শীতকালে বডি কেয়ার | কোমল ত্বক পেতে প্রয়োজন একটু বাড়তি যত্ন!

শীতকালে বডি কেয়ার | কোমল ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য প্রয়োজন একটু বাড়তি যত্ন!

1-13

শীতের আমেজের সাথে সাথে হাত-পায়ের চামড়া কেমন যেন শুষ্ক লাগছে আর কালো হয়ে যাচ্ছে, তাই না? কিন্তু বুঝতে পারছেন না কীভাবে শীতকালে বডি কেয়ার করবেন? তাহলে আজকের লেখাটি আপনার জন্যই। এই সিজনে হাত-পায়ের ত্বক খুব সহজেই কোমলতা হারিয়ে ফেলে। সেলফ কেয়ারে ইনক্লুড করতে হবে উইন্টার অ্যাসেনশিয়াল প্রোডাক্টস যেগুলো আপনার ত্বককে রাখবে মোলায়েম। কোমল ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য একটু বাড়তি যত্ন তো নিতেই হবে। চলুন জেনে নেই বিস্তারিত।

বডি কেয়ার কেন দরকার? 

আমরা রোজ যেমন খুব নিয়ম করে স্কিনকেয়ার করি, ঠিক একইভাবে শরীরের ত্বকের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ফেইস খুব সুন্দর কিন্তু তার সাথে রুক্ষ-শুষ্ক হাত-পা দেখতে কিন্তু কিছুতেই ভালো লাগবে না। বছরের অন্য সময়ের থেকে শীতকালে আমাদের ত্বকের প্রয়োজন এক্সট্রা কেয়ার। কারণ শীতকালে যাদের নরমাল স্কিন তাদের ড্রাই স্কিন হয়ে যায়, আর যাদের ড্রাই স্কিন তাদের তো অনেক সময় স্কিন ফেটে ফেটে যায়। তাই আমরা যদি প্রথম থেকেই প্রোপারলি বডি কেয়ার করতে পারি, তাহলে পুরো শীতকালে আমাদের আর ড্রাই স্কিন নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হবে না। ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, কোমল ও সুন্দর।

বডি কেয়ার

শীতকালে বডি কেয়ার কীভাবে করবেন?

প্রথমেই বডি কেয়ারকে কয়েকটা স্টেপে ভাগ করে নেই, যাতে আপনাদের বুঝতে খুব বেশি ঝামেলা মনে না হয়। দেখে নিন কোন কোন প্রোডাক্টগুলো আপনার প্রয়োজন হবে।

১. অয়েল
২. বডি ওয়াশ
৩. বডি বাটার /বডি লোশন
৪. সানস্ক্রিন
৫. বডি স্ক্রাব

অয়েল ম্যাসাজ

অয়েল বা তেলের কথা কেন বলছি? দেখে হয়তো ভাবছেন যে, গোসলের পর একবারে বডি লোশন বা বডি বাটার দিলেই তো হয়, আবার তেল কেন? সপ্তাহে ২/৩ দিন যদি গোসলের আগে পুরো বডিতে অয়েল ম্যাসাজ করে নিতে পারেন, তাহলে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়বে, স্কিন অতিরিক্ত ড্রাই হয়ে যাওয়ার চান্স থাকে না। আর গোসলের সময় স্কিন থেকে ন্যাচারাল অয়েল রিমুভ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে গোসল এর আগে বডিতে তেল দিয়ে ম্যাসাজ করে নিলে স্কিনের ন্যাচারাল অয়েল লেভেল ব্যালেন্সড থাকে। অয়েল ম্যাসাজের জন্য আপনারা আমন্ড অয়েল বা অলিভ অয়েল ইউজ করতে পারেন। এছাড়াও ময়েশ্চারাইজিং বডি অয়েলও ব্যবহার করা যেতে পারে।

অয়েল

বডি বাটার বা বডি লোশন

এবার সবথেকে ইম্পরট্যান্ট পার্ট নিয়ে কথা বলবো, সেটা হলো ময়েশ্চারাইজিং। শীতে ত্বকের যত্নে রেগুলার ময়েশ্চারাইজার ইউজ করা খুবই দরকার। নাহলে আপনার স্কিন ড্রাই হয়ে যাবে, ফেটে যাবে খুব সহজেই! আর স্কিনে যখন এরকম টানটান ফিল হবে, তখন এমনিতেই খুব অস্বস্তি লাগবে। তাই প্রতিদিন গোসলের পর এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে লোশন বা বডি বাটার ইউজ করতে হবে। যাদের স্কিন টাইপ নরমাল তারা লোশন ইউজ করতে পারেন। আর যাদের স্কিন খুব ড্রাই, বার বার ময়েশ্চারাইজিং করতে হয়, তারা বডি বাটার ইউজ করতে পারেন নিশ্চিন্তে।

 

বডি ওয়াশ বা শাওয়ার জেল 

শীতকালে বডি ময়েশ্চারাইজিং যেমন দরকার, ঠিক তেমনি দরকার বডি প্রোপারলি ক্লিন করা। নাহলে বাইরের ধুলো ময়লা, ঘাম, সিবাম জমে স্কিনে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন রকম সমস্যা। কিন্তু ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার না করে এই সময়ে বডির জন্য বেছে নিন বডি ওয়াশ বা শাওয়ার জেল। বডি ওয়াশ ও শাওয়ার জেল স্কিনকে ড্রাই না করেই পরিষ্কার করে গভীর থেকে এবং সেই সাথে দেয় রিফ্রেশিং ফিলিং। আর শাওয়ারের পর স্কিনে যে ড্রাইনেস ফিল হয়, সেটাও হবে না যদি আপনি ময়েশ্চারাইজিং শাওয়ার জেল ব্যবহার করেন।

বডি স্ক্রাব

ফেইসের মতো আমাদের বডিতেও কিন্তু মৃত কোষ বা ডেড স্কিন সেলস জমে। সপ্তাহে একদিন স্ক্রাব করলে হাত-পায়ের স্কিন যেমন সফট হয়, তেমনই স্কিন ব্রাইটও হয়। এছাড়াও স্ক্রাবিং করলে আপনার স্কিন ময়েশ্চারাইজার আরও ভালোভাবে শোষণ করতে পারবে। তবে যাদের বডি একনের সমস্যা আছে তারা স্ক্রাবিং এড়িয়ে চলবেন।

সানস্ক্রিন

এই যে এত যত্ন করছি ত্বকের, কিন্তু বাইরে থেকে আসার পর রোদে পুড়ে হাত-পা সেই যদি কালোই হয়ে যায় তাহলে স্কিন কেয়ার করে কী লাভ? তাই সানস্ক্রিন কিন্তু বাদ দেওয়া যাবে না। অনেকে ভাবতে পারেন বাইরে এতো ঠান্ডা, রোদ নেই, তাও সানস্ক্রিন লাগাবো? সূর্য দেখা না গেলেও সূর্যের ইউভি রে কিন্তু থাকেই। যেটা সরাসরি আপনার ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে, তাই শীতকালেও সান প্রোটেকশন নেওয়া উচিত। বডির জন্য আলাদা সানস্ক্রিন ইউজ করার প্রয়োজন নেই, আপনি ফেইসে যেটা ইউজ করবেন সেটাই দেওয়া যাবে। অনেকেই বডিতে ইউজ করার জন্য একটু রিজেনেবল প্রাইসে সানস্ক্রিন খোঁজেন, সেক্ষেত্রে বাজেট ফ্রেন্ডলি অপশনগুলো দেখতে পারেন।

শীতকালে বডি কেয়ার

শীতকালে বডি কেয়ার এর জন্য মাস্ক

বেসিক বডি কেয়ার নিয়ে তো কতকিছুই জানলাম। যারা আরেকটু বেশি কেয়ার নিতে চান, তারা সপ্তাহে ২/১ দিন ব্রাইটেনিং মাস্ক ইউজ করতে পারেন। এক্ষেত্রে আমার পছন্দ “skin cafe brightening mask” কেননা এতে আছে চন্দন, কমলার খোসা সহ বেশ কিছু ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্টস যেগুলো কোমল ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে খুবই ভালো কাজ করে। শীতকালে এই মাস্কটি আমি দুধ, গোলাপজল ও অ্যালোভেরা জেল মিক্স করে ফেইস, গলা, হাতে ও পায়ে অ্যাপ্লাই করি। ১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলি। স্কিনে গ্লোয়ি ইফেক্ট আসে এবং খুবই সফট লাগে! ত্বকের খসখসেভাব একদম গায়েব! শীতকালে প্যাক বা মাস্ক ইউজ করতে অনেকেরই অনীহা আছে, কিন্তু সপ্তাহে ১ দিন গোসলের আগে মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য এইটুকু তো করাই যায়, তাই না?

 

এগুলোর মধ্যে থেকে আপনার পছন্দমতো বডি কেয়ার প্রোডাক্টস বেছে নিয়ে নিয়মিত যত্ন নিলেই কিন্তু আপনার হাত-পা সবসময় খুব সুন্দর থাকবে। শীতকালে বডি কেয়ার করতে আলসেমি করা যাবে না কিন্তু! অথেনটিক প্রোডাক্টস কিনতে চাইলে সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত সম্ভারে অবস্থিত, সেখান থেকে কিনতে পারেন আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন।

ছবি- সাজগোজ

11 I like it
1 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort