আমাদেরএই কর্মমুখী ব্যস্ত জীবনে বেশিরভাগ সময়ই আমরা নিয়মিত আমাদের চুলের যত্ন ঠিক মতো নিতে পারি না। দীর্ঘ দিনের অযত্নে চুল হয়ে যায় রুক্ষ প্রাণহীন। চুলের যত্নে নারকেল তেলের উপরে আর কিছু হতেই পারে না। আমার কাছে মনে হয়, তার জন্যে প্যারাসুট অ্যাডভান্সড নারকেল তেলই বেস্ট। কারণ এটি একদম খাঁটি নারকেল থেকেই বানানো হয়। একদম পিওর কোকোনাট অয়েল বলতে পারেন।
চলুন তবে চুলের ঝলমলে সুন্দর ভাব ফিরিয়ে আনতে আজ এই তেল ব্যবহার করেই ঘরে তৈরি করে ফেলা যায় সহজেই এমন দু’টি নারকেল তেলের হেয়ার মাস্ক নিয়ে আজ কথা বলা যাক, কেমন?
১) নারকেল তেল ও রসুন
উপকরণ-
- ৪-৫ টেবিল চামচ প্যারাসুট অ্যাডভান্সড নারকেল তেল
- রসুনের রস আথবা রসুন গুঁড়ো
- কাটা রসুনের কোয়া
যেভাবে তৈরি ও ব্যবহার করবেন-
৪-৫ টেবিল চামচ প্যারাসুট অ্যাডভান্সড নারকেল তেল কুসুম গরম করে নিন। তারপর এক চা চামচ রসুনের রস অথবা রসুন গুঁড়ো তেলের সাথে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি যেন একদম মিহি হয়।
প্রথমে রসুনের কোয়া দুই ভাগ করে নিয়ে মাথার তালুতে আস্তে আস্তে ঘষে ঘষে লাগাতে হবে। তারপর রসুন ও তেলের মাস্ক-টি আলতোভাবে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করতে হবে কিছুক্ষণ। এতে করে মাথার রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, চুল পড়া কমে ও চুলের গোঁড়া মজবুত হয়। এভাবে ২-৩ ঘণ্টা রেখে দিন ( চাইলে সারা রাতও রাখতে পারেন)। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ভালোভাবে। এটি চুলে কন্ডিশনার এর কাজও করে। সপ্তাহে ১-২ দিন প্যাক-টি ব্যবহার করুন।
উপকারিতা-
- রসুনে মিনারেল থাকে-যেমন ক্যালসিয়াম, জিংক এবং সালফার যা আমাদের চুল গজাতে সাহায্য করে।
- রসুনে ভিটামিন সি থাকে যা চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখে এবং চুলের ভিতরকার ব্যাকটেরিয়া-গুলোকে নষ্ট করে দেয় আর চুলের গোঁড়া মজবুত করে। এটি চুলের ফলিকল-গুলোকে অনেক মজবুত করে দেয়।
২) নারকেল তেল, ডিম ও অ্যাভোকাডো
উপকরণ-
- এক কাপ প্যারাসুট অ্যাডভান্সড নারকেল তেল
- একটা ডিম, একটি বাটিতে ফেটে নিন
- একটা অ্যাভোকাডোর অর্ধেক, পিষে নিন বা ম্যাশ করুন
যেভাবে তৈরি ও ব্যবহার করবেন-
সবগুলো উপকরণ একসাথে একটি বাটিতে ভালো করে মেশান। পুরো চুলে ভালো করে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। অবশ্যই শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিতে ভুলবেন না!
সপ্তাহে ২ বার মাস্ক-টি চুলে লাগাবেন।
উপকারিতা-
- অ্যাভোকাডোতে আছে ভিটামিন এ, ডি ও বি৬, প্রোটিন, অ্যামিনো এসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ফলিক এসিড ও আয়রন। তাই চুলের পুষ্টি যুগিয়ে দুর্বল, নষ্ট ও রুক্ষ চুলকে পুনরুজ্জীবিত করে মজবুত, ঝলমলে ও সুন্দর করে তুলতে এর জুড়ি নেই।
- চুলের গ্রোথ বাড়াতে এটি অত্যন্ত কার্যকরী। এর ভিটামিনস ড্যামেজড স্ক্যাল্প-কে রিপেয়ার করে চুলকে বড় করতে সহায়তা করে।
- এছাড়াও অ্যাভোকাডো চুলকে খুশকিমুক্ত রাখতেও খুবই কার্যকরী।
- ডিমে আছে প্রোটিন, ভিটামিন এ ও ডি যা চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে, গোঁড়া মজবুত করে তোলে, চুলের গ্রোথ বাড়ায় এবং চুল পড়া কমিয়ে চুলকে অত্যন্ত মজবুত করে তোলে।
**এবার আসি একটু নারকেল তেলের উপকারিতায়-
- প্যারাসুট অ্যাডভান্সড নারকেল তেলে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস, ভিটামিন ই ও কে এবং আয়রন থাকে। এই প্রত্যেকটা উপকরণ আলাদাভাবে চুলকে মসৃণ ও ঝলমলে করে। আয়রন চুলের খুশকি দূর করে। এক কথায় স্ক্যাল্প-কে উকুন ও খুশকিমুক্ত রাখতে এটি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
- নারকেল তেলে উপস্থিত ফ্যাটি এসিড চুলের প্রোটিন হিসাবে কাজ করে।
- এটি চুলের একদম ভিতর অবদি পর্যন্ত ঢুকে গিয়ে চুলের ড্যামেজড ফলিকল রিপেয়ার করে চুলকে মজবুত করে চুলের গ্রোথ বাড়ায়।
- চুলের কোমলতা ও ঝলমলেভাব ফিরিয়ে আনে।
- চুলের ফেটে যাওয়া ও ঝরে পড়া রোধ করে।
চুলের একটা কমপ্লিট কেয়ার যদি চান যা কিনা একই সাথে চুলকে সুন্দর ও স্বাস্থ্যজ্জল করে মজবুত করে তুলবে, এই মাস্ক দুটি হতে পারে তার জন্য পারফেক্ট সল্যুশন! তবে, একটা ব্যাপারে সব সময় খেয়াল রাখবেন যে কোন হেয়ার মাস্ক ব্যবহারের আগে মাস্ক-টি আপনার চুলে সুট করছে কি না!
আর চুলের যত্নে নারকেল তেলের কোন বিকল্প নেই। আপনার হেয়ার কেয়ার রুটিন-এ প্যারাসুট অ্যাডভান্সড নারকেল তেলকে করুন আপনার বিশ্বস্ত সঙ্গী।
লিখেছেন- তামান্না তাবাসসুম
ছবি- Shutterstock