যোগাসনের নিয়মকানুন | ১৬টি ইয়োগা টিপস জেনে থাকুন সুস্থ!

যোগাসনের নিয়মকানুন | ১৬টি ইয়োগা টিপস জেনে থাকুন সুস্থ!

যোগাসনের নিয়মকানুন মেনে যোগাসন করছেন

যোগাসনের নিয়মিত অভ্যাস সুস্থ ও সবলভাবে শারীরিক ও মানসিক ক্ষমতা সৃষ্টির মাধ্যমে আপনাকে সফলতা পেতে সাহায্য করবে ঠিকই, তবে সফলতার জন্য চাই সঠিক নিয়মে যোগাসন অভ্যাস। তাই চলুন যোগব্যায়াম শুরু করার আগে জেনে নেওয়া যাক যোগাসনের নিয়মকানুন নিয়ে বিশদ আকারে।

সুস্থ থাকতে যোগাসনের নিয়মকানুন

০১. ৫/৬ বছর বয়স থেকে শুরু করে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত যোগ ব্যায়াম অভ্যাস করা যায়। শুধু প্রয়োজন অনুযায়ী কয়েকটি আসন বেছে নিতে হবে। সব বয়সে সব রকম আসন করা যায় না। অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদের কোন আসন দুইবারের বেশি করা ঠিক নয়। ছেলেদের ১৪/১৫ বছর বয়সের পূর্বে আর মেয়েদের ঋতু প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত প্রাণায়াম ও মুদ্রা অভ্যাস করা উচিত নয়।

০২. সকাল, সন্ধ্যা ও গোসলের পূর্বে বা রাতে যেকোনো সময় যোগ ব্যায়াম করা যায়। তবে সে সময় যেন ভরপেট না থাকে। অল্প কিছু খেয়ে আধ ঘন্টা পরে আসন করা যেতে পারে, কিন্তু প্রাণায়াম বা মুদ্রা খালি পেটে অভ্যাস করাই বাঞ্ছনীয়। প্রাতঃক্রিয়াদির পর আসন করা ভালো। তবে যাদের কোষ্ঠবদ্ধতা, পেট ফাঁপা প্রভৃতি রোগ আছে, তারা সকালে ঘুম থেকে উঠেই বিছানায় কয়েকটি নির্দিষ্ট আসন ও মুদ্রা করতে পারে। যাদের অনিদ্রা রোগ আছে, রাতে খাবার পর শোবার পূর্বে কিছুক্ষণ বজ্রাসন করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ভরপেট খাওয়ার পরও কিছুক্ষণ বজ্রাসনে বসলে খাদ্য হজম বা পরিপাকক্রিয়া সহজতর হতে পারে।

০৪. আসন, মুদ্রা বা প্রাণায়ামে একটি ভঙ্গিমায় বা প্রক্রিয়ায় একবারে যতটুকু সময় সহজভাবে করা যায় বা থাকা যায়, ঠিক ততটুকু সময় করা বা থাকা বাঞ্ছনীয়। তবে কোন ক্ষেত্রে কয়েকটি নির্দিষ্ট আসন ছাড়া একবারে এক মিনিটের বেশি থাকা উচিত নয়। পদ্মাসন, ধ্যানাসন, সিদ্ধাসন ও বজ্রাসনে ইচ্ছেমতো সময় নেওয়া যেতে পারে।

০৫. একবারে ৭/৮ টির বেশি আসন অভ্যাস করা ঠিক নয়। আসনের সঙ্গে বয়স অনুযায়ী ও প্রয়োজন মত দু’একটি প্রাণায়াম, মুদ্রা অভ্যাস করলে অল্প সময়ে আরো ভালো ফল পাওয়া যায়। এক একটি আসন বা মুদ্রা অভ্যাসের পর প্রয়োজন মত শবাসনে বিশ্রাম নিতে হবে। ৫ /৭ মিনিট খালি হাতে কিছু ব্যায়ামের পর আসন বা মুদ্রা করলে ফল খুব দ্রুত পাওয়া যায়। কিন্তু কোন শ্রমসাধ্য কাজ বা ব্যায়ামের পর বিশ্রাম না নিয়ে কোন প্রকার যোগ ব্যায়াম করা উচিত নয়। সপ্তাহে একদিন বিশ্রাম নেয়া উচিত।

০৬. আসন অভ্যাসকালে জোর করে বা ঝাঁকুনি দিয়ে কোন ভঙ্গিমা বা প্রক্রিয়া করা ঠিক নয়। আসন অবস্থায় মুখে যেন কোন বিকৃতি না আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

০৭. আসন অভ্যাসকালে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু মুদ্রা বা প্রাণায়ামে নিয়মানুযায়ী শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

০৮. কম্বল, প্যাড বা পাতলা তোষকের উপর আসন অভ্যাস করা বাঞ্ছনীয়। শক্ত মাটি বা পাকা মেঝেতে অভ্যাস করলে যেকোনো সময়ে দেহে চোট লাগতে পারে।

০৯. আলো-বাতাসহীন বা বদ্ধ ঘরে যোগ ব্যায়াম অভ্যাস করা ঠিক নয়। এমন জায়গায় অভ্যাস করার চেষ্টা করতে হবে, যেখানে বায়ুর সঙ্গে প্রচুর অক্সিজেন নেয়া যায়।

১০. ১২/১৩ বছরের উপর এবং ৪৫ /৪৬ বছরের নীচে (স্বাস্থ্যানুযায়ী বয়সসীমা কম-বেশি হতে পারে) মেয়েদের স্বাভাবিক কারণে মাসে ৪ /৫ দিন কোন আসন করা ঠিক নয়। তবে ধ্যানাসন, শবাসন প্রভৃতি অভ্যাস করা যায়।

১১. মেয়েদের ক্ষেত্রে সন্তানসম্ভবা হলে তিন মাস পর্যন্ত কিছু সহজ আসন বা প্রাণায়াম করা যেতে পারে, কিন্তু মুদ্রা অভ্যাস একেবারে করা উচিত নয়। সন্তান প্রসবের তিন মাস পর আবার ধীরে ধীরে সব আসনাদি অভ্যাস করা বাঞ্ছনীয়। গর্ভাবস্থায় সকাল ও সন্ধ্যায় খোলা জায়গায় পায়চারি করা বিশেষ উপকারী।

১২. আসনাদি অভ্যাসকালে এমন কোন পোশাক পরা উচিত নয় যাতে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।

১৩. যোগ-ব্যায়াম অভ্যাসকালে কথা বলা বা অন্যমনস্ক হওয়া ঠিক নয়। কারণ মনের সঙ্গে দেহের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ যোগ ব্যায়ামের মূলমন্ত্র। একাগ্রতাই অভীষ্ট ফল এনে দিতে পারে।

১৪. যোগ ব্যায়ামে তাড়াতাড়ি ফল পাবার আশা করা ঠিক নয়। এতে বিশ্বাস ও ধৈর্য্যের একান্ত প্রয়োজন। নিয়মিত ও নিয়মমতো যোগ-ব্যায়াম অভ্যাসে সুফল আসবেই।

১৫. যদি তামাকের অভ্যাস বা মাদসাক্তি থাকে, বর্জন করুন।

১৬. যতটা সম্ভব মন প্রফুল্ল রাখা বাঞ্ছনীয়। কুচিন্তা বা দুশ্চিন্তা যেন মনে না আসে।

এই তো জানা হয়ে গেলো যোগাসনের নিয়মকানুন । তাহলে এবার যোগব্যায়াম শুরু করে দিন যোগাসনের নিয়মকানুন জেনে আর নিজের উপর আস্থা রেখে এগিয়ে যান। সফলতা আপনার হাতের মুঠোয়।

 

ছবিঃ সংগৃহীত – medicotripindia.com

110 I like it
28 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort