ওয়্যাক্সিং নাকি শেভিং, বডি হেয়ার রিমুভ করতে কোনটি বেস্ট সল্যুশন?

ওয়্যাক্সিং নাকি শেভিং, বডি হেয়ার রিমুভ করতে কোনটি বেস্ট সল্যুশন?

wax

আনওয়ান্টেড বডি হেয়ার নির্দিষ্ট সময় পরপর রিমুভ করতে হয়, এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু এই হেয়ার রিমুভের প্রচলিত পদ্ধতিগুলোর ভেতর শেভিং আর ওয়্যাক্সিং সবথেকে জনপ্রিয়। তবে বডির অন্যান্য পার্ট যেমন হাত, পায়ের থেকে আন্ডারআর্মসের হেয়ার গ্রোথ বেশি থাকে। অনেকেই চিন্তিত থাকেন যে কীভাবে এই অবাঞ্ছিত লোম রিমুভ করা যায়। ওয়্যাক্সিং নাকি শেভিং, আনওয়ান্টেড বডি হেয়ার রিমুভ করতে কোন উপায়টি আপনার জন্য ভালো, সেটা নিয়েই আজ কথা বলবো।

প্রথমে জেনে নিন ওয়্যাক্সিং নিয়ে 

ওয়্যাক্সিং নাকি শেভিং, এই প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে বিষয়গুলো একটু খুলে বলি। ওয়্যাক্সিং এমন একটা প্রসেস যেখানে আঠালো জাতীয় জিনিস ব্যবহার করে হেয়ার বা লোম গোড়া থেকে টেনে রিমুভ করা হয়। ১১৫০ খ্রিস্টপূর্বের দিকে প্রাচীন মিশরীয়রা ঘরে বানানো সুগার ওয়্যাক্স ব্যবহার করে তাদের শরীর ও প্রাইভেট পার্ট থেকে হেয়ার রিমুভ করতো। সেখান থেকেই এসেছে ওয়্যাক্সিংয়ের কনসেপ্ট। ওয়্যাক্স দুই ধরনের হয়, সফট ও হার্ড ওয়্যাক্স। সফট ওয়্যাক্সিংয়ে স্ট্রিপস ব্যবহার করে হেয়ার রিমুভ করা হয় এবং হার্ড ওয়্যাক্সিংয়ের ক্ষেত্রে স্ট্রিপস ছাড়াই হেয়ার রিমুভ করা হয়। নিজে নিজে বাড়িতে ওয়্যাক্সিংয়ের ক্ষেত্রে সফট ওয়্যাক্স বেটার অপশন বলে আমার মনে হয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওয়্যাক্স স্ট্রিপস, ওয়্যাক্সিং বিন ইউজ করতে পারেন।

কীভাবে ওয়্যাক্সিং করতে হবে? 

বাড়িতে বসে ওয়্যাক্সিং করার ক্ষেত্রে যেই স্টেপগুলো ফলো করবেন –

১. বডির যেই পার্টেই ওয়্যাক্সিং করুন না কেন আগে বডি ওয়াশ বা সোপ দিয়ে ক্লিন করে নিবেন, যাতে ঘাম বা ময়লা না থাকে।

২. এরপর ভালো করে পানি মুছে বডি পার্ট শুকিয়ে নিয়ে হালকা করে পাউডার অ্যাপ্লাই করে নিতে হবে।

৩. আপনার হেয়ার গ্রোথ যেদিকে সেদিকেই হালকা গরম ওয়্যাক্স লাগিয়ে তার উপর স্ট্রিপ ভালোভাবে চেপে নিবেন।

৪. এরপর আপনার হেয়ার গ্রোথ এর বিপরীত দিকে স্ট্রিপ টান দিয়ে উঠাবেন।

৫. ওয়্যাক্স এর পর ভালোভাবে পানি দিয়ে ক্লিন করে অ্যালোভেরা জেল বা বডি লোশন লাগিয়ে নিবেন।

৬. ওয়্যাক্স খুব বেশি গরম যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঝামেলা এড়াতে আপনি সরাসরি কোল্ড ওয়্যাক্স স্ট্রিপসও ব্যবহার করতে পারেন।

ওয়্যাক্সিং করলে কী কী বেনিফিটস পাওয়া যাবে?

  • এটি এক্সফোলিয়েশনেরও কাজ করে তাই স্কিনের ডেড সেলস রিমুভ হয়ে যায় সহজেই
  • লোম গোড়া থেকে রিমুভ হয় তাই নতুন করে গ্রোথ হতে বেশ সময় লাগে
  • ঘন ঘন হেয়ার রিমুভের চিন্তা থাকে না
  • স্কিন সফট ও ক্লিয়ার লাগে দেখতে
  • ওয়্যাক্স স্ট্রিপস ব্যবহার করলে ইচিনেস কম হয় এবং কেটে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই

 

ওয়্যাক্সিং নাকি শেভিং, হেয়ার রিমুভাল নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা 

অনেকে মনে করেন ওয়্যাক্সিং করলে স্কিন ঝুলে যায়, এটা আসলে ভুল ধারণা। কারণ ওয়্যাক্সিং তো আমরা রেগুলার করি না। প্রায় এক মাস পর পর করা হয়, তাই স্কিনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আবার অনেকে মনে করেন, ওয়্যাক্সিং করলে পরে লোম আরও বেড়ে যাবে কিনা! এটাও ভুল ধারণা। আপনার হেয়ার ফলিকল যেমন, তেমনই থাকবে। হেয়ার রিমুভাল প্রসেসের সাথে লোম ঘন হয়ে ওঠার সম্পর্ক নেই।

এবার আসি শেভিংয়ের বিষয়ে

এখন আমরা কথা বলবো শেভিং নিয়ে। শেভিং ওয়্যাক্সিংয়ের থেকে একটু কম ঝামেলার মনে করেন অনেকে, এইজন্য তারা হেয়ার রিমুভের ক্ষেত্রে শেভিংকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। শেভিং মূলত করা হয় রেজর দিয়ে। বডির ডিফারেন্ট পার্টের জন্য আলাদা আলাদা ধরনের রেজর পাওয়া যায়। ফেইসের অবাঞ্ছিত লোম তুলতে বা আইব্রো প্লাক করতেও ডিফারেন্ট শেইপের রেজর পাওয়া যায়।

কীভাবে শেভিং করতে হবে?

বডি শেভিং করার ক্ষেত্রে যেই স্টেপগুলো ফলো করবেন-

১. শেভিং এর আগে স্কিনে জেন্টল স্ক্রাব ইউজ করে নিন। যেদিন শেভিং করবেন সেদিনই স্ক্রাবিং করতে হবে এমনটা না, আগেও করতে পারেন।

২. এবার শেভিং ক্রিম বা সাবান লাগানোর পর ক্লিন রেজর দিয়ে হেয়ার গ্রোথ এর বিপরীত দিকে শেভিং করবেন। একটা রেজর ৩ বারের বেশি ব্যবহার না করাই বেটার।

৩. প্রতিবার ইউজ করার পর রেজরটি পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

৪. খুব সাবধানতার সাথে আস্তে আস্তে শেভিং করবেন।

৫. এরপর স্কিন ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে লোশন বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। রেজর ভালোভাবে ক্লিন আর ড্রাই করে তুলে রাখুন যাতে মরিচা না পড়ে।

শেভিং এর বেনিফিটস কী?

  • খুব অল্প সময়ে কোনো ঝামেলা ছাড়াই বডি হেয়ার রিমুভ করা যায়
  • ওয়্যাক্সিং একটু পেইনফুল কিন্তু শেভিং এর ক্ষেত্রে পেইন বা ব্যথা নিয়ে কোনো চিন্তা নেই
  • তুলনামূলক কম খরচে কাজটা করতে পারবেন

ওয়্যাক্সিং নাকি শেভিং, কোনটি বেস্ট সল্যুশন?

এখন নিশ্চয়ই জানতে চাচ্ছেন, কোনটা আপনার জন্য বেস্ট? এটা আসলে পারসন টু পারসন ভ্যারি করে। অনেকে শেভিং করতে পছন্দ করে, আবার অনেকে ওয়্যাক্সিং। যারা খুব ঘন ঘন হেয়ার রিমুভ করার টাইম পান না বা ঝামেলা মনে করেন, তারা মাসে একবার ওয়্যাক্সিং করতে পারেন। আবার যাদের কাছে ওয়্যাক্সিং পেইনফুল লাগে, তারা সহজেই শেভিং করতে পারেন। সেনসিটিভ স্কিন হলে ওয়্যাক্সিং এর পর ইরিটেশন হতে পারে। আপনার সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো একটি অপশন বেছে নিতে পারেন।

আমার এক্সপেরিয়েন্স

পারসোনালি আমি ওয়্যাক্সিং খুবই পছন্দ করি কারণ ওয়্যাক্সিং করার সময় হেয়ার যেহেতু একদম ভেতর থেকে উঠে আসে, তাই স্কিন খুব সফট ফিল হয়। আর প্রায় এক মাস হেয়ার রিমুভাল নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হয় না। আবার মাঝে মধ্যে ঝটপট রেজর দিয়েও হেয়ার রিমুভ করি। আমি কয়েকটি ব্র্যান্ডের স্ট্রিপস ব্যবহার করেছি, সাজগোজ থেকেই পারচেজ করি সবসময়। অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর ( জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

 

তাহলে যারা চিন্তায় ছিলেন হেয়ার রিমুভের জন্য ওয়্যাক্সিং নাকি শেভিং কোন পদ্ধতিটি বেস্ট অপশন হবে, আশা করছি তারা এই আর্টিকেলটি পড়ে এখন সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। দুটি উপায়ই সেইফ, তাই কোনো চিন্তা নেই! তাহলে আজ এই পর্যন্তই। ভালো থাকবেন সবাই।

ছবি- সাটারস্টক

61 I like it
14 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort