নেশাকেই পেশায় পরিণত করুন - Shajgoj

নেশাকেই পেশায় পরিণত করুন

paint

পড়াশোনার নানারকম চাপ সামলাতে সামলাতে আর পরিবারের প্রত্যাশামত কোন একটি ক্ষেত্রকে বেছে নিয়ে সেটাকেই অর্থের যোগান বানিয়ে চলার যে প্রতিনিয়ত প্রয়াস, সেখান থেকে বেরিয়ে আমরা কজন পারি নিজের শখকে নিয়ে একটু মেতে উঠতে? কজন পারি নিজের নেশাটিকে শান দিয়ে দিয়ে তা পেশায় রুপান্তর করে আমৃত্যু জীবনটাকে উদযাপন করে যেতে? ভেবেছি কখনও? হয়ত ভেবেছি, আবার হয়ত না!

এক কালে লোকের ধারণা ছিল ছবি আঁকা নেশা হতে পারে, কিন্তু তা থেকে অর্থের যোগান আসবে বলে ভাবাটা ঠিক বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আর তাতে সম্মানও নেই। সম্মান আছে কেবল ডাক্তারি আর ইঞ্জিনিয়ারিং পেশায়। ধারণাগুলোর পরিবর্তন হয়েছে এখন অনেকটাই। এইম ইন লাইফ ঠিক করতে গিয়ে এখন অনেকেই সাহস করে বেছে নিচ্ছেন ফোটোগ্রাফি, পেইন্টিং, মিউজিক কিংবা লেখালেখির মত বিষয়গুলোকে। তবে শখ বা নেশাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিবেন কিনা এমন দোটানায় যারা ভুগছেন, আজকের এই লেখাটি তাদের জন্যই। জোর করে যে কাজ ভালো লাগে না, শুধুমাত্র সমাজে তার চাহিদা আছে ভেবে সেকাজে সারাজীবন ব্যয় করবেন বলে ঠিক করার আগে একটু সাহস করে নিজের নেশাটিকেই খানিক পলিশ করে দেখুনই না জীবন তাতে অর্থবহ হয় কিনা? চ্যালেঞ্জ নিতে শিখুন। ঠকবেন না।

[picture]

নেশাকে পেশায় রুপান্তরের আগে কয়েকটি ধাপে নিজেকে তৈরি করে নিন। ধাপগুলো দেখে আসি চলুনঃ

০১। শিখুন এবং আয়ত্ত করুনঃ

ভালোবাসার কাজটিকে আরও বেশি ভালো করে আয়ত্ত করতে চাইলে যত দ্রুত পারেন, শিখে নিন। শিখে নিয়ে চর্চা করতে থাকুন। বেসিক থেকে শুরু করে খুঁটিনাটি সবকিছুই যত বেশি জানবেন, প্রফেশনাল ক্ষেত্রে তা তত বেশি সুবিধা দেবে আপনাকে। আপনার কন্ট্যাক্টে থাকা সকল বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের পরামর্শ নিন নিয়মিত। দ্রুততার সাথে শিখে নিতে বলছি এ কারণে যে কাজে হাত দিলেই মূলত বাস্তবতা সম্পর্কে ভালো জানতে পারবেন। সেটি পড়াশোনা করে জানার চেয়ে কম সুবিধা দিবে না বৈকি! বরং কিছু ক্ষেত্রে একটু বেশিই সুবিধা দেবে।

০২। প্রাথমিক পরিকল্পনা শুরু করুনঃ

ক্যারিয়ার শুরু করার আগে একটি নিখুঁত পরিকল্পনা তৈরি করুন। সব ক্ষেত্রে তা হয়ত লাগবেও না, কিন্তু কর্মজীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট তৈরি করে নিয়ে প্রস্তুত থাকার কোন জুড়ি নেই। বুদ্ধিমান মাত্রেই তা করে থাকে। আর তাছাড়া একটি ভালো পরিকল্পনা আসলে অচেনা পথের নির্দেশনার মতই কাজ করে অনেকটা। তবে পরিকল্পনা খুব বড় করতে যাবেন না যেন। ভজঘট পাকিয়ে সময় নষ্ট হবে তাতে। বরং ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করে এগোন। দিন শেষে তৃপ্তির খাতায় নাম থাকবে আপনারই।

০৩। নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুনঃ

শক্তিশালী একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুন। একা পথ চলা শুধু কঠিন নয়, খানিক বোকামিও। আর ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে ভালো সম্পর্ক, কার্যকরী নেটওয়ার্ক এসবের গুরুত্ব সবসময়েই ছিল, আছে আর থাকবেও। সবকিছু একা সামলে নেয়ার ক্ষমতা তৈরি হয়ে না থাকলে সহযোগী ঠিক করুন। তা নাহলে আউটসোর্সও করতে পারেন। আজকাল অনেকেই ফ্রিল্যান্সে কাজ করে। তাদের মধ্য থেকেই সুদক্ষ কাউকে বেছে নিন। শ্রম লাঘব হবে, কাজেও গতি আসবে।

০৪। বিশ্রাম নিনঃ

ভালোবাসার কাজটিকে পেশায় পরিণত করে পথ চলা যখন শুরু করবেন, কাজকে তখন আর কাজ বলে মনেই হবে না। সমস্ত মন-প্রাণ, শক্তি দিয়ে কাজ করতে করতে ক্লান্তি চলে এলেও তা মন মানতে চাইবে কেন? কিন্তু তা যে মানতেই হবে! অবশ্যই বিরতি নিয়ে কাজ করবেন। টানা খাটুনি দিতে গিয়ে সুস্থতা হারিয়ে ফেলবেন না যেন। ভবিষ্যতের জন্য তা সমস্যাই সৃষ্টি করবে বরঞ্চ! কাজেই বিশ্রাম নিয়ে, ঠান্ডা মাথায়, সুস্থ শরীরে মন দিয়ে কাজ করুন।

০৫। অনুপ্রেরণা খুঁজুনঃ

ইতিহাস ঘেটে আপনার পুর্বসূরিদের সম্পর্কে জেনে নিন। জেনে নিন তারা কীভাবে জয় করেছেন নিজেদের স্বপ্নকে। সে অনুপ্রেরণাগুলোকে জড়ো করে নিজেকে উজার করে দিন আজই। সাফল্য ধরা দেবেই। হাজারটা অনুৎসাহকে পেছনে ফেলে আপনাকে সামনে ঠেলে দিতে একটি অনুপ্রেরণার গল্পই যথেষ্ট। আপনাকে শুধু উপযাচক হয়ে অনুপ্রেরণার উৎসটুকু খুঁজে নিতে হবে।

তো লেগে পড়ুন আজকে থেকে আপনার স্বপ্নটাকে ছুঁতে। মনটাকে তৈরি করে কাজে ঝাপিয়ে পড়ুন। সুদিন খুব বেশি দূরে নয়। শুভ কামনা রইল।

লিখেছেনঃ নুজহাত ফারহানা

ছবিঃ     nordljusfollowyourstar.blogspot.com

1 I like it
0 I don't like it
পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort