নারকেল তেলের উপাদান ও চুল মজবুত রাখতে এর গুরুত্ব!

নারকেল তেলের উপাদান ও চুল মজবুত রাখতে এর গুরুত্ব!

677

“চুল সব পড়ে যাচ্ছে!!”

“চুলের আগা ফেটে যাচ্ছে, কী করবো??”

“অল্পতেই চুল ভেঙ্গে যায়, কী লাগালে এমনটা হবে না??”

……সবগুলোই খুব পরিচিত কিছু প্রশ্ন, তাই না? কিভাবে চুল পড়া বন্ধ করবো, চুলকে শক্ত ও মজবুত করবো এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে যে মাথার চুল আরো পড়ে যাচ্ছে সেই খেয়াল কি কারো আছে? এই প্রশ্নগুলো একসময় আমারও ছিল। তবে এগুলোর উত্তর আমি অনেক কিছু ব্যবহার করে, অনেক ঘাটাঘাটির পর খুঁজে পেয়েছি। তাই এই সল্যুশন-টা সবার সাথে শেয়ার করতে চাই। অবাক হবেন, যদি বলি শুধু একটিমাত্র উপাদান আপনাকে সবগুলো সমস্যার সমাধান দিবে! আর সেটি আমাদের হাতের কাছেই পাওয়া যায়। হ্যা, সেই উপকরণটি হলো- “নারকেল তেল”! চলুন তবে নারকেল তেল ও এর উপাদানসমূহ নিয়ে আরও ডিটেইলে জানা যাক!

নারকেল তেলের উপাদান ও চুলের যত্নে এর গুরুত্ব 

নানারকম তেল ব্যবহারের পর একটি তেল ব্যবহার করে আমি মনের মতো রেজাল্ট পাই, তা হলো “প্যারাস্যুট অ্যাডভান্সড কোকোনাট হেয়ার অয়েল”। অনেকেই নিশ্চয় বলবে নারকেল তেল অনেক ব্যবহার করেছি। কিছুই হয় নি। তাদের জন্য আমার আজকের লেখা। নারিকেল তেল তখনই আপনাকে এর যাদুকরী ফলাফল দেখাবে যখন আপনি এর গুণাগুণ ও সঠিক ব্যবহার জানবেন।

চুল পড়ে কেন?

সমস্যার সমাধান জানার আগে জানতে হবে চুল পড়ে যায় কেন? একটি বাচ্চা মেয়েকেও যদি এই প্রশ্ন করেন সে সাথে সাথে বলে দিবে আপনাকে- “চুল দুর্বল তাই পড়ে যায়”। এটি তো সহজ বাংলায় বললাম। বায়োলজিক্যালি চুল পড়ে মূলত বংশগত কারণে। তবে বংশগত ও কেমিক্যাল ছাড়াও প্রোটিনের অভাবে চুল পড়ে। চুলের গোড়া নরম ও দূর্বল হলে চুল পড়ে যায়, চুল অতিরিক্ত শুষ্ক ও ময়েশ্চারের অভাব হলে চুল ভেঙ্গে যায়, আগা ফেটে যায় এবং চুল পড়ে। তাছাড়া এখনকার দিনে নানারকম হেয়ার স্টাইলিং প্রোডাক্টের ব্যবহার তো আছেই।

চুলের যত্নে নারকেল তেল কেন উপকারী?

চুল পড়ার কারণতো অনেকগুলোই। কিন্তু সবগুলোর সমাধানের মূল উপাদান একটাই। ‘খাঁটি ও বিশুদ্ধ নারকেল তেল’। নারকেল তেল যে চুল পড়া বন্ধ করে চুলকে গোড়া থেকে শক্ত ও মজবুত করে তার নানারকম সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যাও আছে।

একটি গবেষণায় কোকোনাট অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল এবং মিনারেল অয়েল আলাদা আলাদা ব্যবহার করে পরীক্ষা করা হয়, কোন তেলের চুলে প্রোটিন ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি। এতে দেখা যায় নারিকেল তেল ব্যবহার করে চুল ধোয়ার পর চুলের প্রোটিন হারানোর পরিমাণ অন্য দুইটি তেলের চেয়ে কম। এমনকি তাদের গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়, সব ধরনের চুল যেমন কালারড হেয়ার, ব্লিচড হেয়ার, রোদহিটে ড্যামেজ হওয়া চুলেও প্রাণ ফিরিয়ে আনতে কোকোনাট অয়েলই সবচেয়ে কার্যকরী।

কালারড হেয়ারের যত্নে নারকেল তেল - shajgoj.com

নারিকেল তেলে লরিক এসিড (lorik acid) নামের এক ধরনের ফ্যাটি এসিড দিয়ে তৈরি যার কারণে অন্য যেকোন তেলের চেয়ে এই তেলকে চুল সবচেয়ে দ্রুত শুষে নেয়। এতে চুল তার হারানো পুষ্টি ফিরে পায় এবং চুল আরো শক্ত ও মজবুত হয়।

চুল ঘন ও মোটা করতে তেল দেয়ার নিয়ম

যারা ঘন, লম্বা ও মোটা চুল চান, তাদের জন্য প্রথম টিপস হলো অবশ্যই নিয়মিত নারিকেল তেল লাগানোর অভ্যাস করুন। নারিকেল তেল চুলের ময়েশ্চার বৃদ্ধি করে চুলকে সফট ও স্মুথ করে। যার ফলে চুলে কোন জট থাকে না ও আচড়ানোর সময় চুল ভেঙ্গে যায় না। তাছাড়াও চুল দূর্বল হলে হেয়ার স্টাইলিং-এর সময় অনেক চুল পড়ে। নারিকেল তেল চুলকে গোড়া থেকে শক্ত করে সাথে স্টাইলিং-এর কারণে যেকোন ধরনের হেয়ার ড্যামেজ থেকেও চুলকে রক্ষা করে।

চুলের যত্নে নারকেল তেল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল - shajgoj.com

এগুলো ছাড়াও কোকোনাট অয়েলের সাথে ভিটামিন ই এর কম্বিনেশন চুলের কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। চুলকে স্বাস্থ্যজ্জল ও প্রাণোবন্ত করে তোলে। সূর্য্যের ক্ষতিকর ‘ইউভি রশ্মি’ (UV ray)-এর ফিল্টার হিসেবেও কাজ করে এই কোকোনাট অয়েল, যা চুলকে ড্যামেজ হওয়া থেকে বাঁচায়। নারিকেল তেলে আছে অ্যান্টি-ম্যাক্রোবিয়াল প্রোপার্টিজ যা মাথার স্ক্যাল্পে ফাঙ্গাস জমতে দেয় না ও খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।

নারকেল তেল ব্যবহারের কিছু টিপস

১. কথায় আছে, “অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না”। নারিকেল তেল ব্যবহারের সময় এই কথাটি মাথায় রাখতে হবে। প্রত্যেকটি মানুষের চুলের ধরন ভিন্ন। তাই শুরু করুন অল্প থেকে। বুঝার চেষ্টা করুন আপনার চুলের জন্য সহনশীল পরিমাণ কতটুকু।

.’প্যারাস্যুট অ্যাডভান্সড কোকোনাট হেয়ার অয়েল’-এর সাথে সামান্য পরিমাণ অলিভ অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল বা আরগান অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন। আমার চুলে সবচেয়ে ভালো কাজ করেছে কোকোনাট অয়েল, সমপরিমাণ অলিভ অয়েল ও অল্প পরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল।।

. নারিকেল তেলের সাথে সাথে সামান্য পরিমান মধু ও টক দই মিশিয়ে চুলে লাগালে এটি ডিপ কন্ডিশনিং-এর কাজ করে। এই প্যাকটি চুলের শাইন বাড়াবে আর সাথেসাথেই আপনি পার্থক্য বুঝতে পারবেন।

 

. বাজারে নানারকম ক্ষতিকর উপাদানসমৃদ্ধ শ্যাম্পু পাওয়া যায় সেগুলোতে থাকে প্যারাবেন, পলিইথিলিন গ্লাইকল, সোডিয়াম লরাইল সালফেট ইত্যাদি। এগুলো চুলের জন্য অসম্ভব ক্ষতিকর। তাই শ্যাম্পু কেনার সময় ভালোভাবে দেখে কিনুন।

. সপ্তাহে অবশ্যই ২ থেকে ৩ বার হট অয়েল ম্যাসাজ করুন। ম্যাসাজ শেষে একটি শাওয়ার ক্যাপ পরে অন্তত ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এরপর মাইল্ড কোন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।

আপনি চুলের যত্নে প্রোডাক্ট কিনতে পারেন সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ থেকে যা যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। আর যদি অনলাইনে কিনতে চান তাহলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন আপনার অথেনটিক প্রোডাক্ট!

যদি প্রশ্ন করি আপনার শরীরের সবচেয়ে পছন্দের অংশ কোনটি? কী হবে আপনার উত্তর? আমার উত্তর হবে আমার চুল। কোন কিছু দেখে এতটা কষ্ট আমার হয় না, যতটা হয় চিরুনিতে পড়ে যাওয়া চুল দেখে। শুধু আমার না, আমার মনে হয় এই অভিজ্ঞতা আমার মত আরো হাজারো মেয়ের। তাই চুলের যত্নটা শুরু করুন আজকে থেকেই, শুধুমাত্র কোকোনাট অয়েল ব্যবহার করেই।

 

ছবি- Shutterstock

213 I like it
33 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort