চুল মজবুত ও তাড়াতাড়ি লম্বা হওয়ার কয়েকটি কার্যকরী তেল

চুল মজবুত ও তাড়াতাড়ি লম্বা হওয়ার কয়েকটি কার্যকরী তেল

চুল মজবুত ও তাড়াতাড়ি লম্বা হওয়ার কয়েকটি কার্যকরী তেল

চুল পড়ার সমস্যাতে পড়েনি এমন কাউকে হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবেনা। চুল তাড়াতাড়ি লম্বা হচ্ছে না এটাও চুলের সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। তবে চুল যদি হয় হেলদি তাহলে চুলের বাকি সমস্যাগুলো আস্তে আস্তে কমে যায়। আর চুলকে হেলদি করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো প্রতিদিন চুলের যত্ন নেয়া। প্রতিদিনের চুলের যত্ন কমিয়ে দিতে পারে চুল পড়ার হার। অনেকেই মনে করেন প্রতিদিন চুলের যত্ন নিতে না জানি কত সময় লাগবে। আসলে এমনটি নয়। তবে চলুন জেনে নেই, চুল মজবুত ও তাড়াতাড়ি লম্বা হওয়ার কয়েকটি কার্যকরী তেল সম্পর্কে!

চুলের গোড়া মজবুত ও তাড়াতাড়ি লম্বা করার কার্যকরী কয়েকটি তেল

চুল পড়ার কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো চুলের গোঁড়া মজবুত না হওয়া। চুলের গোড়া মজবুত করার জন্য প্রয়োজন চুলকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি দেয়া। এর জন্য দরকার নিয়ম করে চুলে তেল দেয়া। বিভিন্ন ধরনের তেল চুলে বিভিন্ন রকমের উপকারিতা দিয়ে থাকে। নারিকেল তেলের পাশাপাশি কোন তেলগুলো ব্যবহার করলে চুলের গোড়া মজবুত হবে তা হয়তো সবার জানা নেই। তাই আজকে আপনাদের সাথে চুলের জন্য উপকারী কিছু তেলের ব্যাপারে শেয়ার করব।

১। ক্যাস্টর অয়েল (Castor oil)

এজন্য ব্যবহার করতে পারেন স্কিন ক্যাফের ক্যাস্টর অয়েল। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। চুল পড়া কমাতে এই তেলটি খুব কার্যকরী। ক্যাস্টর অয়েলের ঘনত্ব অন্যান্য সব হেয়ার অয়েল থেকে একটু বেশি। তাই ক্যাস্টর অয়েলের সাথে অন্য কোন হেয়ার অয়েল মিক্স করে লাগাতে পারেন। এতে করে তেলটির ঘনত্ব কমে আসবে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

ক্যাস্টর অয়েলের সাথে নারিকেল তেল, অ্যাভোকাডো অয়েল, জোজোবা অয়েল মিক্স করা যায়। পরিমাণটা এমন হবে যেন ক্যাস্টর অয়েলের পরিমাণ অন্য হেয়ার অয়েলের ২ ভাগের ১ ভাগ হয়।

এই মিক্সিং এর সাথে ২-৩ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে নিয়ে স্কাল্প এবং চুলে লাগিয়ে কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট অথবা সারা রাত রেখে পরের দিন ধুয়ে ফেলা যায়। এই উপায়ে সপ্তাহে ২-৩ দিন ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করলে আস্তে আস্তে নতুন চুল গজায়। তবে এই ভাবে ১-২ সপ্তাহ লাগিয়েই ফল পাওয়ার আশা করলে হবে না। ১-২ মাস নিয়মিত ব্যবহারে চুলের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে।

হাতে স্কিন ক্যাফে ক্যাস্টর তেল হাতে দাঁড়ানো একজন

২। নারিকেল তেল (Coconut Oil)

আমরা অনেকেই নারিকেল তেলের চিটচিটে ভাবের কারণে লাগাতে চাই না। কিন্তু সবাই জানি নারিকেল তেল কতটা উপকারি আমাদের চুলের জন্য। এজন্য ব্যবহার করতে পারেন স্কিন ক্যাফের কোকোনাট অয়েল। নারিকেল তেল চুলের ময়েশ্চারকে ধরে রেখে চুলের রাফনেস দূর করে। হেয়ার ড্যামেজ কমায় এবং চুলের আগা ফাটা কমায়। এছাড়া সান ড্যামেজ থেকে চুলকে রক্ষা কর আর সব থেকে বড় কথা হলো নারিকেল তেল চুলের পুষ্টি বাড়িয়ে  নতুন চুল গজাতে অনেক সাহায্য করে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

১। নারিকেল তেলের সাথে পরিমাণ মতো অ্যালোভেরা জেল মিক্স করে সেটা স্কাল্প এবং চুলে লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট অথবা সারা রাত অপেক্ষা করুন। এরপর ঘুম থেকে উঠে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।

২। চুল ড্যামেজ হলে তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে যায় এবং যার ফলে লম্বা হয় না সহজে। তাই চুলের ড্যামেজ কমানোর জন্য নারিকেল তেলের সাথে মধু মিক্স করে তা হাল্কা গরম করে ৪০ মিনিট স্কাল্পে লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে।

হাতে স্কিন ক্যাফে কোকোনাট তেল

৩। রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল

এই অয়েল নতুন চুল গজানোর পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, চুলের ড্রাইনেস কমিয়ে খুশকি মুক্ত করে। অল্প বয়সে চুল পাকার মতো সমস্যায় স্কিন ক্যাফের রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল দারুণ কার্যকরী। আর চুল ন্যাচারালি কালো রাখতেও এই তেলের ব্যবহার হয়ে থাকে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

১। এই অয়েলটি ভেজা চুলে ৪-৫ ফোঁটা নিয়ে স্কাল্পে এমন ভাবে ম্যাসাজ করতে হবে যেন সেটা পুরো মাথায় সমান ভাবে লাগানো হয়।

২। জোজোবা অয়েল অথবা নারিকেল তেলের সাথে ২-৩ ফোঁটা  রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল মিক্স করে স্কাল্প এবং চুলে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে দিন অথবা সারাদিন রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৪। টি ট্রি অয়েল (Tea Tree Oil)

হাতে ট্রি টি অ্যাসেনশিয়াল তেল

চুলের পুষ্টির জন্য কার্যকারী একটি তেল স্কিন ক্যাফের টি ট্রি অয়েল। টি ট্রি অয়েল নিয়মিত ব্যবহারে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া কমে আসে।

যেভাবে ব্যবহার করবেন

অনেকেই জানে না যে কীভাবে টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করতে হবে। টি ট্রি অয়েল কখনই অন্য কোন অয়েলের সাথে মিক্স না করে ব্যবহার করা যাবে না।

১। অলিভ অয়েলের সাথে ৪-৫ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগিয়ে তা কমপক্ষে ২০-৩০ মিনিট অথবা সারা রাত রেখে পরের দিন শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে চুলের গোড়া মজবুত হয়ে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল গজাবে।

২। টি ট্রি অয়েল শ্যাম্পুর সাথে ২-৩ ফোঁটা মিক্স করে হাল্কা ম্যাসাজ করে শ্যাম্পু করে নিলে স্কাল্পের ডেডসেল দূর হবে। এতে করে স্কাল্প পরিষ্কার হয়ে হেয়ার গ্রোথ বাড়বে।

চুল ঘন ও তাড়াতাড়ি লম্বা করার জন্য করণীয়

চুল লম্বা হওয়াটা অনেকাংশে হরমোনের ওপর ডিপেন্ড করে। কিন্তু কিছু নিয়ম মেনে চললে চুল ন্যাচারালি লম্বা করা যায়।

১। চুলের আগা ফেটে গেলে চুল যত তাড়াতাড়ি লম্বা হোক না কেন তা নিচে থেকে ভেঙ্গে যায়। এ কারণে চুলের আগা প্রতি তিন মাস পরপর হাফ থেকে এক ইঞ্চি পর্যন্ত কেটে ফেলতে হবে।

২। প্রতিদিন চুল চিরুনি করতে হবে ভালো করে। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে, যা চুলের ন্যাচারাল গ্রোথকে বাড়িয়ে দেয়।

৩। চুলে হেয়ার স্ট্রেইটনার, হেয়ার কার্লার ব্যবহারের কারণে যে হিট দেয়া হয় সেটা চুলের জন্য ক্ষতিকারক। তাই এসব ব্যবহারের আগে হিট প্রটেকটর স্প্রে দিয়ে নিতে হবে চুলে।

৪। হেয়ার সেরাম ব্যবহার করতে হবে সপ্তাহে ২-৩ দিন।

সপ্তাহের সব দিনে কিন্তু আমরা সমান ভাবে সময় পাই না কাজের ব্যস্ততার কারণে। চুলের যত্নের জন্য সময়টাও খুব বেশি পাওয়া যাবে না। কিন্তু প্রতিদিন অল্প করেই যদি সময় তাহলে এটাই অনেক বেশি কাজ করবে চুলের জন্য। চুলে শ্যাম্পু করার পাশাপাশি চুলে তেল দেয়া, হেয়ার প্যাক লাগানো, নিয়মিত চুল আঁচড়ানো, হেয়ার স্পা করা এগুলো হচ্ছে বেসিক হেয়ার কেয়ার। তবে সবগুলো কাজ একদিনে করা সম্ভব না। আমরা যদি হেয়ার কেয়ারের এই কাজগুলো সপ্তাহের একেক দিনে ভাগ করে নেই তবে হেয়ার কেয়ারে খুব বেশি সময় লাগবে না।

তাহলে জেনে নিলেন, চুল মজবুত ও তাড়াতাড়ি লম্বা হওয়ার কয়েকটি কার্যকরী তেল সম্পর্কে! চুল গজাতে এবং চুল লম্বা করতে হেয়ার অয়েলের বিকল্প নেই। প্রতিদিন একটু করে যত্নই কিন্তু চুলকে করবে দীর্ঘ সময়ের জন্য মজবুত, ঘন এবং লম্বা।

স্কিন ও হেয়ার কেয়ারের জন্য অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে চাইলে আপনারা সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ ভিজিট করতে পারেন, যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, সুন্দর থাকবেন।

57 I like it
9 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort