ওভারিয়ান সিস্ট - Shajgoj

ওভারিয়ান সিস্ট

os

সন্তান গ্রহণে ইচ্ছুক মায়েদের নতুন দুশ্চিন্তার নাম ওভারিয়ান সিস্ট। আজকাল অনেক বেশি আল্ট্রাসাউন্ড করানোর ফলে এই সিস্ট আগের তুলনায় বেশি সনাক্ত করা যাচ্ছে। আমাদের ধারনা সিস্ট মানেই ক্যান্সার। আসলেই কি তাই? অজানা আশঙ্কা দূর করতেই জেনে নিন ওভারিয়ান সিস্টের বিস্তারিত।

ওভারিয়ান সিস্ট কি?

ওভারিয়ান সিস্ট হলো ওভারিতে থাকা ফ্লুইডযুক্ত থলে, যা ওভারিতেই সৃষ্টি হয়। ওভ্যুলেশনের তৈরি হওয়া এ সকল সিস্ট কিন্তু আসলে ক্যান্সার নয়। এগুলোকে বলা হয় ফাংশনাল সিস্ট। সৃষ্টি হওয়ার তিন থেকে দশ মাসের মধ্যে এগুলো আপনা আপনি ছোট হয়ে যায়। কিন্তু এগুলো কেন তৈরি হয়? কারণ প্রতি মাসে ডিম্বানু তৈরি করা ওভারি বা ডিম্বাশয়ের সাধারণ কাজ। ওভ্যুলেশনের সময় ওভারির ভেতরে সিস্টের মতো দেখতে ফলিকলের সৃষ্টি হয়। ডিম্বাণু নিঃসরণের পর পরিণত ফলিকল গুলো নষ্ট হয়ে যায়। যদি এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াটি ঠিক ঠাক না চলে তবেই ওভারিয়ান সিস্ট দেখা দিতে পারে। যদিও এগুলো অধিকাংশ সময়ই নন ফাংশনাল বা ফিজিওলজিক, তবে সন্তান ধারনে সক্ষম, এমন চার থেকে দশ শতাংশ মহিলা একটু জটিল প্রকৃতির সমস্যা ‘ পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে’ বা পিসিও তে ভোগেন, যার প্রধান বৈশিষ্ট্য একাধিক সিস্ট।

ওভারিয়ান সিস্টের কারণঃ

• অনিয়মিত ঋতুচক্র শুরু হলে

• বন্ধ্যাত্ব

• বংশগত ইতিহাস

• ১১ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সে ঋতুচক্র শুরু হলে

• হরমনাল ইমব্যালান্স

• শরীরের উপরের অংশে বেশি মেদ জমলে

ওভারিয়ান সিস্টের লক্ষণঃ

সাধারণ ভাবে কোন লক্ষণ দেখা যায় না। রুটিন চেক আপ অথবা আলট্রাসাউন্ডের ফলে ধরা পড়তে পারে। কিছু উপসর্গ আছে যা অন্য অনেক সমস্যার সময়ও হতে পারে, যেমন- অ্যাপেন্ডিসাইটিস, পিত্তথলির পাথর, কিডনি পাথর, আলসার বা ইন্টেসটিনাল ইনফেকশন ইত্যাদি।

অন্য সকল ওভারিয়ান সিস্টের লক্ষণের মধ্যে আছেঃ

তলপেটে ব্যথা, অনিয়মিত ঋতুচক্র, ইন্টারকোর্সের পরে পেলভিক পেইন, প্রস্রাবে ব্যথা, বমি বমি ভাব, রক্তপাত ইত্যাদি।

ওভারিয়ান সিস্টের সনাক্তকারী পরীক্ষাঃ

• পেলভিক এক্সামঃ পেলভিক এক্সামের মাধ্যমে ওভারিয়ান সিস্ট ধরা পড়তে পারে। সিস্টের সন্দেহ থাকলে আল্ট্রাসাউন্ড করাতে হবে।

• পেলভিক আল্ট্রাসাউন্ডঃ এটি সিস্টের অস্তিত্ব ও তার প্রকৃতি জানান দেয়।

• ল্যাপারোস্কোপিঃ এটি সিস্টের ডায়াগোনিসিস ও চিকিৎসায় বেশ কার্যকরী।

প্রতিকারঃ

যদি তেমন কোন লক্ষণ না থাকে বা আল্ট্রাসাউন্ডেও বিশেষ কিছু ধরা না পড়ে তাহলে ৬ সপ্তাহ পরে আর একবার পেলভিক এক্সাম ও আল্ট্রাসাউন্ড করিয়ে দেখা প্রয়োজন। সময়ের সাথে সাথে সেটি নষ্ট-ও হয়ে যেতে পারে। যদি ফাংশনাল সিস্ট হয় এবং সামান্য উপসর্গ থাকে তাহলে চিকিৎসকেরা সাধারণত ঔষধ দেয় যেন হরমোন লেবেলের তারতম্য ঘটিয়ে সিস্টের আকার ছোট করা যায়। আকার বেশি বড় হলে ও ব্যথা হলে অপারেশন করতে হতে পারে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকেরাই সর্বোত্তম ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

প্রতিরোধঃ

• কিছু উপায় আছে যাতে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যা কিছুটা কমিয়ে দেয়া যায়;

• পরিমিত ও সুষম আহার

• ব্যায়াম ও বিশ্রাম

• অতিরিক্ত চাপ না নেয়া বা চাপ মুক্ত থাকা

• হরমোনাল ব্যালেন্স বজায় রাখা। প্রয়োজনে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বা ঔষধ হরমোনাল ব্যাল্যান্সের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

• সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি

ওভারিয়ান সিস্ট হলেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সচেতনতা ও সময়নুযায়ী চিকিৎসায় আপনাকে দিতে পারে

এ সমস্যা থেকে মুক্তি।

লিখেছেনঃ বৈশাখী

ছবিঃ স্মিতাসডেস্ক.ব্লগস্পট.কম

19 I like it
2 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort