ডাস্কি বা শ্যামলা স্কিনটোনে পারফেক্ট মেকআপ লুক কীভাবে ক্রিয়েট করবেন?

ডাস্কি বা শ্যামলা স্কিনটোনে পারফেক্ট মেকআপ লুক কীভাবে ক্রিয়েট করবেন?

1 (26)

যাদের স্কিনটোন একটু শ্যামলা, তারা সব সময়ই কনফিউজড থাকেন কীভাবে মেকআপ করলে ন্যাচারাল বিউটি আরও এনহ্যান্স হবে। বিশেষ করে ওয়েডিং মেকওভার নিয়ে একটু টেনশন থাকে! কালের বিবর্তনে মেকআপ ট্রেন্ডে এসেছে পরিবর্তন। একটা বিষয় হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে আগে ব্রাইড যদি ডার্ক স্কিনটোনের হতো, লাইট শেইডের ফাউন্ডেশন বা ফেইস পাউডার ইউজ করে একদম ফর্সা করে দেওয়ার একটা ট্রেন্ড ছিলো। সময় বদলেছে। ডাস্কি বা শ্যামলা স্কিনটোন এর যে আলাদা সৌন্দর্য আছে, সেটা কিন্তু অস্বীকার করার সুযোগ নেই!

ইদানিং ন্যাচারাল মেকআপ লুক বেশ ট্রেন্ডি। স্কিনটোনের উপর বেইজ করে মেকওভার ডিফারেন্ট হয়। ডাস্কি বা শ্যামলা স্কিনটোন হলেও গায়ের রঙ এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মানানসই লুক দেওয়া হয়। আর এতেই কিন্তু ন্যাচারাল বিউটি এনহ্যান্স হয়। প্রতিটা স্কিনটোন সুন্দর। সব ধরনের লুকই আপনাকে মানাবে যদি পারফেক্টলি সেটা ক্যারি করতে পারেন। সাজ কেমন হবে এটা অকেশন, আউটফিট এগুলোর উপর অনেকটাই ডিপেন্ড করে। এই ধরনের স্কিনটোনে পারফেক্ট মেকআপ লুক কীভাবে ক্রিয়েট করবেন, চলুন জেনে নেই।

ডাস্কি বা শ্যামলা স্কিনটোনে মেকআপ

ক্লেনজিং ও স্কিন প্রিপারেশন

ফেইস ওয়াশ

আপনার স্কিনটোন যেমনই হোক না কেন, রেগুলার ক্লেনজিং এবং সপ্তাহে দু’ একবার এক্সফোলিয়েশন খুব জরুরি। এতে মেকআপ বেইজে স্মুথ ফিনিশিং আসে৷ মেকআপ শুরুর আগে ভালোভাবে স্কিন প্রিপেয়ার করে নিন। ক্লেনজিং এর পর পছন্দের টোনার অ্যাপ্লাই করে নিন। এবার ময়েশ্চারাইজার ইউজ করুন আর দিনের বেলা হলে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করতে ভুলবেন না। ও হ্যাঁ, মেকআপ শুরুর সময় প্রাইমার স্কিপ করা যাবে না। প্রাইমার পোরসের ভিজিবিলিটি কমিয়ে আনে এবং মেকআপ লুক লং লাস্টিং করে।

 

রাইট ফাউন্ডেশন সিলেকশন

এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা স্টেপ। ফাউন্ডেশন সিলেক্ট করার উপর ফাইনাল ফিনিশিং অনেকটাই ডিপেন্ড করে। আপনার স্কিনটোনের কাছাকাছি শেইড চুজ করবেন। যদি তার থেকে কয়েক শেইড লাইট নেন, তাহলে বেইজ মেকআপ প্যাচি ও আর্টিফিশিয়াল দেখাবে। কারেক্ট শেইডের জন্য প্রয়োজন হলে দু’টি ডিফারেন্ট শেইডের ফাউন্ডেশন মিক্স করতে পারেন।

টিপস অ্যান্ড ট্রিকস

১) যদি ফাউন্ডেশনের শেইড লাইট হয়ে যায়, তাহলে স্কিনের কালারের সাথে ম্যাচ করে এক বা দুই শেইড ডিপ কনসিলার মিলিয়ে ফেইসে অ্যাপ্লাই করতে পারেন।

২) যাতে স্কিন প্যাচি না দেখায় সেজন্য ফাউন্ডেশনের সাথে সামান্য পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার মিশিয়ে নিন৷ এরপর ফাউন্ডেশন ব্রাশের সাহায্যে ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন। ভেজা বিউটি ব্লেন্ডার বা স্পঞ্জ দিয়ে ভালোভাবে স্কিনে ব্লেন্ড করুন, এতে স্কিন স্মুথ দেখাবে। ড্রাই স্কিনের জন্য এই স্টেপটি দারুণ কার্যকরী।

ডাস্কি বা শ্যামলা স্কিনে মেকআপ

৩) আরেকটি বিষয় হলো নেক এরিয়াতেও সেইম ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করতে হবে এবং সেটাও যেন অবশ্যই স্কিনটোনের সাথে ম্যাচ করে। না হলে ফেইস আর নেক এরিয়াতে দুই ধরনের শেইড দেখতে বেমানান লাগবে। ডাস্কি বা শ্যামলা স্কিনটোনের জন্য যেটা বেশ কমন প্রবলেম।

৪) এটা যদিও সবাই জানেন, তাও একবার মনে করিয়ে দেই। অয়েলি স্কিনের জন্য ম্যাট বা ওয়াটার বেইজড আর ড্রাই স্কিনের জন্য ক্রিম বেইজড ডিউয়ি ফাউন্ডেশন সিলেক্ট করবেন।

কালার কারেক্টর ও কনসিলার

ডার্ক স্কিনটোনে কালার কারেকশনের জন্য অরেঞ্জ বা পিচ কালারের কনসিলার বা কারেক্টর বেস্ট কভারেজ দেয়। আপনার ফেইসে যে ডার্ক স্পটস বা ডিসকালারেশন আছে, কালার কারেক্টর সেটা নিউট্রিলাইজ করতে হেল্প করে। চোখের নিচে বা হাইলাইটেড ফেইস ফিচারে একদম লাইট শেইডের কনসিলার না দিয়ে ফাউন্ডেশনের থেকে এক শেইড লাইট কনসিলার অ্যাপ্লাই করুন। এতে ওভারঅল মেকআপ লুক ন্যাচারাল দেখাবে।

কনসিলার

আই মেকআপ লুক

যেকোনো মেকওভারে যে বিষয়টিকে আলাদাভাবে প্রায়োরিটি দেওয়া হয়, সেটা হলো আই লুক। পারফেক্ট আই লুক আপনাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। প্রথমে আইশ্যাডো প্রাইমার দিয়ে নিবেন, এতে আই মেকআপ লং লাস্টিং হয় এবং আইশ্যাডো স্মুথলি বসে যায়। যদি শ্যাডোর পিগমেন্ট ভালো হয়, তাহলে আই প্রাইমার না দিলেও চলে। আপনার ড্রেসের কালার কেমন ও লিপ কালার কোনটা ইউজ করবেন; সেটা মাথায় রেখে সেই অনুযায়ী আইশ্যাডো শেইড চুজ করতে হবে।

 

টিপস অ্যান্ড ট্রিকস

১) ডাস্কি বা শ্যামলা স্কিনটোনে বোল্ড পার্পেল, কপার কাটক্রিস, ন্যাচারাল পিচ, ডার্ক ব্লু এই আই মেকআপ লুকগুলো ইজিলি ট্রাই করতে পারেন। তবে চোখের সাজের ক্ষেত্রে সিলভার, হোয়াইট, বেবি পিংক এই কালারগুলো এড়িয়ে চলুন।

২) যদি আই লুক বেশি হাইলাইট করতে চান, সেক্ষেত্রে একটু লাইট শেইডের লিপ কালার ট্রাই করুন৷ আই মেকআপ আর লিপ কালার যদি দু’টোই খুব ডিপ হয়; তাহলে সাজে ব্যালেন্স আসবে না। যেমন- স্মোকি বা কাটক্রিস আই মেকআপের সাথে ঠোঁটে ন্যাচারাল শেইড ইউজ করলে দেখতে সুন্দর লাগে। আর চোখের সাজ সিম্পল বা নিউট্রাল হলে লিপসে ডার্ক শেইডের লিপস্টিক ট্রাই করতে পারেন।

ডাস্কি বা শ্যামলা স্কিনটোনে মেকআপ

৩) আই মেকআপকে কমপ্লিট করতে আইলাইনার, কাজল ও মাশকারা অ্যাপ্লাই করুন। শ্যামলা মেয়েদের কাজল কালো চোখ দেখতেও মায়াবী লাগে। একটু ড্রামাটিক মেকআপ লুক ট্রাই করলে ফেইক আইল্যাশ ইউজ করতে ভুলবেন না।

লিপ কালার

আগেই বলেছি আই লুক আর লিপ কালারের মধ্যে ব্যালেন্স রাখতে হবে। যদি ঠোঁট বেশি ডার্ক হয়, তাহলে আগে অল্প একটু ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিবেন। এরপর লিকুইড লিপস্টিক বা যেকোনো লিপস্টিক ইউজ করুন, তাহলে কালার ভালোভাবে ফুটবে। স্কিনটোন অনুযায়ী লিপস্টিক শেইড বাছাই করুন। শ্যামলা মেয়েরা একটু কনফিউজড থাকে যে কোন শেইডের লিপস্টিক তাদের ভালো মানাবে। আসলে যেকোনো শেইডই আপনাকে মানাবে যদি সেটা পারফেক্টলি আপনি ক্যারি করতে পারেন।

টিপস অ্যান্ড ট্রিকস

১) লাল লিপস্টিক ট্রাই করতে চাইলে ব্রিক রেড, ব্লাড রেড, মেরুন রেড এগুলো ট্রাই করুন। শ্যামলা স্কিনটোনের সাথে এই ধরনের লিপস্টিক খুব ভালো মানায়। তবে নিওন অরেঞ্জ, ব্রাইট রেড এগুলো এড়িয়ে চলুন।

২) মিডিয়াম বা ট্যানড স্কিনে রোজ বা ডাস্টি পিংক, কোরাল, ম্যাজেন্টা খুব ভালো লাগে। আর শ্যাম বর্ণের হলে ডিপ শেইডের কালার বেছে নিন, যেমন- ওয়াইন, ডার্ক ম্যাজেন্টা, প্লাম (গাঢ় জাম) কিংবা বেরি।

৩) যারা মনে করেন শ্যামবর্ণ হলে ন্যুড লিপস্টিকে মানাবে না, তারা চকোলেট ব্রাউন, মভ, ক্যারামেল ন্যুড এগুলো একবার ট্রাই করেই দেখুন।

৪) উইকলি একদিন লিপ এক্সফোলিয়েট করুন এবং লিকুইড লিপস্টিক অ্যাপ্লাইয়ের আগে অবশ্যই লিপবাম দিয়ে ঠোঁট ময়েশ্চারাইজ করে নিন।

ব্লাশ ও হাইলাইটার

শ্যামবর্ণের সাথে মভ কালারের ব্লাশ বেশ ভালো মানায়। বেরি, প্লাম, বাবলগাম পিংক, ব্রাউনিশ পিংক এই ধরনের কালারও দারুণ স্যুট করে। খেয়াল রাখুন রঙের ব্লেন্ডিংটা যাতে স্মুথ ও পারফেক্ট হয়, ফেইসে অতিরঞ্জিত না লাগে! কমলা বা বেবি পিংক টাইপের শেইড এড়িয়ে চলুন। আর হাইলাইটার হিসাবে দিতে পারেন গোল্ড, শ্যাম্পেইন বা ব্রোঞ্জ কালার।

লাস্টে বলতে চাই, নিজের স্কিনটোন নিয়ে কমফোর্টেবল থাকুন। আপনাকে সব লুকই মানাবে, জাস্ট ভালোভাবে ক্যারি করুন এবং কনফিডেন্ট থাকুন। ডাস্কি বা শ্যামলা স্কিনটোনে পারফেক্ট মেকআপ লুক কীভাবে ক্রিয়েট করবেন, সেটা জানা হয়ে গেলো। অনলাইনে অথেনটিক মেকআপ প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের কয়েকটি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ণ মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে এবং চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

 

ছবি- সাজগোজ

23 I like it
4 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort