মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করুন ১০টি ঘরোয়া উপায়ে!

মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করুন ১০টি ঘরোয়া উপায়ে!

মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করছে - shajgoj.com

সৌন্দর্য সচেতন নারীদের জন্য মুখের অবাঞ্ছিত লোম খুবই অস্বস্তিকর, লজ্জ্বাজনক। তারা যে কোন উপায়ে পরিত্রাণ পেতে চান এই পরিস্থিতি থেকে। সাধারণত ঠোঁটের উপরে আর নীচে, থুতনির কাছে লোম দেখা যায়। এখন হয়ত জানতে ইচ্ছা হচ্ছে কেন হয় এই লোম? মেডিকেলের ভাষায় অতিরিক্ত লোম হওয়ার প্রবণতাকে ‘hirsutism’ বলে। ‘hirsutism’ বংশগত হতে পারে। কিন্তু যদি জেনেটিকাল প্রবলেম না হয় তাহলে আর কী কারণ থাকতে পারে?

চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে মুখের অবাঞ্ছিত লোম হওয়ার ২টি কারণ আছে। testosteron বা এড্রেনাল হরমোন বেশি উৎপন্ন হলে এমনটি হয়। তার মানে পুরুষালী হরমোন আপনার শরীরে বেশি আছে। মেনোপোজ়ের সময় হরমোনের পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন শরীরের অন্যান্য পরিবর্তন ঘটাতে পারে যেমন মুখের অতিরিক্ত লোম। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় হরমোনাল ডিজঅর্ডার বা কোন ওষুধের রিয়েকশানের কারণে হতে পারে।

মুখের লোম নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আমাদের কোন হাত নেই বড় জোর শুধু সাময়িকভাবে এর থেকে পালিয়ে থাকা যায়। পার্লারে গিয়ে বেশ কিছু টাকা খরচ করে হয়ত এর থেকে কিছু দিনের জন্য পরিত্রাণ পেতে পারেন। কিন্তু ৭ দিনের মাথায় আবার যখন মুখে লোমগুলো উঁকি ঝুঁকি মারতে থাকে তখন পুরো টাকাটাই পানিতে ফেলা বলে মনে হয়। আর তাছাড়া নিয়মিত পার্লারে গিয়ে প্লাগিং বা থ্রেডিং করাও সময় সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল। ফেসিয়াল হেয়ার মুখকে কেমন যেন কালচে করে তোলে উপরন্তু অপরিষ্কার দেখায়। এসব কারণে আজ ঘরে থাকা কিছু সাধারণ সামগ্রী দিয়ে ফেসিয়াল হেয়ার ওঠার প্রবণতা কীভাবে কমিয়ে আনা যায় বা লোমের রঙটিকে ন্যাচারাল উপায়ে কীভাবে ফেড করা যায় সে সম্পর্কে বলব। যার কোন সাইড এফেক্ট নাই অথচ কার্যকর।

মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে করণীয়

১. উপটান

কিছু বেসন, হলুদের গুঁড়ো আর সরিষার তেল দিয়ে একটি উপটান বানিয়ে নিন। তারপর মুখের চুলের উপর লাগান। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে তুলে ফেলুন। এই ট্রেডিশোনাল ঘরোয়া পদ্ধতির নিয়মিত ব্যবহার আপনার মুখের লোম অনেকটা কমিয়ে নিয়ে আসবে।

২. মেথি ও যবের গুঁড়ো

যবের গুঁড়ো দুধে ভিজিয়ে ফেলুন। এটি গোলাপ জলমেথি গুঁড়োর সাথে মিশিয়ে নিন। তারপর লোমযুক্ত স্থানে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। চাইলে পুরো মুখেও লাগাতে পারেন এতে করে আপনার মুখের ময়লাও ক্লিন হয়ে যাবে। লোমের উপরের পেস্ট শুকানোর পর ঘষে তুলুন। যবের গুঁড়োতে আছে ভিটামিন বি৬ যা মহিলাদের চুলের গ্রোথ কমিয়ে আনে। দেখবেন এই পেস্ট ব্যবহারে ময়লার সাথে লোমগুলোও আস্তে আস্তে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে।

৩. মুসুরির ডাল

সারা রাত ডাল ভিজিয়ে রাখুন। সকালে কাঁচা আলুর সাথে ডাল বেঁটে ফেলুন। এর সাথে লেবুর রস, হলুদ আর মধু মিশান। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি মুখে লোম গজানোর প্রবণতা কমিয়ে আনে।

৪. মধু ও বেসন

২ টেবিল চামচ লেবুর রস, ১ কাপ পানি, ১/৪ কাপ মধু ও ১/৪ কাপ বেসন নিন। ইচ্ছা করলে পরিমাণ কমিয়েও নিতে পারেন। এই উপাদানগুলো দিয়ে একটি পেস্ট বানান। তারপর মুখ পরিষ্কার করে পেস্টটি অ্যাপ্লাই করুন। তারপর তুলে ফেলার সময় হাতে অল্প পানি নিয়ে চুলের গ্রোথের বিপরীত দিকে স্ক্রাব করে তুলুন। এভাবে ২ মাস ধরে সপ্তাহে ১ বার করে করুন। মুখের চুলের রঙ হালকা হয়ে যাবে।

৫. কর্ণফ্লাওয়ার

মুখের লোম দূর করতে কর্নফ্লাওয়ার, ডিম ও চিনির মিশ্রণ - shajgoj.com

কর্নফ্লাওয়ার, ডিমের সাদা অংশ ও চিনি সবগুলো উপাদান এক চা চামচ করে নিন। এক সাথে ভালো ভাবে ফেটিয়ে নিন উপাদানগুলো। এরপর পুরো মুখে লাগিয়ে নিন মিশ্রণটি। এতে যেমন মুখের লোম দূর হবে তেমনি দূর হবে মুখের মরা কোষও।

৬. মধু লেবুর মিশ্রণ

মধুর সাথে লেবু রস একসাথে মিশিয়ে লোম দূরীকরণ স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। লেবু ন্যাচারাল ব্লিচ হিসেবে কাজ করে যার ফলে লোমের রঙটাকে আস্তে আস্তে ফেড করে দেয়।

৭. বার্লি গুঁড়ো

লেবুর রসের সাথে ১ চামচ বার্লি গুঁড়ো অথবা দুধ মিশিয়ে নিন। তারপর মুখে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। লেবুর রসের কারণে লোমের রঙের পরিবর্তন আসবেই। ধীরে ধীরে দেখতে পাবেন লোমের রঙ আপনার গায়ের রঙের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।

৮. টক দই

২ টেবিল চামচ টক দই নিন এর সাথে বেসন এবং হলুদ মিশিয়ে পেস্ট বানান। মুখের লোম যুক্ত স্থানে লাগান। পরে শুকিয়ে গেলে স্ক্রাব করে ফেলুন। ধীরে ধীরে ঐ স্থানে লোম ওঠার প্রবণতা কমে আসবে।

৯. লবণ

৫ চা চামচ লবণের সাথে ৬ চা চামচ হলুদের গুঁড়ো একটি বায়ু নিরোধক কন্টেইনারে নিন। ৫ চা চামচ দুধ মিশিয়ে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ পর্যন্ত না একটি পেস্ট তৈরি হয়। তারপর মুখ ভালো ভাবে ক্লিন করে নিয়ে, অবাঞ্ছিত লোমের উপর পেস্টটি লাগিয়ে নিন। অপেক্ষা করুন ১৫ মিনিট। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই ভাবে ৮ দিন ধরে এক নাগাড়ে করতে থাকুন।

১০. কমলার খোসা গুঁড়ো

কিছু কমলার খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এরপর দই ও হলুদের সাথে মিশিয়ে পেস্ট বানান। এই পেস্ট মুখে লাগান তারপর শুকিয়ে গেলে সার্কুলার মুভমেন্টে স্ক্রাব করে তুলে ফেলুন। যখনই লোম উঠবে মুখে তখনই এটি অ্যাপ্লাই করবেন।

আপনাদের সতর্ক করার জন্য বলে দিচ্ছি উপকরণগুলোতে আপনার অ্যালার্জি আছে কিনা তা আগেই টেস্ট করে নিবেন। তা না হলে সমস্যার সমাধানের বদলে বরং আরও বেড়ে যাবে। আর এগুলো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। ধৈর্য ধরে ব্যবহার করতে থাকুন; অবশ্যই ফল পাবেন।

এই তো জানলেন কি করে ঘরোয়া উপায়ে মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করবেন। এবার চলুন দেখে নেওয়া যাক মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করার জন্য কিছু প্রোডাক্টস যেগুলো আপনার পাবেন শপ সাজগোজ-এ…

ছবিঃ সংগৃহীত – গ্যাজেটএবোটা.কম

21 I like it
1 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort