প্রেজেন্টেশন ও পাবলিক স্পিকিং-এ কনফিডেন্ট থাকবেন কীভাবে?

প্রেজেন্টেশন ও পাবলিক স্পিকিং-এ কনফিডেন্ট থাকবেন কীভাবে?

public speaker

কিছুদিন আগে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জয়েন করেছে লামিয়া। আগামীকাল তার প্রথম প্রেজেন্টেশন। এ নিয়ে লামিয়া বেশ টেনশনে আছে। কারণ সবার সামনে কথা বলতে গেলেই তার স্ট্রেসড লাগে, হাত-পা কেমন ঠান্ডা হয়ে যায়, আবার অনেক সময় সোয়েটিং শুরু হয়! শুধু লামিয়া-ই না, এমন প্রবলেম আরো অনেকেই ফেইস করেন৷ প্রেজেন্টেশন ও পাবলিক স্পিকিং-এ ভয় থাকলে এমনটা হয়! তখন দেখা যায়, যত ভালো আইডিয়া থাকুক না কেন, সেগুলো সবার সামনে প্রোপারলি প্রেজেন্ট করা যায় না এবং এতে নিজের ইমপ্রেশনও ডাউন হয়ে যায়। নার্ভাসনেস দূর করে কীভাবে কনফিডেন্টলি কথা বলা যায়, তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ থাকছে আজকের ফিচারে।

এনাফ রিসার্চ করুন আগেই

স্টেজ ফেয়ার খুবই কমন। যেকোনো প্রেজেন্টেশনে বা স্পিচে ভালো পারফর্ম করতে চাইলে প্রিপারেশনে কোনো কম্প্রোমাইজ করা যাবে না। শুরুতেই যে টপিকে কথা বলতে হবে সেটি নিয়ে এনাফ রিসার্চ করুন। তারপর মেইন পয়েন্টস নোট করে রাখুন এবং নিয়মিত রিভাইস করুন। এতে কথা বলার সময় টপিক রিলেটেড কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন মিস হবে না এবং সেলফ কনফিডেন্সও বাড়বে।

এর পাশাপাশি সাজেস্ট করবো যে রুমে প্রেজেন্টেশন দিতে হবে, সেটা আগে থেকেই একবার দেখে আসতে। এতে প্রেজেন্টেশনের দিন অপরিচিত পরিবেশে কথা বলতে অ্যাংজাইটি কাজ করবে না। ও হ্যাঁ, যদি কোনো ডকুমেন্ট, ছবি প্রিন্ট করতে হয় অথবা পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড প্রিপেয়ার করতে হয়, তা আগেই করে ফেলুন। এতে প্রেজেন্টেশনের দিন কোনো বাড়তি হ্যাসেল হবে না।

প্রয়োজন নিয়মিত প্র্যাকটিস

প্রোপার প্র্যাকটিস

প্রোপার প্র্যাকটিসের অভাবেই সবার সামনে কনফিডেন্টলি কথা বলতে স্ট্রাগল করতে হয়। তাই নিয়মিত প্র্যাকটিসের কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন –

১. যখন প্রেজেন্টেশন প্র্যাকটিস করবেন, তখন শুধুমাত্র কথা বলার অংশটুকুই প্র্যাকটিস করবেন না। বরং পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড, ছবি বা ভিডিও এগুলোর সমন্বয়ে পুরো প্রেজেন্টেশন কীভাবে ডেলিভার করবেন তা প্র্যাকটিস করবেন। এতে প্রেজেন্টেশনের দিন কনফিডেন্টলি কথা বলা অনেক ইজি হয়ে যাবে।

২. যেভাবে অডিয়েন্সের সামনে প্রেজেন্টেশন ডেলিভার করতে হবে, ঠিক সেভাবেই প্র্যাকটিস করুন।

৩. চাইলে আপনারা প্রেজেন্টেশন প্র্যাকটিসের সময় সেটি রেকর্ড করতে পারেন। এতে নিজের দুর্বলতা ও ভুলগুলো খুব সহজেই আইডেন্টিফাই করতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী আরো ভালোভাবে প্র্যাকটিস করতে পারবেন। আবার চাইলে কোনো ফ্যামিলি মেম্বার কিংবা ফ্রেন্ডের সামনেও প্র্যাকটিস করতে পারেন এবং তাদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিতে পারেন।

প্রেজেন্টেশন ও পাবলিক স্পিকিং-এ খেয়াল রাখুন কিছু বিষয়

পাবলিক স্পিকিং

অনেকেই মনে করেন সবার সামনে কনফিডেন্টলি কথা বলা খুব কঠিন কাজ! আসলে ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয়। যদি আপনারা কিছু সিম্পল টিপস ফলো করেন, তাহলেই কাজটি সহজ হয়ে যাবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সে টিপসগুলো ।

১) নির্ধারিত সময়ে পোঁছানো

প্রেজেন্টেশনের দিন অবশ্যই নির্ধারিত সময়ের আগে ভেন্যুতে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন। কারণ যদি পৌঁছাতে দেরি হয়ে যায়, তাহলে আলাদা টেনশন কাজ করে, তখন চাইলেও কনফিডেন্টলি স্পিচ ডেলিভার করা যায় না। তাই অবশ্যই হাতে সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হবে।

২) অডিয়েন্সের সাথে কানেক্ট করা

যদি প্রেজেন্টেশনের শুরুতেই অডিয়েন্সের সাথে কানেক্ট করতে পারেন, তাহলে নিজের কনফিডেন্স অনেকটাই বেড়ে যায়। কীভাবে কানেক্ট করবেন? বলছি! গদবাঁধা উপায়ে শুরু না করে কোনো রিলেটেবল স্টোরি বা পারসোনাল এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করার মাধ্যমে প্রেজেন্টেশন স্টার্ট করুন। আবার চাইলে একটু ফানি স্টোরিও বলা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে এমন কিছু বলবেন না, যা আপনার অডিয়েন্সকে ট্রিগার করতে পারে। এবার আপনি মেইন পয়েন্ট সুন্দরভাবে ডেলিভার করুন।

প্রেজেন্টেশন ও পাবলিক স্পিকিং

৩) প্রোপার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ

সবার সামনে কনফিডেন্টলি কথা বলার জন্য অ্যাপ্রোপ্রিয়েট বডি ল্যাঙ্গুয়েজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই কথা বলার সময় সঠিক বডি ল্যাঙ্গুয়েজ মেনটেইন করার চেষ্টা করুন। যেমন- অডিয়েন্সের সাথে আই কনট্যাক্ট করা, খুব জোরে নিঃশ্বাস না নেওয়া, কথা বলার সময় প্রয়োজনমতো ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন দেওয়া, এক জায়গায় দাঁড়িয়ে কথা না বলে মুভ করা ইত্যাদি।

৪) এক্সপ্রেশনে চেঞ্জ আনা

টপিক অনুযায়ী আপনার ভয়েসের এক্সপ্রেশনও পরিবর্তন করুন৷ যেমন ধরুন, কোনো এক্সাইটিং ইনফরমেশন দেওয়ার সময় আপনার গলার স্বরে বা ভয়েসে যেন সেই এক্সাইটমেন্টটুকু থাকে, সেটা নিশ্চিত করুন৷ এতে দেখবেন, অডিয়েন্স আপনার স্পিচে বোরড ফিল করবে না, বরং ফুল কনসেনট্রেশন দিয়ে আপনার কথা শুনবে।

৫) অপ্রয়োজনীয় বিরতি না নেওয়া

কনফিডেন্ট না হওয়া

খেয়াল রাখবেন, আপনার কথা যেন খুব ফাস্ট না হয়, আবার খুব স্লোও না হয়। অর্থাৎ এমনভাবে কথা বলতে হবে, যেন প্রতিটি বাক্যের মাঝে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু বিরতি নেওয়া হয়। এতে সামনে উপস্থিত সবাই বুঝতে পারবেন যে আপনি নার্ভাস নন এবং যথেষ্ট কনফিডেন্ট! অপ্রয়োজনীয় বিরতি নিলে আপনার অডিয়েন্স কিন্তু মনোযোগ হারাতে পারে।

যখন কথা বলা শুরু করবেন, তখন অডিয়েন্স থেকে এমন একজনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন, যিনি আপনার কথায় পজেটিভলি রেসপন্স করছেন অথবা মাথা নাড়াচ্ছেন। তারপর যখনই নার্ভাস ফিল হবে, তার দিকে তাকান। এতে দেখবেন নার্ভাসনেস কমে যাবে এবং কনফিডেন্সও ফিরে আসবে। সবার সামনে কথা বলার ক্ষেত্রে নেগেটিভ থটস আসা খুব স্বাভাবিক। যেমন মনে হতে পারে, অডিয়েন্স আপনার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে না কিংবা আপনাকে জাজ করবে। এই চিন্তাগুলোই কিন্তু কনফিডেন্স অনেকটা কমিয়ে দেয়। তাই, নেগেটিভ থটস দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। প্রেজেন্টেশন ও পাবলিক স্পিকিং-এ কনফিডেন্ট থাকবেন কীভাবে, সেই গাইডলাইন জেনে নিলেন আজ। শুভ কামনা সকলের জন্য।

ছবি- সাটারস্টক

8 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort