টোনার নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা বা মিথ আপনিও বিশ্বাস করছেন না তো?

টোনার নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা বা মিথ আপনিও বিশ্বাস করছেন না তো?

Main 2

অনেকেই আছেন যারা ক্লেনজার ব্যবহারের পর টোনার ছাড়া স্কিনকেয়ার ভাবতেই পারেন না, যেমন আমি। আবার অনেকে আছে যারা হয়তোবা টোনারের গুরুত্ব ঠিকমত জানেন না বা টোনার নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কনফিউশনে থাকেন। এর একটা কারণ হচ্ছে টোনার নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা বা মিথ। অনেকে মনে করেন টোনার শুধু ড্রাই স্কিনের জন্য বা শুধু অয়েলি বা কম্বিনেশন স্কিনের জন্য। আবার অনেকের ধারণা টোনার মানেই সেই আগের দিনের অ্যাস্ট্রিনজেন্ট যা স্কিনে লাগালেই জ্বালাপোড়া করে স্কিন লাল হয়ে যাবে। আজকালকার দিনের টোনার কিন্তু মোটেই সেরকম না। এখন ভিন্ন ভিন্ন ত্বকের জন্য ভিন্ন ভিন্ন টোনার তৈরি করা হয়, পাশাপাশি টোনারের সাধারণ উপাদানের সাথে আরও বিভিন্ন ধরনের উপকারী উপাদান মেশানো থাকে যা ত্বককে হাইড্রেট করে, ম্যাটিফাই করে এবং ত্বকের পিএইচ লেভেল ব্যালেন্স করে। তাই আমাদের আজকের আলোচনায় টোনার নিয়ে সেইসব মিথের চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে যেগুলো আপনি এতদিন শুনে এসেছেন কিন্তু আসলে সেগুলো ভুল।

টোনার নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা বা মিথ

মিথ ১ঃ টোনার শুধু অয়েলি স্কিনের জন্য প্রয়োজন 

স্কিন এক্সপার্টদের মতে টোনারের কাজ মূলত দুইটা।

প্রথমত, ক্লেনজিং এর পরে ত্বকে থেকে যাওয়া কোনো এক্সেস অয়েল বা ইমপিওরিটিস থাকলে সেটাকে রিমুভ করা।

দ্বিতীয়ত, স্কিনের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক করে স্কিনকে স্কিনকেয়ারের পরের ধাপের জন্য প্রস্তুত করা।

এটা ঠিক যে টোনারের উপাদানের মধ্যে অয়েল ব্যালেন্সিং এবং একনে দূর করার উপাদান বেশি থাকলেও ড্রাই বা নরমাল স্কিনের জন্য উপযোগী এমন টোনার এখন বাজারে আছে। আপনাকে শুধু আপনার স্কিনের ধরন ও চাহিদা বুঝে সঠিক টোনারটি খুঁজে নিতে হবে। যেমন- সেনসিটিভ স্কিন হলে রোজ ওয়াটার বা ক্যামোমাইল টোনার ব্যবহার করতে পারেন।

টোনার নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা

মিথ ২ঃ টোনার স্কিনকে ড্রাই করে ফেলে

অনেকের ধারণা টোনার স্কিনকে অনেক ড্রাই করে ফেলে। এটা ভুল। টোনারে যদি অ্যালকোহল থাকে তাহলে সেটা স্কিনকে ড্রাই করবে। আপনার ত্বকের জন্য সেটা অসুবিধাজনক হলে আপনি অ্যালকোহল নেই এমন টোনার ব্যবহার করবেন। টোনার ব্যবহারের পরে যদি স্কিনে টানটান ভাব চলে আসে বা হালকা জ্বালাপোড়া অনুভব করেন, তাহলে বুঝবেন সেটি আপনার ত্বকের জন্য উপযোগী নয়।

মিথ ৩ঃ ক্লেনজার ব্যবহার করলে টোনার ব্যবহার করতে হয় না

অনেকে টোনার ও ক্লেনজারের কার্যকারিতাকে একসাথে গুলিয়ে ফেলেন। মনে করেন ক্লেনজারই ত্বককে পরিষ্কার করছে, টোনারের প্রয়োজন নেই। কিন্তু এই ধারণা ভুল। ক্লেনজিং ও ময়েশ্চারাইজিং এই দুই ধাপের মধ্যকার স্টেপটি হচ্ছে টোনিং। টোনার মূলত ত্বকের পিএইচ লেভেল ব্যালেন্স করে। ক্লেনজিং এর পর স্কিনের পিএইচ লেভেল কিছুটা কমে যায়, সেটাকেই রিস্টোর করে টোনার। আবার সিরাম বা ময়েশ্চারাইজার যেন ত্বকে প্রবেশ করতে সেজন্য ত্বককে তৈরিও করে।

টোনার নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা

মিথ ৪ঃ টোনার মানেই রুক্ষ অ্যাস্ট্রিনজেন্ট

অনেকেই ভাবেন টোনার মানেই অ্যালকোহলে ভরা রুক্ষ একটা জিনিস যেটা স্কিনে লাগালেই স্কিন লাল হয়ে যাবে, স্কিনে ইচিং ফিলিং হবে, তাই ব্যবহার করতে চান না। কিন্তু ঠিকঠাক টোনার লাগালে এসবের কিছুই হবে না। রোজ রোজ স্ক্রাব ব্যবহার না করে একটা লাইট টোনার ব্যবহার করলে কিন্তু সেটা ত্বকের রেগুলার এক্সফোলিয়েটর হিসেবে কাজ করে। ত্বকের উপরের ডেড স্কিন সেল তুলে ফেলে ত্বককে রিনিউ করে। আবার যাদের ত্বক অনেক বেশি অয়েলি তারা স্যালিসাইলিক অ্যাসিড যুক্ত টোনার ব্যবহার করতে পারেন, অন্যদিকে যাদের স্কিন ড্রাই তারা ব্যবহার করবেন ল্যাকটিক অ্যাসিড যুক্ত টোনার।

মিথ ৫ঃ টোনার পোরসকে বন্ধ করে দেয়

স্কিনের পোরস খোলা বা বন্ধ করা যায় এই তথ্যটিও সঠিক নয়। অয়েল, ডার্ট ও ব্যাকটেরিয়া ডেড স্কিন সেলসের সাথে স্টিক হয়ে পোরস ক্লগ করে দিতে পারে। এই পোরস আনক্লগ করার জন্য স্কিন টাইপ অনুযায়ী ক্লেনজার চুজ করতে হবে। ক্লেনজিং এর পর স্কিনের পিএইচ লেভেল ব্যালেন্স করতে সাহায্য করে টোনার। অর্থাৎ শুধু ক্লেনজার যেটা করতে পারে না, টোনার সেটা করে দেয়। এছাড়া স্কিনের পোরস এ থাকা অবশিষ্ট ধুলোময়লা তুলে আনতে পারে টোনার। তাই তখন পোরস ক্লিন থাকে এবং স্কিনকে অনেক রিফাইন মনে হয়।

রাজকন্যা টোনার

মিথ ৬ঃ সেনসিটিভ স্কিনে টোনার ব্যবহার করা যায় না

টোনার নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা বা মিথ এর মধ্যে এটিও একটি। সেনসিটিভ স্কিনে শুধু টোনার নয়, যেকোনো প্রোডাক্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রেই একটু সাবধানী হতে হবে। কারণ টোনার ব্যবহারে স্কিনের অনেকটা উপকার হয়, তাই ভুল ধারণা থেকে টোনার ব্যবহার বন্ধ করে দেয়া ঠিক না। স্কিন সেনসিটিভ হলে খুব জেন্টল যেমন- রোজ ওয়াটার এর মতো টোনার ব্যবহার করতে হবে। অ্যালকোহল ফ্রি, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা প্যারাবেন ফ্রি টোনার বেছে নিতে হবে। বেটা গ্লুকান, হোয়াইট টি এক্সট্র্যাক্ট, গ্লিসারিনের মতো উপাদান আছে এমন টোনার চুজ করতে পারলে বেটার। এছাড়া যেসব টোনারে সিন্থেটিক ডাই ও ফ্রেগ্রেন্স, সোডিয়াম বা অ্যামোনিয়াম লরিল সালফেট আছে, সেগুলো অ্যাভয়েড করতে হবে।

মিথ ৭ঃ টোনার আসলে তেমন কিছু করে না

টোনার দিলে হুট করে স্কিনে কোনো পরিবর্তন বোঝা যায় না বলে কেউ কেউ মনে করেন এটা আসলে তেমন কোনো কাজে আসে না। কিন্তু মূল ব্যাপারটা হচ্ছে টোনার স্কিনের পিএইচ লেভেল ব্যালেন্স তো করেই, সেই সাথে স্কিনে ইনস্ট্যান্ট সুদিং ফিল দেয়, স্কিনকে হাইড্রেট করে। আবার সিরাম বা ময়েশ্চারাইজার যেন স্কিনে ঢুকতে পারে সেজন্য স্কিনকে প্রিপেয়ার করে দেয়। এখনও কি আপনি বলবেন যে টোনার আসলে তেমন কিছুই করে না?

 

এই ছিল টোনার নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা বা মিথ সম্পর্কিত আমাদের আজকের আলোচনা। তাহলে যদি এখনও আপনার স্কিন কেয়ারে টোনার না থেকে থাকে, তাহলে আজই খুঁজে নিন আপনার স্কিনের জন্য উপযোগী সঠিক টোনার আর দেখুন স্কিনের মধ্যে কোনো তফাৎ পান কিনা। অথেনটিক স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার ও মেকআপ প্রোডাক্ট কিনতে পারেন সাজগোজ থেকে। সাজগোজের ৬টি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ণ মল্লিকা, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) এ অবস্থিত। এই শপগুলোতে ঘুরে নিজের পছন্দমতো অথবা অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার দরকারি প্রোডাক্টগুলো।

ছবিঃ সাজগোজ

4 I like it
1 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort