মেকআপ আমাদের ফেইসের বেস্ট ফিচারগুলোকে ফুটিয়ে তুলতে হেল্প করে। আর সেই মেকআপ যদি গ্লোয়িং ও লং লাস্টিং হয় তাহলে তো কোনো কথাই নেই! বিভিন্ন মেকআপ লুকের মধ্যে গ্লোয়িং ও ন্যাচারাল মেকআপ লুক এর কদর এখন সবার কাছেই অনেক বেশি। কারণ এই মেকআপ লুকে সবাইকে দেখতে অনেক বেশি এলিগেন্ট লাগে। আজকের লেখায় আমি শেয়ার করবো কীভাবে খুব ইজিলি ঘরে বসেই আপনারা যেকোনো অকেশনের আগে পারফেক্ট গ্লোয়িং মেকআপ লুক ক্রিয়েট করতে পারেন, যেটা একইসাথে ফ্ললেস ও লং লাস্টিংও হবে! তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
স্টেপ বাই স্টেপ গ্লোয়িং ও ন্যাচারাল মেকআপ লুক
অনেকেই মনে করে থাকেন যে গ্লোয়িং মেকআপ লুক ক্রিয়েট করা বোধহয় অনেক টাফ। কিন্তু আসলে ব্যাপারটা মোটেও সেরকম নয়! চলুন তাহলে দেখে নেই কীভাবে ন্যাচারাল বেইজ মেকআপ করে নিজের বিউটিকে এনহ্যান্স করা যায়।
১) মেকআপের আগে স্কিন প্রিপেয়ার করে নেওয়া
গ্লোয়িং মেকআপ লুক পাওয়ার আসল সিক্রেটটা কী সেটা জানেন? সেটা হলো মেকআপ স্টার্ট করার আগে স্কিনকে সঠিকভাবে প্রিপেয়ার করে নেওয়া। এখন প্রশ্ন হলো স্কিন প্রিপেয়ার কীভাবে করবেন?
এক্ষেত্রে আমার সাজেশন হচ্ছে শুরুতে নিজের পছন্দের ফেইস ওয়াশ দিয়ে ফেইস ক্লিন করার পর যেকোনো ভালো কোয়ালিটির হাইড্রেটিং শিট মাস্ক অ্যাপ্লাই করুন। এতে ফেইসে একটা ইনস্ট্যান্ট গ্লো দেখতে পাবেন এবং একইসাথে আপনার মেকআপও পারফেক্টলি ব্লেন্ড হবে। যদি হাতের কাছে শিটমাস্ক না থাকে, তাহলে নিজের পছন্দের কোনো হাইড্রেটিং সিরাম বা ময়েশ্চারাইজারও অ্যাপ্লাই করতে পারেন। মোটকথা, মেকআপ শুরু করার আগে ফেইস যেন হাইড্রেটেড থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
এরপর যদি দিনের বেলার জন্য মেকআপ করে থাকেন, তাহলে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করুন। ও হ্যাঁ, ঠোঁটে লিপবাম অ্যাপ্লাই করতে ভুলবেন না কিন্তু। এভাবে যদি মেকআপের আগে স্কিন সঠিকভাবে প্রিপেয়ার করতে পারেন, তাহলে দেখবেন গ্লোয়িং ও ন্যাচারাল মেকআপ লুক ক্রিয়েট করা কতটা ইজি হয়ে যায়।
২) ইল্যুমিনেটিং প্রাইমার ইউজ করা
মেকআপের শুরুতে প্রাইমার ইউজ করতে হয় এটা তো সবাই জানেন। মার্কেটে দুই ধরনের প্রাইমার দেখতে পাবেন, যেগুলোর একটা ম্যাট ফিনিশ দেয় এবং আরেকটা গ্লোয়িং বা ইল্যুমিনেটিং ফিনিশ দেয়। গ্লোয়িং ও ন্যাচারাল মেকআপ লুক ক্রিয়েট করতে ইল্যুমিনেটিং প্রাইমার সুপার ইফেক্টিভ রোল প্লে করে। পাশাপাশি এই প্রাইমার অ্যাপ্লাই করলে মেকআপ হয় লং লাস্টিং ও ফ্ললেস। তাই নিশ্চিন্তে এই প্রাইমার ইউজ করতে পারেন।
৩) সঠিকভাবে ফাউন্ডেশন ও কনসিলার অ্যাপ্লাই করা
অনেকেই আছেন যারা ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করার সময় একবারে অনেকটা প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই করে তারপর ব্লেন্ড করতে যান! এতে কিন্তু ফাউন্ডেশন ঠিকমতো ব্লেন্ড হতে চায় না। যার ফলে মেকআপ কেকি হয়ে যাওয়ার চান্স থাকে এবং ন্যাচারাল ফিনিশিংটাও থাকে না। এজন্য ফ্ললেস মেকআপ লুক পেতে চাইলে ধীরে ধীরে ফাউন্ডেশনের কভারেজ বিল্ডআপ করুন। ড্রাই স্কিন হলে ডিউয়ি ফাউন্ডেশন ইউজ করুন।
এবার আসা যাক কনসিলার প্রসঙ্গে। যখন ফেইস হাইলাইট করার জন্য কনসিলার ইউজ করবেন, তখন এমন শেইডের কনসিলার ইউজ করুন যেটা আপনার স্কিনটোনের চেয়ে এক বা দুই শেইড লাইট। একইসাথে ট্রাই করবেন খুব বেশি পরিমাণে কনসিলার অ্যাপ্লাই না করতে। এভাবে ফাউন্ডেশন ও কনসিলার অ্যাপ্লাই করার পর একটা লুজ পাউডারের সাহায্যে ফেইসটা ভালোমতো সেট করে নিন। মনে রাখবেন, সঠিকভাবে ফাউন্ডেশন ও কনসিলার অ্যাপ্লাই করার ওপর ফ্ললেস ও গ্লোয়িং মেকআপ লুক পাওয়া অনেকটাই ডিপেন্ড করে।
৪) স্কিনটোন বুঝে ব্লাশ ও হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করা
গ্লোয়িং মেকআপের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই মেকআপ লুকে ন্যাচারাল, অর্থাৎ স্কিন লাইক ফিনিশ পাওয়া যায়। তাই নিজের স্কিনটোন বুঝে সে অনুযায়ী ব্লাশ ও হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করা খুবই ইম্পরট্যান্ট। যেমন ধরুন, যাদের স্কিনটোন ফেয়ার, তারা যদি পীচ, কোরাল, বেবি পিংক, প্লাম ইত্যাদি কালারের ব্লাশের সাথে শ্যাম্পেইন টোনের হাইলাইটার ইউজ করেন, তাহলে তাদের মেকআপটা দেখতে যেমন গ্লোয়িং লাগবে, তেমনি ন্যাচারালও দেখাবে।
আবার যাদের স্কিনটোন মিডিয়াম বা শ্যামলা, তারা যদি রোজ, ডার্ক মভ, ডিপ পীচ ইত্যাদি কালারের ব্লাশের সাথে গোল্ডেন, ব্রোঞ্জ বা কপার টোনের হাইলাইটার অ্যাপ্লাই করেন, তাহলে তাদের মেকআপ লুকটা হবে একদম পিকচার পারফেক্ট! পাউডার বা লিকুইড যেই ধরনের ব্লাশ ও হাইলাইটারই অ্যাপ্লাই করুন না কেন, একবারে বেশি পরিমাণে অ্যাপ্লাই না করে অল্প অল্প করে প্রয়োজনমতো অ্যাপ্লাই করুন। এতে দেখতে পাবেন মেকআপ শেষ হওয়ার পর ফেইস দেখতে কতটা গ্লোয়িং ও ফ্ললেস লাগছে!
৫) ভালো কোয়ালিটির সেটিং স্প্রে ইউজ করা
মেকআপের একদম লাস্ট স্টেপটা হলো সেটিং স্প্রে এর সাহায্যে পুরো ফেইসের মেকআপ সেট করে নেওয়া। যদি আপনার মেকআপ গ্লোয়িং এবং একইসাথে লং লাস্টিং রাখতে চান, তাহলে ইল্যুমিনেটিং বা ডিউয়ি ফিনিশ দেয় এমন একটা সেটিং স্প্রে অ্যাপ্লাই করুন৷ এতে মেকআপ সেট হয়ে যাবে, মেকআপ লুকটা দেখতে গ্লোয়িং লাগবে এবং দিনভর বাইরে থাকলেও মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
এই ৫টি সিম্পল স্টেপস ফলো করার মাধ্যমে আপনারা গ্লোয়িং ও ন্যাচারাল মেকআপ বেইজ ক্রিয়েট করে ফেলতে পারেন খুব সহজে৷ আমার পারসোনাল সাজেশন হলো সবসময় ট্রাই করবেন ভালো ব্র্যান্ডের অথেনটিক মেকআপ প্রোডাক্টস ইউজ করতে। অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ারের প্রোডাক্টসের জন্য সাজগোজকে আমি সবসময়ই প্রায়োরিটি লিস্টের টপে রাখি। তাই চাইলে আপনারাও সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ কিংবা ফিজিক্যাল স্টোরে ভিজিট করতে পারেন।
অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টস আপনারা পেয়ে যাবেন সাজগোজে। ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এই শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।
ছবি- সাজগোজ