খাঁটি নারকেল তেল | চুলের যত্নে কেন সেরা এবং উপকারী?

খাঁটি নারকেল তেল চেনার উপায় কী?

coconut oil

দীঘল লম্বা চুলের যুগ থেকে শর্ট ব্যাংস হেয়ার স্টাইল পর্যন্ত চুলের যত্নের সব সময়ই একটা বিষয় প্রাধান্য পেয়ে আসছে আর তা হল সুস্থ চুল। সুস্থ চুল হল নিয়মিত যত্নের ফসল। চুলের যত্ন না নিলে চুল অচিরেই ফাটে এবং ভেঙে যায়। আর চুলের যত্নের প্রাথমিক উপাদান হল তেল। চুলের যত্নে খাঁটি নারকেল তেল ব্যবহার সেই আদিকাল থেকেই হয়ে আসছে। এখনকার যুগে বিভিন্ন রকম হেয়ার সল্যুশন কেমিক্যাল প্রোডাক্ট-এর ভিড়েও বহু পরিচিত একটি প্রাকৃতিক প্রসাধনী হচ্ছে নারিকেল তেল। চুলের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নারকেল তেলের জুড়ি নেই।

 নারকেল তেলের উপকারিতা

প্রাকৃতিক এই প্রসাধনীটি শুধু চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা করে তা নয়, নিয়মিত এই তেল ব্যবহারে চুল ও ত্বক ভালো রাখার পাশাপাশি শরীরের অনেক অসুখও দূর হয়। নারিকেল তেল হেয়ার কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। সবচেয়ে কম দামে ও সহজলভ্য হেয়ার কন্ডিশনার হচ্ছে নারিকেল তেল। এই তেল প্রয়োজনীয় পুষ্টি দিয়ে ক্ষতিকর প্রভাব থেকে চুলকে রক্ষা করে। নিয়মিত নারিকেল তেল ব্যবহারে চুল তাড়াতাড়ি বড় হয়। এছাড়া কিছু কিছু ময়লা আছে যা সহজে পরিষ্কার হয় না। কিন্তু মাথার ত্বক ও চুলে নারিকেল তেল দিলে তা সহজে দ্রবীভূত হয়ে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

চুলের যত্নে খাঁটি নারকেল তেল

আগের দিনে দাদি-নানিরা চুলের যত্ন বলতে নারিকেল তেল আর মেহেদী দেয়াটাই বেশি করতেন। কিন্তু এখন ব্যস্ত সময়ের যুগ, যেখানে ঠিকমত খাওয়া-ঘুমের জন্যই সময় বের করতে হিমসিম খেতে হয়। সংসারের কাজ, বাচ্চাদের স্কুল, অফিস, শপিং… আরো কত কী! এত কাজের ভিড়ে চুলের যত্নে খাঁটি তেল বানিয়ে নেয়ার সময় কোথায়? তাছাড়া যেখানে বাজারে খুঁজলেই এখন হাজারো ব্র্যান্ডের তেল পাওয়া যায়। শুধু কিনে নিলেই হল! কিন্তু আসল চ্যালেঞ্জ হল এই ভেজাল দ্রব্যের বাজারে সঠিক ব্র্যান্ড-এর জিনিসটি খুঁজে নেয়া। যা শুধু ভেজাল মুক্তই নয়, ব্যবহার করে তার উপকার পাওয়া যাবে হাতে হাতে!

খাঁটি নারকেল তেল চেনার উপায়সমূহ

১) নারিকেল তেলের সব থেকে বড় গুণ হচ্ছে এটি ঠান্ডা হলে জমে যায়। নারিকেল তেল খাঁটি কিনা তা বোঝার জন্য ৩০ মিনিট ফ্রিজে জমতে দিন। তেল যদি পুরোপুরি জমে গিয়ে থাকে, তাহলে বুঝবেন আপনার তেল একদম খাঁটি।

খাঁটি নারকেল তেল একদম পানির কালার হয়ে থাকে।

২) নারকেল তেল যদি হলুদ বা গ্রে কালারের হয়ে থাকে তাহলে বুঝতে হবে এতে কেমিক্যাল মেশানো আছে। এই সকল ভেজাল তেল ব্যবহার করার কারণে পড়তে থাকে চুল।

৩) তাছাড়া নারিকেল তেলে আছে লরিক এসিড নামের এক ধরনের ফ্যাটি এসিড, যার দরুণ অন্য যেকোন তেলের চেয়ে এই তেলকে চুল সবচেয়ে দ্রুত শুষে নেয়। এতে চুলও হয়ে ওঠে মসৃণ ও মজবুত। অনেকেরই অন্যান্য তেল চুলে স্যুট করে না। অনেক সময় আঠালো হয়ে থাকে কয়েকবার শ্যাম্পু করেও তেল ওঠানো যায় না। কিংবা চুল পড়ে!

৪) অতিরিক্ত চুল ধোঁয়ায় চুল রাফ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে নারিকেল তেল খুব সুন্দর কাজ করে। পরিমাণমত দিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর খুব সহজেই ধুয়ে ফেলা যায়। তাছাড়া এই এক তেলেই চুলের যাবতীয় প্রায় সব প্রব্লেমের সমাধান আছে। খুশকি, চুলের আগা ফাটা, চুলকে ময়েশ্চারাইজড করা, চুলের গোঁড়া মজবুত করা ইত্যাদি।

এখন কথা হচ্ছে, বাজারে এমন খাঁটি নারিকেল তেল সুলভমূল্যে খুঁজে পাওয়াটা আজকাল একটু দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে! আমি কিন্তু এমন তেল খুঁজে পেয়েছি। সেটা হল প্যারাসুট কোকনাট অয়েল। একদম যেরকমটা উপরে বর্ণনা করেছি তেমনটাই খাঁটি এই তেল। আমি প্যারাসুট কোকোনাট অয়েল ছাড়া অন্য কোন অয়েল চুলে ব্যবহার করতে পারি না। কারণ অন্য কোন তেল আমার চুলে অ্যাকচুয়েলি স্যুট করে নি। আমি ভেবেছিলাম এটা বুঝি শুধু আমারই প্রবলেম! পড়ে দেখি আমার মত এই সমস্যায় আরও অনেক পরিচিতরাও ছিলেন। এই তেলটিই আমাকে সাহায্য করেছে ওভারঅল হেয়ার কেয়ার-এ।

তাছাড়া আমি দুটো হেয়ার প্যাক ব্যবহার করি যা এই তেল দিয়ে বানাই-

নারকেল তেল ও বাদাম দুধ

২ টেবিল চামচ বাদাম দুধ, ১ চা চামচ মধু ও ২ টেবিল চামচ প্যারাসুট কোকোনাট অয়েল মিশিয়ে প্যাক-টি তৈরি করে নিন। এবার এই প্যাক-টি চুলের গোঁড়া থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ চুলে লাগান। দেড় ঘণ্টা রাখুন। শ্যাম্পু করে ফেলুন।

এই প্যাকটি সব ধরনের চুলের জন্য প্রযোজ্য। অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত চুলের জন্য এটি বেশ কার্যকরী। বাদাম দুধ এবং নারকেল তেল চুলকে ময়েশ্চারাইজ করার পাশাপাশি চুলের গোঁড়া মজবুত করে থাকে।

কলা ও নারকেল তেল

একটি পাকা কলা চটকে তাতে ১ চা চামচ মধু ও ২ টেবিল চামচ প্যারাসুট কোকোনাট অয়েল মেশান। মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। সামান্য শ্যাম্পুর সঙ্গে পানি মিশিয়ে চুল ধুয়ে নিন। চুল সিল্কি করতে সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে পারেন এই হেয়ার প্যাক।

আরো কিছু টিপস-

১) সপ্তাহে একদিন হট অয়েল ট্রিটমেন্ট ট্রাই করুন। নারকেলের তেল গরম করে স্কাল্পে হালকা হাতে ঘষুন।

২) শুস্ক, স্বাভাবিক, তৈলাক্ত বা কালারড হেয়ারের জন্য রেগ্যুলার নারকেল তেল ব্যবহারের পাশাপাশি আলাদা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

৩) শ্যাম্পু করার আগে চুলে তেল দিয়ে ভালো করে আঁচড়ে নিন। চুলের জটতো ছাড়বেই, সঙ্গে ময়লাও পরিষ্কার  হবে, মরা কোষ ঝরে পড়বে।

 

এই ছিল হেয়ার কেয়ার-এ নারকেল তেল ব্যবহার সম্পর্কিত কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য। আসলে চুলটা কিন্তু খুব ইম্পরটেন্ট একটা পার্ট আমাদের শরীরের। তাই এর যত্নটাও একটু বিশেষভাবেই করতে হয়।

ছবি- সংগৃহীত: shutterstock

29 I like it
9 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort