কম্বিনেশন স্কিনের জন্য মর্নিং অ্যান্ড নাইট স্কিনকেয়ার রুটিন

কম্বিনেশন স্কিনের জন্য মর্নিং অ্যান্ড নাইট স্কিনকেয়ার রুটিন

Image-2 (1)

পুরো ফেইস ড্রাই হলেও টি-জোনটা আবার অয়েলি! বলছিলাম কম্বিনেশন স্কিনের কথা। কম্বিনেশন স্কিন সবচেয়ে কমন স্কিন টাইপগুলোর মধ্যে একটি হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে এই স্কিনের প্রোপারলি কেয়ার নেওয়া উচিত, সেটা অনেকেই বুঝতে পারেন না। তাই আজকে জানাবো কীভাবে কম্বিনেশন স্কিনের জন্য পারফেক্ট একটি মর্নিং টু নাইট স্কিনকেয়ার রুটিন মেনটেইন করা যেতে পারে সে বিষয়ে এ টু জেড গাইডলাইন। আশা করছি যাদের স্কিন টাইপ কম্বিনেশন, তাদের জন্য লেখাটি খুবই হেল্পফুল হবে।

কোন ধরনের স্কিন টাইপকে কম্বিনেশন বলা হয়?

যারা এখনও নিজের স্কিন টাইপ বুঝতে পারেন না, তাদের জন্য শুরুতেই জানিয়ে দিচ্ছি কম্বিনেশন স্কিনের কয়েকটি ফিচার। কম্বিনেশন স্কিনের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই স্কিন টাইপে একইসাথে ড্রাইনেস ও অয়েলিনেস দুই ধরনের অবস্থা-ই নজরে আসে। সাধারণত যাদের স্কিন টাইপ কম্বিনেশন, তাদের টি-জোন অর্থাৎ কপালের উপরিভাগ থেকে নাক ও চিন পর্যন্ত অয়েলি হয়ে থাকে। এই এরিয়াতে স্কিন কিছুটা শাইনি হয় সেবামের কারণে। এই অয়েলি এরিয়াটুকু ছাড়া স্কিনের বাকি এরিয়াতে ড্রাইনেসের বিভিন্ন সাইন যেমন- রাফনেস, রেডনেস কিংবা ফ্লেকিনেস দেখা যায়। খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, যাদের কম্বিনেশন স্কিন তারা একনে রিলেটেড প্রবলেমে একটু বেশিই সাফার করে থাকেন। তাছাড়া এই ধরনের স্কিনে এনলার্জড পোরসও দেখা যায়।

স্কিন টাইপ

কম্বিনেশন স্কিনের স্কিনকেয়ার রুটিন

যাদের কম্বিনেশন স্কিন, তারা সবসময় কমপ্লেইন করে থাকেন যে তাদের স্কিনে স্যুট করে এমন কোনো স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট নাকি তারা খুঁজে পান না! সত্যি বলতে এই ধরনের স্কিন টাইপের জন্য এমন ধরনের প্রোডাক্ট সিলেক্ট করতে হয় যেগুলো স্কিন অয়েলি করবে না ঠিকই, কিন্তু একইসাথে স্কিনে প্রোপার হাইড্রেশনও দিবে। এখানেই মেইনলি সবাই ভুল করে থাকেন৷ তারা এমন প্রোডাক্ট পারচেজ করেন যেগুলো শুধুমাত্র ড্রাই স্কিন অথবা অয়েলি স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড। তারপর সঠিক প্রোডাক্ট সিলেক্ট না করার কারণে তাদের স্কিনে একনে বা বাম্পস দেখা দেয়। একারণে যদি স্কিন টাইপ কম্বিনেশন হয়ে থাকে, তাহলে একটু ট্রিকি ওয়েতে স্কিনকেয়ার রুটিন মেনটেইন করতে হয়।

ব্যাপারটা খুব কমপ্লিকেটেড মনে হচ্ছে? চিন্তার কোনো কারণ নেই! কারণ এখন আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কম্বিনেশন স্কিনের জন্য পারফেক্ট একটি স্কিনকেয়ার রুটিন যেটা আপনারা বিজি সিডিউলের মধ্যে থেকেও খুব সহজেই মেনটেইন করতে পারবেন।

সকালের স্কিনকেয়ার রুটিন

১) ক্লেনজিং

স্কিনকে ক্লিন রাখার জন্য প্রতিদিন সকালে ক্লেনজার ইউজ করা খুব জরুরি। কম্বিনেশন স্কিনের জন্য এমন কোনো ক্লেনজার বেছে নিতে হবে যেটা মাইল্ড নেচারের। এতে স্কিনে কোনো ইরিটেশন হবে না। এক্ষেত্রে জেল বা ফোম বেইজড প্রোডাক্ট বেছে নিন। তাতে স্কিনের যে এক্সট্রা অয়েলিনেস থাকে সেটা চলে যাবে এবং স্কিনে কোনো ড্রাইনেসও দেখা যাবে না।

কম্বিনেশন স্কিনের জন্য স্কিনকেয়ার রুটিন

২) টোনিং

আমরা সবাই জানি, টোনার আমাদের ওপেন পোরগুলো মিনিমাইজ করতে হেল্প করে। যেহেতু কম্বিনেশন স্কিনে এমনিতেই এনলার্জড পোরসের প্রবলেম দেখা যায়, তাই পরামর্শ থাকবে স্কিনকেয়ার রুটিনে টোনার স্কিপ না করতে। নিজের পছন্দের যেকোনো টোনার বেছে নিন ও কটন প্যাডের সাহায্যে বা হাত দিয়েই অ্যাপ্লাই করুন। এতে পিএইচ ব্যালেন্সড হয়ে ত্বক হয়ে উঠবে হেলদি।

 

৩) ময়েশ্চারাইজিং

যেহেতু কম্বিনেশন স্কিনে ড্রাইনেস একটা কমন ফিচার, তাই স্কিনে যেন প্রোপার হাইড্রেশন থাকে সেটা এনশিওর করা খুব ইম্পরট্যান্ট। তবে গরমের দিনে হেভি ময়েশ্চারাইজার ইউজ করা যাবে না। কারণ যদি থিক টেক্সচারের কোনো ময়েশ্চারাইজার ইউজ করা হয়, তাহলে পোরস ক্লগড হয়ে সেখান থেকে একনে হওয়ার চান্স থাকবে। তাই নিজের পছন্দমতো লাইটওয়েট ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করুন।

৪) সানস্ক্রিন

রোদে বের হলে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করা কতটুকু জরুরি সেটাতো সবাই জানেন। শুধুমাত্র কম্বিনেশন স্কিনের জন্যই নয়, বরং আপনার স্কিন টাইপ যেটাই হোক সবসময় ট্রাই করবেন এসপিএফ ৩০ কিংবা তার বেশি প্রোটেকশনযুক্ত সানস্ক্রিন বেছে নিতে৷ ফিজিক্যাল কিংবা কেমিক্যাল যে ফর্মুলার সানস্ক্রিনই অ্যাপ্লাই করুন না কেন, যেটার ফর্মুলা তুলনামূলকভাবে ম্যাট ও লাইটওয়েট মনে হবে সেটাই বেছে নিন।

সানস্ক্রিন

রাতের স্কিনকেয়ার রুটিন

১) মাইসেলার ওয়াটার অথবা ক্লেনজিং অয়েল দিয়ে ক্লিনিং 

সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে যখন সন্ধ্যায় বা রাতে বাড়িতে ফিরবেন, তখন মাইসেলার ওয়াটার অথবা ক্লেনজিং অয়েল দিয়ে ফেইস ক্লিন করে নিন৷ সবসময় মনে রাখবেন, ফেইস ওয়াশ বা নরমাল ক্লেনজার দিয়ে মেকআপ কিংবা সানস্ক্রিন পুরোপুরি রিমুভ হয় না। একারণেই রাতেরবেলা স্কিনকেয়ার রুটিন শুরু করার সময় নিজের পছন্দমতো মাইসেলার ওয়াটার অথবা ক্লেনজিং অয়েল অথবা মেকআপ ক্লেনজার দিয়ে ফেইস ক্লিন করে নিন।

২) ক্লেনজিং ও টোনিং

যখন ফেইসে মাইসেলার ওয়াটার অথবা ক্লেনজিং অয়েল অ্যাপ্লাই করা হয়, তখন ফেইসে থাকা বেশিরভাগ মেকআপ ও সানস্ক্রিন উঠে যায়। তারপর ডাবল ক্লেনজিং করার জন্য ফেইসে ফোম বেইজড ক্লেনজার বা ফেইস ওয়াশ অ্যাপ্লাই করুন। এতে ফ্রেশ লুক পাবেন ইনস্ট্যান্টলি। এরপর ফেইসে টোনার অ্যাপ্লাই করে নিন। ব্যস, আপনার স্কিন নেক্সট স্টেপের জন্য রেডি।

৩) সিরাম অ্যাপ্লাইয়িং

বয়স ২০+ হলে স্কিনকেয়ারে সিরাম ইনক্লুড করতে পারেন। ব্রাইটেনিং এর জন্য ভিটামিন সি সিরাম, হাইড্রেশনের জন্য হায়ালুরোনিক সিরাম, অ্যান্টি এজিং এর জন্য রেটিনল সিরাম ইত্যাদি। আপনার স্কিন কনসার্ন অনুযায়ী যেকোনো একটি সিরাম বেছে নিন। রাতের বেলা যেহেতু স্কিনও রেস্ট পায়, তাই এসময় প্রোডাক্ট ভালোভাবে স্কিনে কাজ করতে পারে।

৪) ময়েশ্চারাইজিং

মিক্সড বা কম্বিনেশন স্কিনের জন্য ইফেক্টিভ স্কিনকেয়ার রুটিনের লাস্ট স্টেজ হচ্ছে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করা। এমন একটা ময়েশ্চারাইজার সিলেক্ট করুন, যেটা পুরো রাত আপনার ত্বকে এনাফ হাইড্রেশন দিবে এবং স্কিন সেলস রিপেয়ার করবে। এক্ষেত্রে যদি চান তাহলে যেকোনো স্লিপিং মাস্কও অ্যাপ্লাই করতে পারেন৷ মনে রাখবেন দিন কিংবা রাত, কখনোই কম্বিনেশন স্কিনে ময়েশ্চারাইজার স্কিপ করা যাবে না। কারণ এতে স্কিন অতিরিক্ত ড্রাই হয়ে যাওয়ার রিস্ক থাকে।

কম্বিনেশন স্কিনের জন্য খুব ভালো একটা ময়েশ্চারাইজার হলো ডার্মালজিকা টি জোন সল্যুশন৷ এই প্রোডাক্টের ইউনিক সাইড হলো এটাতে একইসাথে জেল ও ক্রিম বেইজড ময়েশ্চারাইজার পাবেন৷ জেল পার্ট ইউজ করবেন ফেইসের অয়েলি অংশে আর ক্রিম বেইজড ময়েশ্চারাইজারটি ইউজ করবেন ফেইসের ড্রাই অংশে। এই ময়েশ্চারাইজারটি স্কিনের একনে রিলেটেড প্রবলেম কমিয়ে ও পোরস মিনিমাইজ করে স্কিনে ন্যাচারাল গ্লো নিয়ে আসে।

কম্বিনেশন স্কিনের জন্য সাপ্তাহিক যত্ন

১) কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর দিয়ে এক্সফোলিয়েশন

স্কিনে একনে বা কোনো প্রবলেম না থাকলে উইকলি একবার স্ক্রাবিং করতে পারেন। কিন্তু ইদানিং কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। স্কিনে জমে থাকা ডেড সেলস রিমুভ করার জন্য কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর দারুণ কাজ করে৷ এই এক্সফোলিয়েটর ইউজ করা হলে খুব জেন্টলি স্কিন থেকে ডেড সেলস রিমুভ হয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে স্কিনে হেলদি গ্লো আসে। গ্লাইকোলিক অ্যাসিড কিংবা ল্যাকটিক অ্যাসিড রয়েছে এমন এক্সফোলিয়েটর কম্বিনেশন স্কিনের জন্য বেশ ভালো কাজ করে।

তবে এক্ষেত্রে একটা পরামর্শ থাকবে, যারা একদমই বিগেইনার তারা এমন একটা কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর বেছে নিন, যেটা স্কিনের জন্য হার্শ হবে না। কারণ বিগেইনারদের স্কিন কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটরের ফর্মুলার সাথে অভ্যস্ত থাকে না। একারণেই মূলত মাইল্ড এক্সফোলিয়েটর বেছে নিতে হবে। তবে প্রতিদিন কিন্তু এই এক্সফোলিয়েটর ইউজ করা যাবে না। সপ্তাহে একদিন কিংবা দুই দিন রাতের বেলা এটা ইউজ করুন, ডিফারেন্সটা নিজেই বুঝতে পারবেন!

২) ফেইস মাস্ক বা শিট মাস্ক অ্যাপ্লাইয়িং

শিট মাস্ক অ্যাপ্লাইয়িং

কম্বিনেশন স্কিনের জন্য অ্যামেজিং একটা প্রোডাক্ট হচ্ছে শিট মাস্ক। এই রেডিমেড মাস্ক স্কিনের হাইড্রেশন ও ময়েশ্চার লেভেল রিস্টোর করে ইনস্ট্যান্টলি। সেই সাথে স্কিনে হেলদি গ্লো ফিরিয়ে আনে। জাস্ট অ্যাপ্লাই করে মিনিট দশেক রেখে তুলে ফেলুন, এক্ষেত্রে ফেইস পানি দিয়ে ধোয়ার প্রয়োজন নেই।

স্কিনের বিভিন্ন সমস্যার জন্য বিভিন্নরকম ফেইস মাস্ক রয়েছে। তবে কম্বিনেশন স্কিনের জন্য ক্লে মাস্ক খুবই ভালো কাজ করে। এই ধরনের মাস্ক স্কিন ড্রাই আউট না করেই স্কিনের এক্সট্রা অয়েল কন্ট্রোল করে এবং একইসাথে ব্ল্যাকহেডস রিমুভ করে। তাই মার্কেটে অ্যাভেইলেবল যেকোনো ক্লে মাস্ক সপ্তাহে দুই দিন অ্যাপ্লাই করুন এবং মিনিট দশেক রাখার পর ধুয়ে ফেলুন।

এটুকুই ছিল আমাদের আজকের ডিসকাশন। চেষ্টা করেছি খুব ইজি ও মিনিমাল একটা স্কিনকেয়ার রুটিন শেয়ার করতে। যদি এই স্কিনকেয়ার রুটিন থেকে অ্যাকচুয়াল বেনিফিট পেতে চান, তাহলে সবসময় অথেনটিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ইউজ করুন। আর অথেনটিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের জন্য সাজগোজ রয়েছে আমার পছন্দের তালিকার শীর্ষে। অনলাইনে কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র‍্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

 

ছবি- সাজগোজ

18 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort