গাউট বা গেঁটে বাত হওয়ার কারণ, ধরণ ও নিয়ন্ত্রণে কী খাবেন?

গাউট বা গেঁটে বাত হওয়ার কারণ, ধরণ ও নিয়ন্ত্রণে কী খাবেন?

গাউট বা গেঁটে বাত - shajgoj.com

কয়েক বছর আগের এক শব-এ-বরাতের ঘটনা। রুটি-হালুয়া আর গরুর মাংস একটু বেশি পারিমাণেই খেয়েছিলেন আমার স্বামী। সকালে ঘুম থেকে উঠেই তিনি বললেন, পায়ে ভীষণ ব্যথা। আমি যেহেতু ডাক্তার, সাথে সাথে শুরু করলাম পরীক্ষা-নিরীক্ষা। দেখলাম পায়ের পাতার নীচের দিকটা (আঙ্গুলের পেছনে) ফুলে আছে, বেশ গরমও বোধ হলো। উনি বললেন, পা টনটন করছে। পা ফেলে হাঁটাতো দূরের কথা, পা স্পর্শ করতে দিতেও উনি নারাজ। পরদিন রক্ত পরীক্ষা করালাম। দেখা গেল রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা অস্বাভাবিক রকমের বেশি। রোগটার নাম গাউট বা গেঁটে বাত । এই ধরনের বাত যা নিরাময় হয় না, তবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে সুস্থ্য জীবনযাপন করা যায়।

গাউট বা গেঁটে বাত এর ধরণ

গাউট বা গেঁটে বাত দুই ধরণের, Acute ও Chronic.

কেন হয় এই বাত? 

স্বাধারণত আমরা যে প্রোটিন খাই তা থেকে রক্তে খুব বেশি ইউরিক এসিড জমে না। এক ধরণের এনজাইম এই এসিড-এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু বেশি পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করতে থাকলে একটি পর্যায়ে রক্তে ইউরিক এসিড জমতে শুরু করে এবং তা অস্থি-সন্ধিতে এক ধরণের কৃস্টাল আকারে থেকে যায়। ফলে সেই স্থানটি ফুলে ওঠে, গরম হয় ও ব্যথার উদ্রেক করে। একিউট গাউট যদিও ধরা পড়ে রাতারাতি, তবে এর প্রক্রিয়াটি শুরু হয় দীর্ঘ দিনের খাদ্যাভ্যাস অথবা জীনগত কারণে।

গাউট - shajgoj.com

গাউট বা গেঁটে বাত থেকে বাঁচতে কি খাবেন?

• রুটি বা পরিমিত ভাত।

• দুধ (ননীমুক্ত)।

• ফল (বিশেষত: চেরি)।

• পেঁপে (কাঁচা পেঁপে অর্ধ – সেদ্ধকরে)।

গাউট বা গেঁটে বাত থেকে বাঁচতে খাবার ভাত ও সবজি - shajgoj.com

• সবজি।

• মিঠা পানির মাছ।

• পুদিনা পাতার রস।

• তেঁতুলের শরবত এবং প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধপানি।

এই বাত থেকে বাঁচতে কি খাবেন না?

• মাংস, হৃৎপিন্ড, কলিজা।

• ব্রয়লার মুরগি ও হাঁসের মাংস।

গাউট বা গেঁটে বাত হলে মাংস, হৃৎপিন্ড, কলিজা ক্ষতিকর - shajgoj.com

• সামুদ্রিক মাছ (ইলিশসহ) ও চিংড়ি।

• মাশরুম।

• এলকোহল।

• ডুবো তেলে ভাজা খাবার।

• ডিমের কুসুম।

• ডাল (বিশেষত, মসুর)।

• ছোলা।

• মাখন।

• মিষ্টি জাতীয় খাবার ও চানাচুর।

• কোমল পানীয় ও আইসক্রিম।

• সবুজ শাক (বিশেষত: পালংশাক ও পুঁইশাক)।

গাউট বা গেঁটে বাত হলে ফুলকফি ও গাজর ক্ষতিকর - shajgoj.com

• গাজর, মূলা, মটরশুটি, ফুলকপি ও পাতাকপি (ক্ষেত্রবিশেষে)।

আমরা কত দিন বাঁচব, তার উপর আমাদের কোন হাত নেই। তবে সুস্থ থাকাটা অনেকাংশে আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও জীবন-যাপন পদ্ধতির উপর নির্ভর করে। কাজেই সচেতন হন, যে কটা দিন বাঁচবেন, জীবনকে উপভোগ করে বাঁচুন।

30 I like it
7 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort