গুড়ের যত গুন ! - Shajgoj

গুড়ের যত গুন !

jaggery

এইতো, আর কিছুদিন পরেই চলে আসবে গুড়ের সময়!! পিঠা পুলির ঘ্রানে ম ম করবে চারদিক!! চিন্তা করতেই মুখে পানি চলে আসে, তাই না? আর আমাদের এই শীতের রসনার প্রধান উপকরণ হল, গুড় ! কিন্তু, গুড়ের পিঠা, পুলি ছাড়া গুড়ের মিষ্টি, চা, এগুলো খেয়েছেন? একবার খেলে আর সাদা চিনি খেতেই ইচ্ছা করে না। তাইতো গুড়ের সিজনে মিষ্টি প্রেমীদের পোয়া বারো!

কেউ কেউ হয়ত জানেন, চিনির চেয়ে গুড় খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু কতটা ভালো? গুড় আমাদের স্বাস্থ্য আর সৌন্দর্যের জন্য কতো উপকারী সেটা এক্ষণই জেনে নিন-

স্বাস্থ্য রক্ষায় গুড়-

রক্ত শুদ্ধকরন-

গুড় আমাদের দেহের রক্ত পরিস্কার করতে সক্ষম।গুড় দেহ থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিয়ে ডিটক্স করে দূষণ জনিত বিভিন্ন রোগ ব্যাধি দূরে রাখতে পারে অতি সহজেই। তাই প্রাচীন আয়ুর্বেদেও গুড়ের একি ব্যবহার লক্ষণীয়!

রক্ত শূন্যতা প্রতিরোধক

গুড়ের আছে প্রচুর পরিমানে আয়রন। যা রেগুলার ডায়েটে রাখলে আমাদের দেহের ব্লাড সেলস গঠনের হার অনেক বেরে যায় এবং আয়রনের অভাব জনিতও রোগ যেমন দুর্বল লাগা, চুল পড়া, রক্ত শূন্যতা এগুলোর হার কমে।

শক্তিশালী হাড় ও পেশী গঠন

যারা একটু বয়স্ক তাদের জন্য গুড় এই কারনে খুবই ভালো, কারণ গুড় দুর্বল হাড় ও পেশীতে শক্তি যোগায়। এবং এতে থাকা প্রচুর মিনারেলস ভবিষ্যৎ ক্ষয়ের হাত থেকেও বাঁচায়। যারা সবল পেশী গঠন করতে চান তারা রোজ দুই চা চামচ গুড় (আখ অথবা খেজুর) এক গ্লাস হালকা গরম গরুর দুধে মিশিয়ে খেলে দ্রুত ফল পাবেন!

ওজন কমানোয় সহায়ক

গুড়ে থাকা ভিটামিন এবং মিনারেলস দেহের ইলেকট্রলাইটস ভারসম্য বজায় রাখে। এবং এর পটাশিয়াম দেহে অযাচিত ভাবে পানি জমতে দেয় না। যে কারনে পানি জমে দেহের ওজন বেড়ে যাওয়া অথবা শরীর ভারী লাগার সমস্যা কমে। এছাড়া যারা ওজন কমানোর জন্য মিষ্টি / চিনি ছাড়তে চেয়েও পারছেন না। তারা চিনির বদলে খাবারে গুড় ব্যবহার করেও দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন।

রক্তচাপ স্বাভাবিক করা

গুড়ের পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে অনেক সাহায্য করে। যাদের ব্লাড প্রেসার লো, তারা দুধের সাথে দুই চা চামচ গুড় মিশিয়ে পর পর ১৫ দিন খান। এরপর ১৫ দিন বন্ধ রাখুন। আবার ১৫ দিন খান। এভাবে ৩ মাস করুন। যখন তখন ব্লাড প্রেসার লো হবার সমস্যা কমবে।

মাসিক জনিত তীব্র ব্যথা নিরোধক

প্রাচীন আয়ুর্বেদ মতে, নারীদের মাসিক জনিতও তীব্র ব্যথা উপশমে রোজ গুড় খেলে অনেক ভালো ফল পাওয়া যায়। মাসিকের কয়েকদিন আগে থেকে শুরু করে রোজ ২ চা চামচ গুড় খেলে তীব্র ব্যথা কমে যাবে।

কফ ও সর্দির চিকিৎসায়

সর্দি কাশির চিকিৎসায় গুড় দীর্ঘদিন ধরে উপমহাদেশে প্রচলিত। গুড় দেহের ইমিউনিটি বাড়ায়। এবং সর্দি কাশি হলে গরম পানির সাথে গুড় মিশিয়ে খেলে খুব দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। চায়ের সাথে চিনির বদলে গুড় ব্যবহার করলেও ভালো ফল পাবেন।

বদহজম দূরীকরণে

গুড় ডায়রিয়া, বদ হজম জনিতও রোগে খুব ভালো কাজ দেয়। আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত শক্তি প্রদান করা এবং রোগীর হজম জনিতও সমস্যা দূর করায় গুড়ের মত কার্যকরী উপাদান খুব কম আছে।

সৌন্দর্যে গুড় –

ব্রন দূর করা

গুড় রেগুলার ডায়েটে রাখলে দেহের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায় এবং রক্ত শুদ্ধ হওয়ার সাথে সাথে ব্রনসহ দূষণ জনিতও বিভিন্ন চর্মরোগ কমে যায়।

বলিরেখা কমানো

যাদের একটু বয়স হয়ে গেছে, অথবা ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক তারা একটু এক চিমটি গুড় একটু পানি অথবা তিলের তেলের সাথে মিশিয়ে বলিরেখার উপরে মালিশ করলে উপকার পাবেন। শুষ্ক ত্বকের অধিকারিরা গোসলের আগে তেলের সাথে গুড় মিশিয়ে শরীর ম্যাসাজ করলেও ভালো ফল পাবেন।

দেখলেন তো! গুড়ের গুন কিন্তু কম নয়। এবার শীতে তাহলে চুটিয়ে গুড় খান। পিঠা পুলির শীতকাল সবার জন্য আনন্দময় হোক !

 

লিখেছেন- তাবাসুম মুস্তারি মীম

ছবি- বোল্ডস্কাই.কম

 

0 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort