যত্নে বেড়ে উঠুক শিশু - Shajgoj

যত্নে বেড়ে উঠুক শিশু

baby-care

আজকা্ল শহরে ছোট পরিবারের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। যৌথ পরিবার প্রায় দেখাই যায় না। তাই অনেক সময়ই বাচ্চারা বেড়ে ওঠে একা একা। একারনে কারনে বাচ্চাদের প্রতি মা বাবার অনেক বেশি যত্নশীল হউয়া জরুরি। কিন্তু অনেক সময়ই কাজের ব্যস্ততায় বা পারিপার্শ্বিক চাপে বাচ্চাদের অনেক আচরন এর প্রতি সঠিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারি। যেটা কিন্তু একটি বাচ্চার মানসিক বিকাশের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। আজ এমন কয়েকটি বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে।

প্রত্যেক বাবা মাই চান তাদের সন্তান হবে জিনিয়াস। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এমন কোনও বাঁধা ধরা নিয়ম নেই যেটা অনুসরণ করলেই বাচ্চারা জিনিয়াস হয়ে যাবে। তবে হ্যা, এমন কিছু রুলস আছে, যেগুলো কিনা মানসিকভাবে বাচ্চাকে অনেক বেশি আত্মপ্রত্যয়ী, মানসিক ভাবে দৃঢ় ও ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে।

(১) অনেক পরিবারেই বাচ্চাদের সাহস দেয়ার জন্য বলা হয়, “তুমি সব কিছু করতে পারবে, যদি তুমি সেটা বিশ্বাস করো”। কিন্তু তারচেয়েও ভালো হয়, যদি বাচ্চাকে এটা বোঝানো হয় যে তারা চাইলে নিজেরাই সব কিছু করতে পারে। এতে করে বাচ্চারা বাকি সবার সঙ্গে তাল না মিলিয়ে নিজের মতো করে নিজের ভবিষ্যৎ তৈরি করতে প্রস্তুত হয়।

(২) শিশু যাতে স্বাধীন এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য শিশুর প্রতিটি ভালো কাজের চেষ্টাকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং সেটা চালিয়ে নিয়ে যেতে তাকে সাহায্য করতে হবে। বাচ্চা যেকোনো বয়সে, সে যতই বয়সে ছোট হক না কেন, যদি কোন শখ নিজে থেকে শুরু করে সেখানে তাতে সমর্থন ও সাহস দিতে হবে। যদি অনেক ছোট বাচ্চাও বাগান করতে গিয়ে সেই কাজটা ঠিকভাবে না করতে পারে ( সেটাই স্বাভাবিক), সেখানে তাকে, “বাগান করার মতো বয়স তোমার হয়নি”, এটা বলার চেয়ে তাকে বরং আরেকবার চেষ্টা করতে সহযোগিতা করুন।

[picture]

(৩) বাচ্চাকে ছোট বেলা থেকেই বাড়ির খুঁটিনাটি বা ছোট ছোট কাজ করতে সেখান। এবং সেটা তাকে একা করতে দিন। ভুলেও তার ওপর নজরদাড়ি করতে যাবেন না। হ্যাঁ, তার ওপর খেয়াল রাখতে পারেন, তবে সেটাতে কোনও ধরনের সন্দেহমূলক আচরণ যেন প্রকাশ না পায়। বাচ্চা যদি বুঝতে পারে, আপনি তাকে বিশ্বাস করেন, তখন তার মনেও এক ধরনের আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে।

(৪) বাচ্চাকে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে গিয়ে, তাকে সব কিছু থেকে সরিয়ে রাখবেন না। মাঝে মাঝে তাকে সুযোগ দিন তার নিজের মতো করে থাকবার, একটু অপরিচ্ছন্ন বা নোংরা হলেও কি বা আসে যায়। একই ভাবে বাচ্চা যদি ঘর এলোমেলো করে রাখে, সব সময় তাকে এই নিয়ে বকা ঝকা করবেন। বাচ্চারা জিনিস পত্র এলোমেলো করবেই, সেটাই স্বাভাবিক, তাই সেটাই মেনে নিন। তবে সবসময় তাকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন, জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখাটা কতটা জরুরি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চা নিজেই বুঝতে পারবে।

(৫) অনেক মা-বাবা আছেন, যারা সব সময় বলতে থাকেন, এটা করোনা, ওটা ধরবে না, ওখানে যাবে না। আপনাকে বুঝতে হবে বাচ্চাদের যেহেতু অনেক বেশি এনার্জি থাকে, সেই এনার্জি যদি কোথাও ব্যয় না করা হয়, তাহলে সেটা কিন্তু বাচ্চার জন্যে মোটেও ভালো নয়। তাই বাচ্চা যদি গাছেও উঠতে চায়, তাহলে তাকে আগেই বাধা না দিয়ে শুধু খেয়াল রাখুন সে যাতে পড়ে না যায় বা আঘাত না পায়। এতে করে বড় হয়ে তারা তাদের প্রতিটা কাজের প্রতি অনেক বেশি কনফিডেন্ট ও শক্ত অবস্থান নিতে শিখবে।

(৬) বাচ্চার সব কাজে ও আচরণে সমর্থন দিলেও, একটা সীমারেখা অবশ্যই তাকে মানতে শেখাতে হবে। বাচ্চা ঘরের দেয়ালে রঙ করলে, তাকে আদর করে বোঝানো যেতেই পারে, সে বড় হয়ে অনেক চিত্রশিল্পী হতে পারবে, কিন্তু ঘরের দেয়ালে না একে কাগজে ছবি আকলে অনেক বেশি ভালো হত। কিন্তু বাচ্চা যদি মা-বাবা বা পরিবারের বড় সদস্যকে অপমানমূলক কথা বলে, সেক্ষেত্রে তার আচরণকে কোনও ভাবেই ছেলেমানুষি বলে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। এ ধরনের কাজের জন্যে বাচ্চাকে তার বয়স অনুযায়ী শাস্তি দেয়াটা উচিত, যাতে সে বুঝতে পারে, সে অন্যায় করেছে।

(৭) বাচ্চার কোন কাজ কেই এড়িয়ে যাবেন না। বাচ্চা যদি একটি কাগজে ইচ্ছে মতন রঙ দিয়ে একে এনে দেখায়, বা আপনার জন্যে কিছু তৈরি করে, সেটা যত ছোটই হোক না কেন, সেটা আনন্দের সাথে গ্রহন করুন ও প্রশংসা করুন। শুধু তার সামনেই নয়, পরিবারের অন্যদের সামনেও সেটা তুলে ধরে দেখান এবং সকলের সামনে তার প্রশংসা করুন।

তাই ভালো ভাবে বেড়ে উঠুক সকল শিশু। ভালো থাকবেন সবাই।

ছবি – ফটোগ্রাফারস ডট ক্যানেভেরা
লিখেছেন – মাহবুবা বীথি

3 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort