গর্ভাবস্থায় ৮টি ভুল ধারণা | সঠিক তথ্য জেনে থাকুন সুস্থ!

গর্ভাবস্থায় ৮টি ভুল ধারণা | সঠিক তথ্য জেনে থাকুন সুস্থ!

গর্ভাবস্থায় ৮টি ভুল ধারণা সম্পর্কে জেনে হতাশ একজন

গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই একজন নারীর আশে পাশের পরিচিত লোকজন বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এটা করবে না, ওইটা খাবে না, এটা ব্যবহার করলে সন্তানের জন্য খুব খারাপ এরকম আরো কত যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়! কিন্তু সব কিছুই কি আসলে মেনে চলাটা জরুরী? কিছু ভুল ধারণাও তো থাকতে পারে। আসুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় ৮টি ভুল ধারণা নিয়ে বিস্তারিত।

গর্ভাবস্থায় ৮টি ভুল ধারণা

১. ভুল তথ্যঃ ফ্লু ভ্যাক্সিন (Flu vaccine) নেওয়া যাবে না। অনেকেই ভয় পান এটা ভেবে যে এর কারণে গর্ভে থাকা শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হবে। কেউ কেউ মনে করেন হয়ত তার শিশুর কিছু হবে না কিন্তু তিনি নিজে ফ্লুতে আক্রান্ত হবেন।

Sale • Bath Time, Baby Care, Sunscreen

    সঠিক তথ্যঃ প্রেগনেন্সিতে নারীর ইমিউন সিস্টেমে (immune system) কিছু পরিবর্তন আসে। এসময় তাই একজন গর্ভবতী নারীর ফ্লু হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ অবস্থায় ফ্লু ভ্যাক্সিনেশন তাই মা এবং মায়ের গর্ভে থাকা শিশুর জন্য খুবই জরুরি।

    ২. ভুল তথ্যঃ ২ জন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ যতটুকু খাদ্য গ্রহণ করে তত পরিমাণ খাদ্য একজন গর্ভবতী খাবেন।

    সঠিক তথ্যঃ যদি একজন গর্ভবতী নারীর ওজন গর্ভধারণের আগে স্বাভাবিক থেকে থাকে তাহলে শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য তাকে আগের তুলনায় প্রতিদিন অতিরিক্ত ৩০০ ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসকদের মতে একজন নারীর গর্ভাবস্থার আগে যদি ওভার ওয়েট (overweight) না হয়ে থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় তার ওজন ২৫ থেকে ৩৫ পাউন্ড বৃদ্ধি পাওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু এর বেশি নয়। কারণ শিশুর জন্মের পর মায়ের অতিরিক্ত ওজন কমাতে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। যদি ওজন ৫০ পাউন্ডের বেশি বৃদ্ধি পায় তাহলে সেক্ষেত্রে শিশু জন্মের সময় কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে আর জন্মের সময় যেসব শিশু অতিরিক্ত ওজনের হয়ে থাকে তাদের বড় হওয়ার পরে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।

    ৩. ভুল তথ্যঃ হেয়ার ডাই (hair dye) করালে শিশুর ক্ষতি হবে।

    সঠিক তথ্যঃ হেয়ার ডাই এর ক্ষেত্রে যেসব কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় সেগুলোর সামান্য অংশ আমাদের ত্বক শোষণ করে নেয়, যা মা বা শিশুর জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে কেমিক্যালের কড়া গন্ধে হয়ত একজন গর্ভবতী নারী অস্বস্তি বোধ করতে পারেন তাই এরকম সময়ে এমন জায়গায় হেয়ার ডাই এর জন্য যেতে হবে যেখানে ভেন্টিলেশন (ventilation) ব্যবস্থা ভালো থাকবে। তারপরেও যদি আপনার দুশ্চিন্তা থাকে এ ব্যাপারে তাহলে অ্যামোনিয়া আছে এমন ডাই এড়িয়ে চলুন। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গর্ভধারণের পর আপনার চুলের সহনশীলতায় পরিবর্তন আসতে পারে। গর্ভধারণের আগে যেই প্রোডাক্ট আপনার চুলে ভালো কাজ করত সেই একই প্রোডাক্ট গর্ভধারণের পর কাজ নাও করতে পারে।

    ৪. ভুল তথ্যঃ গর্ভাবস্থায় ক্যাফেইন (caffeine) গ্রহণ করা একদম বন্ধ করতে হবে কারন এটি  গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।

    সঠিক তথ্যঃ গবেষোণায় দেখা গিয়েছে যে একজন গর্ভবতী নারী যদি ২০০ মিলিগ্রামের কম (একটি ১২ ounce কফির কাপ এ যতটুকু কফি থাকবে) কফি পান করেন সেক্ষেত্রে তার গর্ভপাত আর লো বার্থ ওয়েট (low birth weight) এর কোন ঝুঁকি থাকে না।

    ৫. ভুল তথ্যঃ বডি স্ক্যানার (body scanner) থেকে দূরে থাকুন।

    সঠিক তথ্যঃ বিভিন্ন জায়গায় প্রবেশ করার আগে আজকাল বডি স্ক্যানার ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই কারণ এয়ারপোর্ট বডি স্ক্যানার (Airport body scanner), সিকিউরিটি এক্স-রে মেশিন এগুলোর সামান্য রেডিয়েশন (radiation) একজন গর্ভবতীর কোন ক্ষতি করতে পারে না। তবে যেসব নারীর গর্ভধারণের পরবর্তী সময়ে ফুস্ফুস অথবা হৃদরোগের সমস্যা দেখা দেয় তারা সাধারণত ৩০,০০০ ফুট উপরে অস্বস্তিতে পড়তে পারেন। তাই প্লেনে যাত্রা করার আগে তাদের চিকিৎসকের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত।

    ৬. ভুল তথ্যঃ গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়া যাবে না।

    সঠিক তথ্যঃ সপ্তাহে ২ বার মাছ খেতে পারলে ভালো কারণ মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড (omega-3 fatty acid) আছে যা গর্ভে থাকা শিশুর ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট আর দৃষ্টি শক্তির জন্য জরুরি। তবে অবশ্যই রান্না করা মাছ খেতে হবে।

    আমাদের দেশে এখন কিছু জায়গায় সুসি (sushi) অথবা সাশিমি (sashimi) পাওয়া যায়, বিশেষ করে কোন ফুড ফেস্টিভাল হলে, কোরিয়ান খাবারের দোকানগুলোতে বা ফাইভ স্টার হোটেলগুলোতে। এগুলো এক ধরনের জাপানীজ খাবার যেটাতে মাছ কিছুটা কাঁচা অবস্থায় থাকে। কাঁচা মাছে ব্যাকটেরিয়া থাকার সম্ভাব না রয়েছে যা গর্ভবতী নারী ও তার গর্ভে থাকা শিশুর জন্য ক্ষতিকর। তবে রান্না করা সুসি খাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন দোকানে টুনা (tuna) মাছ পাওয়া যায় যা ক্যানের ভেতর প্রস্তুত করে রাখা থাকে। সেগুলো খাওয়া যেতে পারে।

    ৭. ভুল তথ্যঃ গর্ভবতী নারী কয়টাস (coitus) করতে পারবে না।

    সঠিক তথ্যঃ গর্ভবতী নারী কয়টাস করতে পারবে। কারণ এর ফলে গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক কোন ক্ষতি হবে না। শিশু   অ্যামনিওটিক স্যাক (amniotic sac) এবং স্ট্রং ইউটেরাইন মাসল (strong uterine muscle) এর মাধ্যমে তার মায়ের গর্ভে সুরক্ষিত থাকে। তবে সেক্সচুয়ালি ট্রান্সমিটেড ইনফেকশন যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সন্তানের মা ও বাবা ২ জনকেই সাবধান থাকতে হবে। কারণ গর্ভবতী নারী যদি হার্পিস, জেনিটাল ওয়ার্ট, এইচআইভি (HIV) দ্বারা আক্রান্ত হয় তাহলে তার কাছ থেকে তার গর্ভে থাকা শিশুর মাঝেও রোগ ছড়াতে পারে। তবে এ ব্যাপারে বেশি দুশ্চিন্তা হলে চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে যে  coitus এ involve হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ কিনা।

    ৮. ভুল তথ্যঃ এ অবস্থায় সব সময় বা দিকে কাঁত হয়ে শুতে হবে।

    সঠিক তথ্যঃ যেদিকে বা যেভাবে শুয়ে আরাম বোধ হয় সেভাবে শুতে হবে।

    ছবিঃ সংগৃহীত – সাটারস্টক

    21 I like it
    2 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort