আপনি কি সাইবার বুলিংয়ের শিকার? - Shajgoj

আপনি কি সাইবার বুলিংয়ের শিকার?

shutterstock_bullying_1

এই সময়ে বাচ্চা ছেলেটার হাতেও দেখা যায় ইয়া বড় এক ট্যাব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বেশ আনাগোনা। ফ্রক পরা ঝুটি দোলানো মেয়েটিও দিনের কিছুটা সময় ব্যস্ত থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের খবরা-খবর দিতে, অন্যদের খবর নিতে। যুগটাই ইন্টারনেটের কিনা, প্রযুক্তি সর্বত্র! বাচ্চাদের কথা বলা হলো ইন্টারনেট মিডিয়ার সহজলভ্যতা বোঝাতে। শিশুরাই যখন অবাধে ব্যবহার করতে পারছে, বড় মানুষেরা তো যা ইচ্ছা তাই করতে পারছে তাহলে। এই যাচ্ছে-তাই ব্যবহারের একটা বাজে নমুনা হলো সাইবার বুলিং। সাইবার বুলিং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে যা ভিকটিমকে সামাজিক ও মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত করে দিতে পারে। সাইবার বুলিং কিংবা আরো নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে সোশ্যাল মিডিয়া বুলিং নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর খুব জরুরি এই সময়ে।

সাইবার বুলিং পরিচিতি

ইন্টারনেট মিডিয়ায় একটা মানুষকে বিভিন্নভাবে বিরক্ত, বিব্রত করা বা তার সম্মান নষ্ট করার এক হীন প্রচেষ্টার নামই সাইবার বুলিং। এই বুলিং যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে করা হয়ে থাকে, সেটাকে সোশ্যাল মিডিয়া বুলিং বলা হয়।

অসভ্যদের হাতে হাতে প্রযুক্তি সহজলভ্যতায় এখন বাজারে আছে হরেক রকম বুলিং! সেগুলোর রূপ কেমন হতে পারে, দেখা যাক তাহলে।

  • কোনো পোস্টে কারো সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা
  • কারো আপত্তিকর ছবি পোস্ট করা
  • কোনো ব্যক্তিকে অনবরত উত্যক্ত করে যাওয়া
  • কাউকে অবমাননা করে তার অ্যাকাউন্টের ওয়ালে ছবি পোস্ট করা বা তাকে নিয়ে লেখা
  • কারো অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তা থেকে এবং ঐ ব্যক্তির মানহানি হতে পারে এমন বিষয়বস্তু পোস্ট করা ইত্যাদি।

[picture]

কোন কোন মাধ্যমে চলছে বুলিং?

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফেসবুক রয়েছে সাইবার বুলিংকারীদের পছন্দের শীর্ষে! ফেসবুকের সুবিধাজনক ব্যবহারই এর মূল কারণ। এবং ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কম না। বিকৃত মনের অসংখ্য মানুষ অ্যাকাউন্ট খুলে রেখেছে এই মিডিয়ায় এবং তাদের সময় কাটানোর অন্যতম প্রিয় উপায় হলো অপরকে উত্যক্ত করা!

টুইটার, স্ন্যাপচ্যাট, আস্ক এফএম বা ছবি শেয়ার করার জনপ্রিয় মাধ্যম ইন্সটাগ্রাম, সোশ্যাল মিডিয়া বুলিং অহরহ চলছে এসব জায়গায়। কেননা অসভ্য লোকেরা কোন এক জায়গায় বসে নেই, ছড়িয়ে আছে সমস্ত ইন্টারনেট দুনিয়ায়। একজন নিরীহ মানুষ বুলিংয়ের শিকার হতে পারে যেকোনো সময়, যেকোনো মাধ্যমেই।

কেন হয় বুলিং?

অপরাধ করতে অপরাধীর আসলে খুব জোরদার কারণ লাগে না। সে অপরাধপ্রবণ মানসিকতার হয়ে থাকলে যেকোনো কারণ তৈরি করে নিয়েই অপরাধ ঘটাবে! বিভিন্ন গবেষণা বলে, মানসিকভাবে দুর্বল এবং হীনমন্য মানুষেরা অন্যকে ছোট করতে অযথাই এমন আক্রমণ করে থাকে। আর তাই, সাইবার বুলিং জিনিসটা জোরদার উপায়ে ঠেকানোটা সম্ভব নয়।

সচেতন থাকা চাই নিজের 

কে কিংবা কারা কুৎসা রটাচ্ছে বলে একটা নিরীহ মানুষ অপমানে হতাশ হয়ে যাবে, তা তো হওয়া উচিৎ নয় মোটেও। বাজে ছবি পোস্ট হচ্ছে, কিংবা অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং, দরকারে আশ্রয় নিতে হবে সাইবার সিকিউরিটি আইনের। নিজেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে দিলে চলবে না, অন্তত সাইবার বুলিং নামক আপত্তির সামনে তো নয়ই।

অ্যাকাউন্টের সুরক্ষা নিজের হাতে অনেকটাই। অচেনা মানুষদের সাথে পরিচিতি বাড়াতে সাবধান হতে হবে অনেক। সাবধান হতে হবে যার-তার সাথে নিজের ব্যক্তিগত ছবি শেয়ার করতেও। এবং তৃতীয় কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে গোপন কথা যার সাথে বলা হচ্ছে ম্যাসেজে, সে আদৌ কতটা ভরসা করার মতো, নিশ্চিত হওয়া চাই। মোট কথা, যতটুকু নিজের হাতে আছে তা সর্বোচ্চ ঠিক রাখার চেষ্টা করা চাই আগে।

তারপর না হয় ভাবা যাবে, কোনো অসভ্য মানুষের অসৎ কাজকর্মে নিজেকে কতটা হতাশ করা উচিৎ!

 

ছবি – ডুসামথিং ডট  অর্গ

লিখেছেন –  মুমতাহীনা মাহবুব

0 I like it
1 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort