কুকুর ছানা । ভিন্ন শখ ! (পর্ব-১) - Shajgoj

কুকুর ছানা । ভিন্ন শখ ! (পর্ব-১)

dog puppy

“জীবে প্রেম করে যেই জন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর।।”

-স্বামী বিবেকানন্দ

কথায় বলে যে জীব-প্রেমে মত্ত, তার মন উদার-সরল। সবার মধ্যে জীব প্রেম থাকলেও সেটা অনেকসময় পালন করা সম্ভব  হয়ে উঠে না। নানান ধরনের পোষা প্রাণীর শখ যেমন- অ্যাক্যুরিয়াম-এ মাছ, পাখি পোষা, বিড়াল ইত্যাদির সাথে সাথে কুকুর পালার শখটা বেশ দেখা যায়। কথায় বলে কুকুরের মত প্রভুভক্ত আর হয় না। মনিবের চোখেই এরা নিজেদের দেখে। কিন্তু এই দালানকোঠায় ঘেরা শহরে কি করে আপনার শখ পালন করবেন- তাই আজকের বিষয়।

কেন পালবেন?

(১) ভালো বন্ধু

কুকুর পালা নিয়ে নানা জায়গায় নানা কথা আছে। অনেকে সঠিক তথ্য জানে না বলেই পালতেও বিভ্রান্তি করে। বন্ধু হিসেবে এর কোন তুলনা নেই।

ঠিকমতো ট্রেনিং দিলে আপনার ঘরের বিভিন্ন কাজেও এ আপনাকে সাহায্য করবে। ঘরে বয়স্ক কেউ থাকলে তাদের অবসর কাটানোর সবচেয়ে ভালো উপায়  হবে।

Dog

(২) ইনট্রোভার্ট, স্পেশাল চাইল্ড এর ভালো একটা থেরাপি

এছাড়াও যেসব বাচ্চারা একটু চুপচাপ, শান্ত, ইনট্রোভার্ট, স্পেশাল চাইল্ড- তাদের জন্য পোষা কুকুর খুবই ভালো একটা থেরাপি হিসেবে কাজ করবে।

বাইরের দেশে “ডগ থেরাপি” খুবই জনপ্রিয় ও কার্যকরী। এটি বাচ্চাদের মধ্যে স্ট্রং একটা বন্ডিং তৈরি করে। বাচ্চাদের প্রতি একটু বেশি কেয়ারিং হয়ে থাকে এরা।

(৩) চাকরিজীবীদের বাচ্চার ভালো বন্ধু

চাকরিজীবী মহিলারা যারা আছেন তারা তাদের বাচ্চার সাথে একটি কুকুর রেখে গেলে বাচ্চা নিরাপদ ও হাসিখুশি থাকবে পশু হলেও এরা মানুষের মতোই যত্নবান। সবচেয়ে সুবিধা হছে আপনি আপনার নিজের মতো ট্রেনিং দিতে পারবেন। এদের আপনি যা শিখাবেন এরা তাই শিখবে।

অনেকের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি কাজ করে এদের পটি-এর ব্যবস্থা নিয়ে। কিন্তু এদের ঠিকমতো ট্রেনিং দিলে এরা মানুষের মতোই ওয়াশরুম-এ  গিয়ে পটি করবে। এদের খাওয়া-দাওয়া নিয়েও বেশি ভাবতে হয় না। আপনি যা খাওয়াবেন  তাই খাবে। তবে হ্যাঁ, কিছু খাবার আছে যা কুকুরদের জন্য একদমই নিষিদ্ধ সেগুলো দেয়া যাবে না। এদের আপনি যেভাবে রাখবেন তেমনি থাকবে। আদরে মাখোমাখো রাখলে বাদরও হবে!

পজিটিভ সাইড

প্রভুভক্ত  ও পরিবারের একটি অংশ

এটির প্রথম ইতিবাচক হচ্ছে এদের মতো বিশ্বাসী-প্রভুভক্ত আর হয় না। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মতোই এরা পরিবারের একটি অংশ হয়ে থাকে।

এরা পরিবারের সুরক্ষার দায়িত্ব নিজে থেকেই নেবে। কেমন মানুষ আসছে ঘরে সব কিছুতে অলটাইম এলার্ট থাকবে। কুকুর ছেলে হলে ভালো তবে নারচার করে নিতে হবে। মেয়ে কুকুরদের মানুষের মতোই মাসিক হয়। ট্রেনিং না দিলে এরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণও হারিয়ে ফেলে।

dog 2

কখন আনবেন পালতে?

ছোট অবস্থায় কুকুর ছানা আনা ভালো। আপনার কুকুরকে শান্ত রাখতে হলে প্রথম থেকেই ট্রেনিং দিতে হবে। ছোট কুকুর বাচ্চাগুলোকে ট্রেনিং দেয়া সুবিধা। সহজে বুঝে যায়।

যদি আপনি অবিবাহিত হন আর কুকুর নিবেন বলে ভাবছেন, তাহলে অবশ্যই নেয়ার পর ভবিষ্যতে আপনার পার্টনার-এর সাথে আপনার কুকুরটির বন্ধুত্ব করাবেন। কুকুররা তাদের মনিবের জন্য খুবই পোজেজিভ ও কেয়ারিং থাকে। অনেকেই কুকুর অ্যাডপ্ট করে কিন্তু বিয়ে হয়ে গেলে তা অন্য কাউকে দিয়ে দেয় একমাত্র লাইফ পার্টনার-এর সাথে কুকুরের আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয় না বা তারা এক্সেপ্ট করে না বলে। একজন মানব শিশুকে অ্যাডপ্ট করার সময় যেমন অনেক কিছু ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, ঠিক তেমনি একটি পশুর বাচ্চার ক্ষেত্রেও অভিন্ন কিছু নয়। কারণ তারা কোন বস্তু নয় যে আপনার প্রয়োজনের সময়টুকু শুধু থাকবে! ওদেরও একটা জীবন আছে, তাই অবুঝের মতো না নিয়ে বুঝে ওদের অ্যাডপ্ট করাই ভালো।

কীভাবে পালবেন?

কুকুরের মতো কেয়ারিং খুব কম প্রাণীই আছে। অসম্ভব মায়া এদের। কিন্তু এদের দায়িত্বও অনেক। কুকুরকে পশু মনে না করে নিজের বাচ্চার মতো করে যদি পালা যায়, তাহলে নিজের মধ্যে এক অসম্ভব পরিবর্তন আপনি নিজেই দেখতে পারবেন।

এদের মায়াশক্তি এতটাই বেশি যে কোন কথা না বলেও এরা আপনার সব কথা বুঝবে এবং আপনিও বুঝবেন। এরা একটি মানুষের অনেক অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারে। আর আগেই বলেছি- যারা পশুভক্ত, তারা খুবই অন্য মনের মানুষ হয়ে থাকে। কিন্তু অবশ্যই হুজুগে না পড়ে মন থেকে চিন্তা করে ও বুঝে তারপর আপন করুন এই অবুঝ প্রাণীদের।

 

লিখেছেন- শ্রেষ্ঠা

ছবিঃ সাটারস্টক

5 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort