক মেডিকেল প্রফেশনাল পুরুষ ও মহিলাদের ২০ বছর বয়সের মধ্যে এইচপিভি ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাদের মতে এই ভ্যাকসিনেশন সার্ভিকেল ক্যান্সার রোধের প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত।

৩. ধূমপান ও এ্যালকোহল পান বন্ধ করুন – শুধু সার্ভিকেল ক্যান্সার নয়, আরও অনেক ধরনের ক্যান্সার ও অন্যান্য অসুখের কারখানা হচ্ছে ধূমপান ও এ্যালকোহল। তাই এসব পানে বিরত থাকুন।

৪. নিরাপদ সহবাস – যৌনঘটিত রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করুন। এসব রোগ সার্ভিকেল ক্যান্সারের প্রধান নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে।

তাহলে সার্ভিকেল ক্যান্সার সম্পর্কে জেনে সচেতন হোন আর ভালো থাকুন সবসময়!

 

সুত্রঃ হেলদিঅ্যান্ডন্যাচারালওয়ার্ল্ডডটকম, আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি

ছবিঃ গ্যালারিহিপ.কম, আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি

30 I like it
3 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort