চাকরি জীবনের ১ম বৈশাখ - Shajgoj

চাকরি জীবনের ১ম বৈশাখ

baishak-tumb

নাম তার আদ্রিতা (কাল্পনিক)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে আট মাস আগে জয়েন করেছে একটি বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। তিন ভাইবোনের মধ্যে আদ্রিতা সবার বড়। আদ্রিতার বাবা একটি প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষকতা করেন। আর মা পুরোদস্তুর বাঙালি গৃহিণী। তাঁর ছোটবোন আনিকা ঢাকা মেডিকেলে ডাক্তারি পড়ছে। আর ছোটভাই অনিক ৮ম শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে। আদ্রিতা যেসময়ে পড়াশোনা করেছিল তখন তাঁর বাবাই ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাই অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করতে হয়েছে আদ্রিতাকে। আর্থিক অভাব পূরণ করার জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি তাঁকে অনেক টিউশনি ও পার্ট টাইম চাকরি করতে হয়েছে। প্রতিবারই যখন পহেলা বৈশাখের আগমন ঘটে তখন আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে আদ্রিতা কখনও মন ভরে পহেলা বৈশাখের দিনটিকে উপভোগ করতে পারে নি। কিন্তু এবার চিত্রপট ভিন্ন। একটি বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাদে আদ্রিতা এখন আর্থিকভাবে অনেকটাই স্বচ্ছল। তাছাড়া তাঁর কাজে সন্তুষ্ট হয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আর্থিক বোনাসও দেওয়া হয়েছে। তাই এবার আদ্রিতা পরিকল্পনা করেছে পহেলা বৈশাখের দিনটিকে পরিবারের সবার সাথে মন ভরে উৎযাপন করবে। তাই সে আগে থেকেই বেতনের একটি অংশ জমিয়ে রেখেছে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে। বাবা-মা, ভাই-বোন সবাইকে সে এবার পহেলা বৈশাখে বিভিন্ন জিনিস উপহার দেবে ঠিক করেছে।

[picture]

বাবা-মার জন্য

চাকরি জীবনের প্রথম বেতনের টাকা যখন আদ্রিতা তাঁর বাবা-মার হাতে তুলে দিয়েছিল তখন খুশিতে তার বাবা-মার চোখ আনন্দঅশ্রুতে ভরে গিয়েছিল। সেদিন আদ্রিতা মনে যে প্রশান্তির ছোঁয়া পেয়েছিল তা সে কোনদিনও ভুলবে না। আদ্রিতার বাবার পাঞ্জাবীগুলো অনেক পুরোনো হয়ে গেছে তাই সে ঠিক করেছে বাবার জন্য একটি সুন্দর পাঞ্জাবী উপহার দেবে। আর মাকে দেবে একটা সুন্দর শাড়ি। কিন্তু শুধু এইটুকুতেই আদ্রিতার মন ভরছে না। বাবার জন্য একটি হাত ঘড়ি আর মার জন্য কিছু চুড়ি ও গয়না কিনলে মন্দ হয় না।

ভাই-বোনের জন্য

ছোট দুই ভাই-বোনকে নিয়ে আদ্রিতার অনেক স্বপ্ন। ছোট ভাই অনিককে সে অনেক বড় ইঞ্জিনিয়ার বানাতে চায়। আর ছোট বোন আনিকাকে ডাক্তার। তাঁর ছোট ভাই অনিক অনেকদিন ধরে একটি আবদার করছে যে তাকে একটি ভিডিও গেমস প্লেয়ার কিনে দিতে হবে এবং সেটাই অনিককে এই পহেলা বৈশাখে উপহার দেবে বলে ঠিক করেছে আদ্রিতা। আর ছোটবোন আনিকার একটাই চাওয়া যে তাকে একটি স্মার্টফোন কিনে দিতে হবে। তাই তাকেও একটি স্মার্টফোন উপহার দেবে।

নিজের জন্য

নিজের জন্য আদ্রিতার তেমন কোন চাওয়া নেই। তাঁর সব চাওয়া শুধু বাবা-মা, ভাই-বোনদেরকে নিয়েই। সবসময় তাঁদের মুখে হাসি দেখতে চায় আদ্রিতা। তবে এবারের পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সে ঠিক করেছে যে নিজের জন্য কয়েকটা শাড়ি, কিছু কাপড়-চোপড়, অঙ্গসজ্জা ও রূপসজ্জার কিছু জিনিস কিনবে। চাকরির ব্যস্ততার কারণে পরিবারকে ভালভাবে সময় দিতে পারে না সে। তাই পহেলা বৈশাখে সারাদিন শুধু পরিবারের সাথেই কাটাবে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে সারাদিন ঘুরোঘুরি ও খাওয়া দাওয়া করে উপভোগ করবে দিনটিকে।

আদ্রিতার মতোই আমাদের অনেকের জীবনে পহেলা বৈশাখ এভাবেই আসে। নিজের উপার্জিত টাকা দিয়ে পরিবারে অবদান রাখতে পারা আর পরিবারের সবাইকে পহেলা বৈশাখের দিন উপহার দেওয়ার মধ্যে যে সুখের অনুভূতি পাওয়া যায় তার তুলনা পৃথিবীর আর কোনকিছুর সাথেই করা যায় না। সকল কর্মজীবী নারীর জীবনে পহেলা বৈশাখ নিয়ে আসুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি।

লিখেছেন- হসিয়া খংপডা

0 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort