রূপ এবং স্বাস্থ্য রক্ষায় পালং শাকের ১৩টি উপকারিতা! - Shajgoj

রূপ এবং স্বাস্থ্য রক্ষায় পালং শাকের ১৩টি উপকারিতা!

TS-493802817-Fresh-Spinach

শাক সবজি বলতেই পুষ্টিগুণে ভরপুর সেটা আমরা সবাই জানি। পালং শাকও এর ব্যতিক্রম নয়। ক্যারোটিন, এমিনো এসিড, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ, সি, কে, এবং বি কমপ্লেক্স, কী নেই এতে? বিভিন্ন পুষ্টি গুণে ভরপুর এই শাকটি যেমন আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে শরীর ফিট রাখতে সাহায্য করে তেমনি রূপচর্চায়ও এর জুড়ি নেই। বাজারের ক্ষতিকর কেমিকেলের প্রোডাক্ট ব্যবহারের চাইতে প্রাকৃতিক জিনিস ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই আর তা যদি হয় প্রয়োজনীয় সব ভিটামিনে সমৃদ্ধ এমন একটি সবজি তাহলে তো কথাই নেই। তাই আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষা এবং রূপচর্চায় পালং শাকের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আজ আপনাদের জানাবো।

[picture]

ত্বক ও চুলের যত্নে পালং শাক:

– ব্রণের সমস্যা দূর করে স্বাস্থ্যজ্জ্বল ত্বক পেতে পালং শাক কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। সেক্ষেত্রে পালং শাক দিয়ে ফেইস মাস্ক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। পরিমাণ মতো পালং শাক এবং পানি নিয়ে ব্লেন্ডারে ভালো মতো ব্লেন্ড করে নিন যেন মিশ্রণটি পেস্টের মতো হয়। এটি মুখে সমান ভাবে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই ফেইস মাস্কটি ত্বকের রোমকুপে জমে থাকা ময়লা ভিতর থেকে পরিষ্কার করে ত্বক উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করে তোলে।

– সুন্দর, মসৃণ ত্বক পেতে পালং শাক এবং অন্যান্য সবজি মিশিয়ে ভেজিটেবল জুস বানিয়ে খেতে পারেন। অর্ধেক টমেটো, ১/৪ শশা, একটি গাজর, আধা কাপ বাঁধাকপি এবং এক কাপ পালং শাক এবং পানি দিয়ে ভালো মতো ব্লেন্ড করে জুস তৈরি করুন। প্রতিদিন এক গ্লাস করে এই ভেজিটেবল জুস পান করুন আর পরিবর্তনটা নিজের চোখেই দেখতে পাবেন। এই জুসটি ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করে ত্বক ভিতর থেকে উজ্জ্বল করে তুলতে খুব উপকারী।

– পালং শাকের অনেক প্রয়োজনীয় উপকারিতার মধ্যে আরেকটি হচ্ছে নিয়মিত পালং শাক খাওয়ার মাধ্যমে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করতে পারেন নিজের ত্বক। পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি যা সূর্যের ক্ষতিকারক আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। যার ফলে স্কিন ক্যান্সার এবং ত্বকে অসময়ে বার্ধক্যের ছাপ পড়া থেকে সহজেই নিজেকে নিরাপদে রাখা সম্ভব।

– আমাদের শরীরে এক ধরনের “ফ্রি র‌্যাডিকেলস” রয়েছে যা ত্বককে ড্যামেজ করে এতে বার্ধক্যের ছাপ ফুটিয়ে তোলে। তবে আপনার খাবারের তালিকায় পালং শাক রাখার মাধ্যমে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেন সহজেই। পালং শাকে থাকা এন্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র‌্যাডিকেলস ধ্বংস করে এবং ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত পালং শাক খান এবং ত্বকের বার্ধক্যজনিত সমস্যা থেকে দূরে থাকুন।

– ৪-৫ টি পালং শাক প্রথমে পেস্ট করে এর সাথে ১ চা চামচ মধু এবং ২ চা চামচ লেবুর রস ভালো মত মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখুন। এরপর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্কটি ত্বকের নিস্তেজ ভাব দূর করে ত্বক নরম এবং মসৃণ করে তোলে।

– পালং শাক চুলের বৃদ্ধি ত্বরাণ্বিত করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন বি, সি এবং ই, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সহ আরও অনেক প্রয়োজনীয় উপাদান যেগুলোর সবই চুলের বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে। পালং শাকে থাকা আয়রন চুলের ফলিকলে অক্সিজেনের সরবরাহ ঠিক রাখে যার ফলে চুল ঠিক মতো বাড়ে এবং চুলের গোড়া শক্ত হয়।

– রুক্ষ এবং নিষ্প্রাণ চুলের জন্য আধা কাপ পালং শাক, ১ চা চামচ মধু এবং ১ চা চামচ অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল নিয়ে ব্লেন্ডারে ভালো মতো ব্লেন্ড করুন। এরপর এই মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। চুলে সিল্কি ভাব আসবে।

– চুল পড়া রোধ করতে নিয়মিত পালং শাক খান। কারণ পালং শাকে থাকা ভিটামিন বি কমপ্লেক্স চুলের গোঁড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক গ্লাস পালং শাকের জুস খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ১ কাপ পালং শাক এবং পরিমাণ মতো পানি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে জুস বানিয়ে পান করতে পারেন। খেতে একটু কষ্ট হলেও ফলাফল টা কিন্তু মধুর হবে। চাইলে পালং শাকের সাথে টমেটো, শশা বা অন্যান্য সবজি মিক্স করতে পারেন।

স্বাস্থ্যরক্ষায়:

– এনিমিয়া বা রক্তশুন্যতা প্রতিরোধে পালং শাক বেশ কার্যকরী ভুমিকা পালন করে। পালং শাকে থাকা প্রয়োজনীয় ভিটামিনস এবং নিউট্রিয়েন্টস শরীরের রক্তে লোহিত রক্ত কণিকা উৎপন্ন করতে সাহায্য করে যার ফলে রক্তশুন্যতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় অনেকখানি।

– যেহেতু পালং শাক ফাইবারে সমৃদ্ধ তাই এটি নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে পাকস্থলির বিভিন্ন সমস্যা যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, বদ হজম ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

-গর্ভবতী মহিলাদের জন্য পালং শাক অত্যন্ত উপকারী। গর্ভে থাকা শিশুর ঠিক মতো বেড়ে উঠার জন্য পালং শাক প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্টস যোগায়। এছাড়াও নিয়মিত পালং শাক খাওয়ার মাধ্যমে মায়ের বুকের দুধের পরিমাণ এবং গুণমান অনেক বেড়ে যায়।

– পালং শাকে থাকা ভিটামিন এ এবং ক্যারিটনয়েডস দৃষ্টিশক্তিজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করবে আপনাকে।

– নিয়মিত পালং শাক খান এবং হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখুন। এটি হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কার্যকর।

লিখেছেন- নাহার

ছবি-  বডিএনলাইটেনমেন্ট.মি

0 I like it
1 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort