নেইলআর্ট | নখের সাজের নতুন দিক। - Shajgoj

নেইলআর্ট | নখের সাজের নতুন দিক।

nail art

চলতি ফ্যাশনের সাথে তাল মিলাতে  সবাই উদগ্রীব। নখ রাঙ্গানো নতুন কিছু না হলেও নেইল পলিশ হালের ফ্যাশনের একটি অন্যতম অনুষঙ্গ। নেইল আর্ট এর সংযোজন শুধু মাত্র মাত্রাটা একধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। তাই এখন আর শুধু নেইল পলিশ নয় এর সাথে কিশোরী এবং তরুণীরা আগ্রহী হয়ে উঠছে বিভিন্ন ধরনের নেইল আর্ট এর প্রতি।

নেইল আর্টকে ফ্যাশনের একটি আধুনিক ধারা মনে করা হলেও এই ফ্যাশনটি কিন্তু অনেক পুরাতন। ৩০০০ খ্রিঃ পূঃ এ চাইনিজরা নখ রাঙাতে মৌমাছির চাঁকের অংশ, ডিমের সাদা অংশ, জেলাটিন ও ভেজিটেবল ডাই মিশ্রিত এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ ব্যবহার করতো। এই পদার্থ কয়েক ঘন্টা নখে রেখে দিলে গোলাপি এক ধরনের রঙের বিন্যাস দেখা যেত।একই সময়ে ইনডিয়ানরা হেনা দিয়ে নখ রাঙ্গানো শুরু করে যা কিনা মাঝে মাঝে সামাজিক গুরুত্বকেও নির্দেশ করা হতো।আর এই ব্যাপারে মিশরীয়রাই বা বাদ যাবে কেন? মিশরীয় সমাজে নারীরা সামাজিক উচ্চতার ভিত্তিতে নখ রাঙাতো।উঁচু মহলের নারীরা গাঢ় রঙ এবং নিচু মহলের নারীরা অপেক্ষাকৃত হালকা রঙ ব্যবহার করতো।আরেকটা সমাজকে যদি আমরা নেইল আর্ট এর জনক হিসেবে বলতে চাই তাহলে ইনকাদের নাম অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে যারা কিনা শুধুমাত্র ঈগলের প্রতীক চিহ্নিত নখসজ্জায় বিখ্যাত ছিল।ইনকা নারীরা ঈগলের প্রতিকৃতি আঁকতে ভীষণ পারদর্শী ছিল।

নেইল পলিশ এর আধুনিক যুগ শুরু হয় ১৯ শতকে।প্রথম জনপ্রিয় নেইল আর্ট হলো মুন ম্যনিকিউর – চাঁদের মতো একটা অংশ নখের শুরুতে আলাদা করে থাকে এরকম নেইল আর্ট এর উদ্ভব হয়।এরপরে বাজারে নতুন ধরনের নেইল এনামেল নিয়ে আসে রেভলন কোম্পানি এবং ১৩৪০ থেকে এখন বর্তমান কাল পর্যন্ত এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। আর বর্তমানে এই আর্ট হয়ে উঠছে আর ক্রিয়েটিভ এবং ফ্যাশনেবল।শুধুমাত্র রঙ তুলি ছাড়াও এয়ার ব্রাশ, এ্যক্রেলিক নেইল, জেল নেইল ইত্যাদি নেইল আর্টকে উন্নত বৈশিষ্ট্যময় করে তুলেছে।নেইল আর্ট পুরাতন হলেও গ্লামারাস ওয়ার্ল্ড একে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রেখে এর দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করেছে।

পুরো বিশ্ব ঘুরে আসলেও আমাদের বাংলাদেশে বিষয়টা একেবারেই নতুন। তবে দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে ।ধীরে ধীরে হলেও ফ্যাশনের এই ধারাটি এদেশের তরুণীদের মন জয় করে নিচ্ছে, অনেকেই এখন ভীষণভাবে আগ্রহী নেইল আর্টে।এ সময়ে বাংলাদেশে দুই ধরনের নেইল আর্টের ধারা দেখা যাচ্ছে— ফ্রি হ্যান্ড পেইন্টিং ও স্ট্যাম্পিং। ফ্রি হ্যান্ড পেইন্টিং শুধু চিকন ব্রাশের মাধ্যমে পেইন্ট করা আর স্ট্যাম্পিং মূলত স্টিলের প্লেটের ওপর খোদাই করা নকশা রাবার স্ট্যাম্পের মাধ্যমে নখে ফুটিয়ে তোলা ।কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই যে কেউ মার্কেট থেকে প্লেট ও স্ট্যাম্প কিনে এনে বাসায় বসেই করতে পারবে। এ ছাড়া নেইল ডেকোরেশনে অনেক কিছু ব্যবহার করা যায়। যেমন স্টিকার, বিডস,স্টোন,ফয়েল পেপার প্রভৃতি।

নেইল আর্টের পূর্বশর্ত হলো নখের ভালো শেপ, পরিচ্ছন্ন নখ এবং ভালো মানের নেইল পলিশ; অন্যথায় নখে ইনফেকশন হতে পারে। তাই নেইল আর্ট অনুরাগীদের অবশ্যই নখের ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে। শুধু নেইল পলিশ হোক বা নেইল আর্ট হোক— সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার নখের স্বাস্থ্য। তাই প্রতিটি মেনিকিউরের আগে বা পরে ২ দিন গ্যাপ দেয়াটা জরুরি। যারা রেগুলার নেইল আর্ট করেন তাদের ৭ দিনের বেশি একটি ডিজাইন না রাখাই ভালো। যারা অকেশনালি করেন তারা চাইলে ১৫ দিন রাখতে পারেন। এ ছাড়া যাদের নখের গ্রোথ ভালো না বা ভঙ্গুর, তারা চাইলে অ্যাক্রেলিক নেইলস করিয়ে নিতে পারেন যেকোনো ভালো পার্লার থেকে। তারপর যেমন খুশি তেমন সাজিয়ে নিতে পারেন নখকে। তবে নরমাল নখের তুলনায় অ্যাক্রেলিক নেইলসের প্রতি যত্নবান হতে হবে একটু বেশি, না হলে মূল নখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।তাহলে আর দেরি না করে নেইল পলিশ অনুরাগীরা তৈরি হয়ে যান। নখ সাজিয়ে নিজেকে করে তুলুন সবার মাঝে অন্যরকম।

 

লিখেছেনঃ ফোয়ারা ফেরদৌস

ছবিঃ নেইলপেইন্টার বিডি

 

0 I like it
1 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort