আই ক্রিম ব্যবহারের ৫টি উপকারিতা জানা আছে কি?

মেয়েদের যদি জিজ্ঞেস করা হয় কীভাবে চোখের যত্ন নেন তাহলে অধিকাংশ মেয়েরই উত্তর হয় ঠিক এমন- মুখে সাধারণত যে ক্রীম ব্যবহার করি তাই চোখে মেখে নেই। চোখের জন্য আবার আলাদা করে কিছু ব্যবহার করার প্রয়োজন কী? বয়স বাড়ার সাথে সাথে সবচেয়ে বেশি যে জায়গাটিতে প্রভাব পড়ে, তা হচ্ছে আপনার এই সুন্দর দুটি চোখ। সাধারণত বয়স ত্রিশের কোঠা পার করলেই তার লক্ষণ সবার আগে পরিলক্ষিত হয় চোখের মাধ্যমেই। তাই আকর্ষনীয় ও দীপ্তিময় থাকার জন্য চোখের ত্বকের দরকার বিশেষ যত্ন। এই বিশেষ যত্নে ব্যবহার করতে পারি আই ক্রিম (eye cream)। আই ক্রিম ব্যবহারে আপনার চোখের ফাইন লাইন (fine line), রিঙ্কেল (wrinkle), পাফিনেস (puffiness), ডার্ক সার্কেল (dark circle) ইত্যাদি অচিরেই দূর করা যায়। চলুন দেখে নেই তবে আই ক্রিম ব্যবহারের ৫টি উপকারিতা সম্পর্কে!

আই ক্রিম ব্যবহারের ৫টি উপকারিতা

(১)  ফাইনলাইন এবং রিঙ্কেল দূর হয়

আমাদের চোখের ত্বক অনেক বেশি কোমল ও নমনীয় হয়ে থাকে। তাই আমাদের মুখের অন্যান্য জায়গার ত্বকের চেয়ে চোখের চারপাশের ত্বক অনেক বেশি তাড়াতাড়ি শুষ্ক হয়ে যায়। তাই চোখের ত্বকের সঠিক যত্ন না নিলে অচিরেই ফাইন লাইন, রিঙ্কেল, ডার্ক সার্কেল, পাফিনেস অনেক সময় বয়স বাড়ার আগেই  আপনার ত্বককে আরো বুড়িয়ে দিতে পারে। এক্ষেত্রে একটি ভালো মানের আই ক্রিম ব্যবহারে এ সকল সমস্যা থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া সম্ভব।

(২) ত্বককে বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে

আই ক্রিম মূলত চোখের চারপাশের ত্বকের কমনীয়তার কথা মাথায় রেখেই বিশেষ উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। তাই এটি তুলনামূলক ময়েশ্চারাইজার (moisturizer)-এর চেয়ে বেশ গাঢ় হয়ে থাকে। এছাড়া চোখের ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য এতে তেলের পরিমাণও একটু বেশিই থাকে। এতে রয়েছে বিশেষ উপাদান যা চোখের ত্বককে অকালে বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।

(৩)  ত্বকের কোলাজেন-এর মাত্রা বাড়ায়

সূর্যের ক্ষতিকর অতি বেগুনী রশ্মির সংস্পর্শে আমাদের ত্বকে কোলাজেন (collagen)-এর মাত্রা কমে যায়। কোলাজেন মূলত আমাদের ত্বককে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। তাই কোলাজেনের অভাবে আমাদের চোখে ফাইন লাইন ও রিঙ্কেল-এর প্রাদূর্ভাব বেশি দেখা দেয়। ভিটামিন সি কোলাজেন-এর মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে অনেকাংশে সাহায্য করে। তাই রোজ রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আই ক্রিম লাগিয়ে নিলে এসব সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

(৪)  ডার্ক সার্কেল দূর করে

যারা বেশি রাত পর্যন্ত জাগেন তাদের জন্য ডার্ক সার্কেল এক বিভীষিকার নাম। এছাড়া জীনগত কারণে, বেশি রোদে ঘোরাঘুরি করলে বা একটি নির্দিষ্ট বয়সের পরও ডার্ক সার্কেল দেখা দিতে পারে। ভিটামিন বি-৩ ডার্ক সার্কেল কমাতে দারুণ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই যারা ডার্ক সার্কেল-এর সমস্যায় ভুগছেন তারা ভিটামিন বি-৩ সমৃদ্ধ আই ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করলে ভাল ফল পাবেন।

(৫) পাফিনেস বা চোখের ফোলাভাব দূর করে

অনেক সময় অনেকেই পাফিনেস বা চোখের ফোলাভাবের সমস্যায় পড়ে থাকেন। মূলত চোখের ত্বকের নিচে অতিরিক্ত পানি জমে চোখে ফোলাভাবের সৃষ্টি করে। ফলে যতই মেকআপ করে লুকানোর চেষ্টা করুন না কেন চোখের ত্বক ঝুলে গিয়ে চোখের সৌন্দর্যটাই মাটি হয়ে যায়। আসল বয়সের তুলনায় আরো বেশি বয়স্ক দেখায়। পাফিনেস দূর করার ক্ষেত্রে ঠান্ডা সেঁক অনেক বেশি কাজে দেয়। তাই আই ক্রিম ব্যবহারের আগে তা যদি ফ্রীজ-এ ঠান্ডা করে রাখেন তাহলে সবচেয়ে ভালো ফল পাবেন।

কিছু জনপ্রিয় আই ক্রিমের নাম

• ক্লিনিক অল অ্যাবাউট আইস (Clinique All About Eyes)
• অরিজিন রিফ্রেশিং আই ক্রিম (Origins Refreshing Eye Cream)
• দ্যা বডি শপ ড্রপ অফ ইয়থ আই কনসেনট্রেট (The Body Shop Drop Of Youth Eye Concentrate)
• অলে এজ ডিফাইং আই জেল (Olay Age Defying Eye Gel)
• অ্যাভিনো এজলেস লিফটিং অ্যান্ড ফার্মিং আই ক্রিম (Aveeno Ageless Lifting & Firming Eye Cream)
• নিউট্রিজিনা র‍্যাপিড রিংকেল রিপেয়ার আই ক্রিম (Neutrogena Rapid Wrinkle Repair Eye Cream)
• গার্নিয়ার স্কিন রিনিউ অ্যান্টি ডার্ক সার্কেল রোলার (Garnier Skin Renew Anti Dark Circle Roller)

তবে যে আই ক্রিম-ই ব্যবহার করুন না কেন, একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে চোখের সমস্যা যেমন একদিনে তৈরি হয় না তেমনি একদিন আই ক্রিম ব্যবহার করেই ভালো ফল আশা করা যায় না। তাই ধৈর্য্য ধরে নিয়মিত আই ক্রিম ব্যবহার করলে অবশ্যই ভাল ফল পাবেন। আর কিছু ভালো আই ক্রিম যেগুলো এখন পাবেন শপ সাজগোজ এ সেগুলোও চলুন দেখে নেওয়া যাক এক নজরে…

ছবি – স্ট্যান্ডার্ড.কো.ইউকে